চট্টগ্রামে ৪ সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের বাধা প্রদান: তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন বক্তারা

0
836
বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের বাধা প্রদান

হিল ভয়েস, ১৫ জুন ২০২১, চট্টগ্রাম: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাধীন গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি-মহালছড়ি সড়কের পাশে পুংখীমুড়া পাড়ার সেনাবাহিনী কর্তৃক সনেরঞ্জন ত্রিপুরার সদ্য নির্মিত বাড়ি ভাংচুর ও অবৈধভাবে ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে চার সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ, পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরাম ও বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল এই চার সংগঠণের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশের শুরুর পূর্বেই ব্যানার কেড়ে নেওয়া হয় এবং সমাবেশের অনুমতি নাই বলে অংশগ্রহণকারীদেরকে গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য করা হয়েছে বলে জানা যায়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেন চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের প্রতিনিধি ধীমান ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মংসাই মারমা প্রমুখ।

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের প্রতিনিধি ধীমান ত্রিপুরা বলেন, “সিন্দুকছড়িতে সেনাবাহিনী কতৃক মধ্যরাতে সনেরঞ্জন ত্রিপুরার বাড়ি ভেঙে দেয়া হয়েছে। একজন মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান তার বাসস্থান। সেখানে মধ্যরাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তাদের বাড়ির উপর হামলা করা হয় এবং ভাংচুর করা হয়। আপনারা ইসরায়েল, মায়ানমারের সমস্যা দেখেন কিন্তু দেশের ভেতরে আদিবাসীদের সমস্যা দেখেন না। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাহাড়ী বাঙালি একত্রে যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। তবুও এদেশে পাহাড়ী আদিবাসীদের বৈষম্য করা হয়।”

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেন চাকমা বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ প্রশাসনের বাধা প্রদান ও ব্যানার কেড়ে নেওয়ায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে লঙ্ঘন করে ২০০১ সালে সরকার ‘অপারেশন উত্তরণের’ নামে সেনাশাসন বলবৎ করে। অবিলম্বে পাহাড় থেকে অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা হোক এবং স্থানীয় সিভিল প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক। পাহাড়ে স্থানীয় সিভিল প্রশাসন থাকা স্বত্বেও সেনাবাহিনী বাড়ি ভাংচুরের মত কর্মকাণ্ড করে কিভাবে! পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি কারাগারে পরিনত হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরেও আমাদেরকে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। “

বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মংসাই মারমা বলেন, ” একটি গণতান্ত্রিক দেশে আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে দেয়া হচ্ছে না। গত ১২ জুন পুংখীমুড়াতে একটি ত্রিপুরা পরিবারের ঘর সেনাবাহিনী কতৃক মধ্যরাতে ভাংচুর করা হয়েছে। এর আগেও গুইমারাতে একটি বৌদ্ধ বিহার ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। পাহাড়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগনের জানমাল নিরাপত্তা দেওয়ার কথা কিন্তু তারা সেটা না করে উল্টো পাহাড়ী আদিবাসীদের বিপরীতে কাজ করছে। আমাদেরকে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে সনেরঞ্জন ত্রিপুরার ভেঙে ফেলা ঘর পুনঃনির্মাণের দাবি জানান।