লংগদুতে নোয়ারাম সাহিত্য সংসদের কার্যালয় নির্মাণে বিজিবির বাধা

0
267

হিল ভয়েস, ৫ এপ্রিল ২০২৩, রাঙামাটি: রাঙামাটি জেলাধীন লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নে জুম্মদের নিজ ভূমিতে নোয়ারাম সাহিত্য সংসদ নামের একটি সাহিত্য বিষয়ক সংগঠনের কার্যালয় নির্মাণে স্থানীয় বিজিবি কর্তৃক বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বস্তুত জুম্মদের মালিকানাধীন ঐ জায়গা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক বেদখলের উদ্দেশ্যেই এই বাধা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার ৪নং বগাচতর ইউনিয়নের অন্তর্গত চিবেরেগা এলাকার আদিবাসীদের ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় জনগণের উদ্দ্যোগে “নোয়ারাম সাহিত্য সংসদ” এর একটি শাখা কার্যালয় তৈরীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কার্যালয়টি নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় যুবকেরা প্রয়োজনীয় গাছ, বাঁশ, খুঁটি সংগ্রহের কাজ আরম্ভ করলে প্রথমে ৩৭ বিজিবি, রাজনগর জোন, গুলশাখালী, লংগদু এর নিয়ন্ত্রণাধীন “চাল্যাতুলি ক্যাম্প” কমান্ডার কার্যালয়টি নির্মাণ না করার জন্য বাধা সৃষ্টি করে। এরপর ১ এপ্রিল ২০২৩ উক্ত জোনের দায়িত্বরত (Additional Director) এডি মোঃ হাফিজুর রহমান স্বশরীরে এসে গ্রামের মুরুব্বীদের ডেকে কার্যালয়টি নির্মাণ না করার জন্য নিষেধ করেন এবং কার্যালয় নির্মাণ করার জন্য “উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লংগদু”র অনুমতি পত্রসহ “জোন কমান্ডার, ৩৭ বিজিবি, রাজনগর জোন” বরাবরে একটি আবেদন করার পরামর্শ দেন। বিজিবির এই বাধা প্রদানকে জুম্মদের ভূমি বেদখলের পাঁয়তারা এবং আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক চর্চা থেকে বঞ্চিত করার সামিল বলে এলাকাবাসীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

কার্যালয়টি নির্মাণের জন্য যে জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি পুনং চান চাকমা, পিতা- পূর্ণ কুমার চাকমা, হোল্ডিং R- ১৭ এর নামে বন্দোবস্তীকৃত এবং এর পার্শ্বে একটি বৌদ্ধ বিহার, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও বৌদ্ধ বিহারের দক্ষিণ পার্শ্বে একটি খেলার মাঠ রয়েছে।

আরো উল্লেখ্য যে, বিজিবি উক্ত জায়গায় এপিবিএন ক্যাম্প স্থাপন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। বিগত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ উক্ত জায়গাটি পরিমাপ ও পরিচিহ্নিত করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিজিবি দাবি করছে। তবে এর প্রতিবাদে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত ৩ অক্টোবর ২০২২ প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।