রাঙ্গামাটি শহরে গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের কর্তৃক একজনকে অপহরণের চেষ্টা, চাঁদাবাজি

0
1317
ছবি: প্রতীকী

হিল ভয়েস, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, রাঙ্গামাটি: সম্প্রতি রাঙ্গামাটি জেলা শহর এলাকায় সেনামদদপুষ্ট ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে এইসব সন্ত্রাসীরা রাঙ্গামাটি শহর থেকে এক জুম্মকে অপহরণ এবং মাইক্রোবাসের মালিক আরও এক নারীর কাছ ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।

রাঙ্গামাটি শহরের মত ব্যস্ত ও জনবহুল শহর এলাকায়ও সেনাবাহিনীর নাকের ডগায় এসব সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩:৩০ টার দিকে গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী পরেশ চাকমা ও রমেশ চাকমার নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি সশস্ত্র দল কল্যাণপুর নিবাসী উৎপল চাকমাকে শহরের বনরূপা বাজার এলাকা থেকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হয়। ফলে গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় এবং তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

আরও জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সোমবার সকাল ১১টার দিকে রাঙ্গামাটিতে অবস্থানরত গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী রমেশ চাকমার নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি সশস্ত্র দল বনরূপার হ্যাপি মোড় থেকে মাইক্রোবাস সমিতির অফিসে অবস্থানরত সীমা চাকমা (৩৫) নামের এক মাইক্রোবাস মালিকের গাড়ির ড্রাইভারের কাছ থেকে গাড়ির লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরের দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি, তবলছড়ির খান বাড়ির (কথিত গোয়েন্দা বিভাগের দপ্তর) পাশে একটি স্থানে গাড়িটা পৌঁছে দিতে বাধ্য করা হয় এবং তারা মালিকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ৫০ লাখ টাকা না দিলে গাড়িটা ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে গাড়ির মালিক সীমা চাকমা রমেশ চাকমার সাথে যোগাযোগ করে কয়েক লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে বলে জানা যায়।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে রাঙ্গামাটি শহরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে আসছে এবং অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে চলেছে, যারা নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে অনেকে প্রকাশ করছেন না। আর প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগের শত শত কর্মীরা সবকিছু জানলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। অপরদিকে, উল্টো গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীরা ‘আমাদের সাথে গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগাযোগ ও বোঝাপড়া আছে’ বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তাদের ক্ষমতা জাহির করে থাকে।

জানা গেছে, গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী জনি মারমা ৫/৬ জনের একটি দলসহ শহরের ভেদভেদীস্থ কালী বাড়ি এলাকার তন্তু বড়ুয়ার বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে।

অপরদিকে, রমেশ চাকমার নেতৃত্বে আরেকটি দল তবলছড়ির জনৈক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়ায় থেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

সন্ধ্যা হলেই তারা বনরূপাস্থ আইরিশ হোটেল ও রুচ্চেল দলা হোটেল, মোনতলা এবং কে কে রায় সড়কের হোটেলগুলোতে কোমরে পিস্তল গুজিয়ে ঘোরাফেরা করে, আড্ডা দেয় ও মদের আসর বসায় প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে।