ভিক্ষু লেবাসধারী রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গুপ্তচরই জেএসএসকে সন্ত্রাসী বলতে পারেন

0
2350
ছবি: স্বঘোষিত ধুতাঙ্গধারী এফ দীপংকর ভিক্ষুকে শিষ্যরা পালকিতে করে নিয়ে যাচ্ছে।

হিল ভয়েস, বিশেষ প্রতিবেদন, দর্পণ তঞ্চঙ্গ্যা, ১৯ মে ২০২০, রাঙ্গামাটি:  রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ধুপশীল এলাকায় ‘ড. এফ দীপংকর মহাথেরো’ নামে স্বঘোষিত ‘ধুতাঙ্গ ভান্তে’ কর্তৃক পরিচালিত ‘ধর্মপ্রিয় আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র’ নামের বৌদ্ধ বিহারটি গত ১৫ মে রাতে আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হওয়ার ঘটনায় কথিত এফ দীপঙ্কর ভান্তে সরাসরি জনসংহতি সমিতিকে দায়ি করেন এবং জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার (সন্তু লারমার) নাম ধরে জনসংহতি সমিতিকে সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করেন। ঘটনার পর পরই জনসংহতি সমিতিকে সরাসরি দায়ি করে ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক সেনা-সাহায্যপুষ্ট বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় বক্তব্য প্রদান, ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিবৃতি প্রদান এবং সর্বশেষ গত ১৮ মে রাঙ্গামাটিতে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন।

অনেকটা রাজনৈতিক কায়দায় জনসংহতি সমিতিকে সরাসরি দায়ি করে ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে এভাবে বক্তব্য-বিবৃতি প্রদানের ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ‘ধুতাঙ্গ’ দাবিদার একজন বনচারী ভিক্ষু হিসেবে এধরনের সংবাদ বিবৃতি প্রদান ও সম্মেলন আয়োজন করা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ একেবারে হতবাক হয়েছে। যার ফলে ফেসবুকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।

বৌদ্ধ ভিক্ষু হয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া:

‘অমিত হিল’ নামে একজন ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক ওয়ালে বলেছেন, বৌদ্ধ বিহার পুড়ে যাওয়াটা দু:খের। তবে উনার রাজনৈতিক বিষয়ে ডাইরেক্ট হুমকি দেয়াটা একজন বৌদ্ধভিক্ষু হিসেবে ড. এফ দীপঙ্কর ভান্তের শোভা পায় না। তাঁর পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে রাজনীতি নিয়ে কথা বলা উচিত না। একজন ধর্মগুরু হিসাবে এফ দীপংকরের রাজনীতি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা মোটেও ঠিক নয়। …জেএসএসকে তিনি বিভিন্ন সময়ে যে উস্কানিমূলক কথা বলেছেন তা কিন্তু জেএসএসের বিপক্ষ দল অন্যভাবে সুবিধা বা ষড়যন্ত্র করতে পারে। তখন অনেক কিছু অনিরাপদ হয়ে উঠে।

বিলাইছড়িতে সাম্প্রদায়িক উস্কানীদাতা:

‘অমিত হিল’ আরেক জায়গায় লেখেন, প্রথমে কে বা কারা বৌদ্ধ মন্দির পুড়ে দিয়েছে সেজন্য নিন্দা জানাই। …এই মন্দির পুড়ানোকে কেন্দ্র করে ভদন্ত এফ দীপংকর (ধুতাঙ্গ) ভান্তে রাজনীতিতে জড়ালেন কেন? তদন্ত করে দেখা গেল, ভদন্ত দীপংকর (ধুতাঙ্গ) ভান্তে বহু বছর যাবৎ উনার ভাবনা এলাকায় ভিলেজ পলিটিক্সের সাথে যুক্ত৷ একসময় উক্ত এলাকায় উনার কারণে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাও হয়। পাহাড়ি বৌদ্ধদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ফলে স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ বাড়ে। স্থানীয় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএস সেখানকার বৌদ্ধদের এসব সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ না করতে বলে। তাতে ভদন্ত এফ দি (ধুতাঙ্গ) ভান্তে অন্যভাবে নিলেন। জেএসএস বিরোধী নানা বক্তব্য দিতে থাকেন। স্থানীয় বৌদ্ধদের মাঝে বিভেদ বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘও এসব দ্বন্দ্বের সমাধান করতে চেয়েছিল, কিন্তু কোন বিশেষ কারণে (ধুতাঙ্গ) ভান্তে তা কর্ণপাত করলেন না। সামরিক গার্ড নিয়ে দাপটে ঘুরে বেড়ালেন।

ভিক্ষু লেবাসধারী একজন সেনা গুপ্তচরই জেএসএসকে সন্ত্রাসী বলতে পারেন:

অনেকে বলেছেন, ভিক্ষু লেবাসধারী একজন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর স্পাই না হলে জেএসএসকে এভাবে সন্ত্রাসী বলতে পারেন না। Jumia Bura নামে একজন লেখেন যে, আর উনার জানা উচিত জেএসএস পাহাড়ে একটি পোড়খাওয়া অধিকারকামী সংগঠন। তাই জেএসএসের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করা যথাযথ নয়।

ফেইসবুক অনলাইনে প্রশ্ন করে ‘রকি জুম্ম’ বলেছেন, একটি আঞ্চলিক রাজনীতি দলকে সন্ত্রাসী বলার তিনি কোন ভন্ড ভিক্ষু? ‘প্রবীন চাকমা প্রবীন’ বলেন, জটিল ভু-রাজনীতিতে এক পাক্ষিকভাবে একটি সুনির্দিষ্ট দলকে কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরাসরি দায়ি করা কাণ্ডজ্ঞানহীন ছাড়া কিছুই নয়। ভান্তের স্মরণ রাখা উচিত ছিল যে, বনে থেকে বাঘের সাথে যেমন লড়াই করা যায় না, ঠিক তেমনি পানিতে থেকে কুমিরের সাথে লড়াই করা সমান বোকামি।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত নির্যাতিত বঞ্চিত জুম্ম জনগণের আত্মানিয়ন্ত্রণাধিকারআদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী একটি পোড়খাওয়া লড়াকু সংগঠন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত ও অস্ত্রধারী ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল, সেভাবে দেশের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও উগ্র জাতীয়তবাদী শক্তি ও শাসকগোষ্ঠী বিগত শতাব্দীর ৭০ দশক ধরে আন্দোলনরত জনসংহতি সমিতিকেও সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত, অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। শাসকগোষ্ঠী যতই জনসংহতি সমিতিতে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার অপচেষ্টা করুক না কেন, জুম্ম জনগণের ন্যায্য আন্দোলন থেকে যেমন জনসংহতি সমিতিকে বিচ্যুত করা যায়নি, তেমনি দেশে-বিদেশেও জনসংহতি সমিতির গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন এতটুকু না কমে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল।

ফলে জেনারেল জিয়া থেকে শুরু করে জেনারেল এরশাদ, খালেদা জিয়া ও সর্বশেষ শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে জনসংহতি সমিতির সাথে বৈঠক বসতে বাধ্য হয়েছিল। মুক্তিপাগল শান্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও ক্লান্ত হয়ে এই সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের সুপারিশ করেছিল। তারই ধারাবাহিকায় একপর্যায়ে ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা সরকার জনসংহতি সমিতির সাথে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে আবদ্ধ হতে বাধ্য হয়েছিল। সেই কোন স্বঘোষিত, ভন্ড, ভিক্ষু লেবাসধারী “এফ দীপংকর” কোন খুঁটির জোরে সেই গৌরমময় বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে পোড়খাওয়া জনসংহতি সমিতিকে ও সমিতির অবিসংবাদিত নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমাকে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ বলে থাকে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না!

সেনাবাহিনীর ভয় দেখানো:

২০১৬ সালে জুরাছড়ি উপজেলা দুমদুম্যা ইউনিয়ন ঢেবাছড়ার নির্বানগুহা নামক স্থানে ধর্মীয় দেশনা প্রদানকালে জনসংহতি সমিতির বিলাইছড়ি উপজেলার সভাপতি ও বিলাইছড়ি উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভ মঙ্গল চাকমা ও ভাইস চেয়ারম্যানদের প্রতি সেনাবাহিনীর হুমকি দেয়। তিনি সরাসরি বিলাইছড়ি উপজেলার শান্তিবাহিনী চেয়ারম্যান শুভ মঙ্গল চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল,শ্যামা চাকমা ও রাহুল চাকমার নাম ধরে এই হুমকি প্রদান করেন। এছাড়াও ২০১৯ সালে ৪ নভেম্বর ধুপশীল আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে জনসংহতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রণতি বিকাশ চাকমার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছিলেন। বারেবারে সেনাবাহিনীর ভয় দেখিয়ে জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দের প্রতি হুমকি প্রদান করেন।

‘প্রজ্ঞা রত্ন চাকমা’ নামে একজন তার ফেসবুকে উল্লেখ করেন, এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ড. এফ দীপংকর বলেছেন, “শান্তিবাহিনী পার্বত্য ভিক্ষুসংঘ আহ্য়ারে ধর্ম প্রচার গত্য ন দের, আয়ি যদি এক্কানা সেনাবাহিনীরে কোয়, তাইলে বেক্কুনোরে বাঁধি আনি কি হাল গত্য ইয়ান আওনারা জানেন।” (শান্তিবাহিনী পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ আমাকে ধর্ম প্রচার করতে দিচ্ছে না, আমি যদি একটু সেনাবাহিনী বলে দিই, তাহলে সবাইকে বেঁধে কি অবস্থা করতো আপনারা জানেন)। তার মানেই হলো এফ দীপংকর একজন ধর্মীয় গুরু নয়, তিনি একজন সেনা, ডিজিএফআইয়ের এজেন্ট হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োগ পেয়েছেন।

সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনী:

‘অধিরত্ন ভান্তে’ নামে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু ‘অমিত হিল’-এর স্টাটাসে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা এফ দীপংকরের বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেছি। এফ দীপঙ্করের পেছনে যে অনেক সুগভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে/জড়িত রয়েছে, সমাধান হবে কি করে? ড. এফ দীপংকরের সাথে সাক্ষাৎ করার অনুমতি নেই, কারণ সেনাবাহিনীরা তাঁকে সব সময় গার্ড দিয়ে রাখেন। নিজের চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাস করা কঠিন হবে, তিনি যে দিকে যান সেদিকে তার সাথে সামনে দুই বোট, পিছনে দুই বোট সেনাবাহিনীর স্কট থাকে। অথচ পাহাড়ে মন্ত্রী এমপিরাও এভাবে সেনাবাহিনীর স্কট পান না। তাহলে এটাই কি প্রমাণিত হয় না, বৌদ্ধ ভিক্ষু লেবাসধারী ড. এফ দীপংকর একজন সেনাবাহিনী ও শাসকগোষ্ঠীর গুপ্তচর।

‘দুলু কুমারী’ তাঁর ফেসবুকে লেখেন, উনি এমনিতেই এরকম। উনার দেশনার মধ্যেও বিশেষ করে চাকমা জাতির প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ পায়। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শুধু জেএসএস না, সব পাহাড়ী রাজনৈতিক দলগুলোকেই সমালোচনা করেন। কোন এক অজানা কারণে আবার কখনো বাঙালি সংগঠন নিয়ে তাঁকে কথা বলতে দেখা যায় না।

উক্টরেট উপাধী ব্যবহার অহংকারের প্রতীক:

‘পোগোদাং তালুকদার চাঙমা’ উল্লেখ করেছেন যে, আমার তো প্রথম থেকেই সন্দেহ হয়েছিল যে, তিনি নামের আগে কেন প্রথমে ‘ডক্টর’ পদবি বসিয়ে দেন। বুদ্ধের বিনয় মতে তো এভাবে একাডেমিক পদবি ব্যবহারের নিয়ম নাই। আর ডক্টর পদবি পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ইমপ্রেস করার জন্য মনে হয় তিনি ব্যবহার করছেন। এভাবে একাডেমিক পদবি তো গৃহত্যাগী বনচারী ভিক্ষুদের ব্যবহার শোভা পায় না। এটা দিয়ে মনের মধ্যে একটা অহংবোধ চলে আসে। তথাগত বুদ্ধ তো গৃহীর রাজার পদবি ব্যবহার করেননি সন্যাস গ্রহণের পর।

রাজীব চক্রবর্তী নামে একজন লিখেছেন, তিনি তো সন্ন্যাসী, তাহলে নামের আগে ডক্টর লেখার প্রয়োজন কি? Tituroy Gulia লেখেন যে, ভিডিওতে তার কথা বলার ধরন দেখে মনে হয় ওনাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে।  এটা সরকারি কর্মকর্তা বা সরকারের তেল মাখানো কথা বলার ধরনের মত। শুভেন্দু চাকমা বলেন, ‘ইবি ভান্তেও নয়, হাজা গুণ্ডা’ (ইনি ভান্তে নন, স্রেফ গুন্ডা)। নমস্কার বাবু বলেছেন,ভিক্ষু নামে ড. দীপংকর ভান্তে কলঙ্গ।

বিহারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা পার্বত্যাঞ্চলে ক্যাম্প সম্প্রসারণই পাঁয়তারা:

অস্তিত্ব চাকমা তাঁর ফেসবুকে একটি নাতিদীর্ঘ লেখায় উল্লেখ করেন যে, বিলাইছড়িতে বৌদ্ধ বিহার পুড়িয়ে দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ঘটিয়ে কিসের ইঙ্গিত দিতে চায় শাসকগোষ্ঠী! সেনাক্যাম্প সম্প্রসারণের পাঁয়তারা নয় তো? হ্যাঁ! অবশ্যই এটা সেনাক্যাম্প সম্প্রসারণের পাঁয়তারা, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে সেনাবাহিনীর অপারেশন উত্তরণের পথকে আরো উন্মুক্ত করা। সাধারণ জনগণের ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে পাবলিক সেন্টিমেন্ট আদায় করে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিকে আইনগতভাবে সিদ্ধ করার পাঁয়তারা। নিরাপত্তার অভাব সৃষ্টি করে পার্বত্য অঞ্চলকে আাবারো ৭০-৮০ দশকের জায়গায় ফেরত নিয়ে যাওয়া।…আমাদের জ্ঞাত থাকা আবশ্যক যে বিলাইছড়ি উপজেলার ২নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের মেরাংছড়িতে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প নতুন করে বসানো হচ্ছে।

পশ্চাতে অভিবাসী ষড়যন্ত্র:

আইপিনিউজবিডি সম্পাদক ‘দীপায়ন খীসা’ তাঁর ফেসবুক স্টাটাসে উল্লেখ করেন, পাহাড়ের জুমিয়া মানুষদের মধ্যে যারা ধর্মের আচারে বৌদ্ধ। তাদের মধ্যে অনেক বৌদ্ধ ভিক্ষু আছেন। আপনি এক বহিরাগত কি হেতু পাহাড়ে প্রবেশ করে ধর্মের নামে জাতি বিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়াচ্ছেন। জিয়াউর রহমান যেভাবে সমতল থেকে অভিবাসী মানুষ পাহাড়ে পুনর্বাসন করেন। সেই সাথে পাহাড়ের জনমিতি বদলে দেন। আপনিও কি একই কায়দায় জুম পাহাড়ের বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুদের হটিয়ে বাঙালি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আগ্রাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান। ঐ অভিবাসী জনগোষ্ঠীর ন্যায় কারা আপনাকে পাহাড়ে আমদানি করলো? পাহাড়ের চিরায়ত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আমদানিকৃত বহিরাগত ডক্টরেটধারী বৌদ্ধ ভিক্ষুর দরকার নেই। জুম পাহাড়ের বৌদ্ধরা আপনার মত রং বদলানো চাইনিজ বুড্ডিস্টও নয়। সেখানকার বৌদ্ধরা কপিলাবস্তু ও বুদ্ধ গয়ার আদি অকৃত্রিম অনুসারী।

ভারতে তিনি একজন সামী:

‘কমলেশ বড়ুয়া’ নামে একজন তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন যে, “ওহ এই দীপঙ্করকে তো খুঁজে বেড়াচ্ছি এতোদিন! এই ব্যাটা আবার কোথায় গিয়ে ভন্ডামি শুরু করলো? ভারতে থাকাকালীন তো উৎপাত করেই গেছে। আর এখন এখানেও? বৌদ্ধ নর-নারীগণ আপনারা সাবধান হোন, আজ যাকে এতো বিশ্বাস করছেন সে কিন্তু ভান্তে নয়। ভান্তে জীবন থেকেও বহিস্কৃত। ভারতে থাকাকালীন তো মনিকা বড়ুয়া এবং তার মেয়ের সাথ অবৈধ সম্পর্ক করে কামসেবনে লিপ্ত হয়ে পারাজিকাগ্রস্ত হয়েছে। এখন সে কিছের ভান্তে? ও তো একজন পলাতক আসামী। এখানে সাধু সেজে রয়েছে। সাবধান, আপনারা কিন্তু কালসাপ পুঁষছেন। সুযোগ বুঝে ও কিন্তু দেবে দৌঁড়।

তিনি রংবস্ত্রধারী একজন ভন্ড:

ধনমুনি চাকমা নামে একজন তাঁর ফেসবুকে লেখেন, রকি বড়ুয়ার ব্যাপারে সচিত্র প্রতিবেদন দেখলাম, ও মাগো একজন মানুষ এত খোলস বদলাতে পারে? এই প্রান্তে সে সাধারণ একজন মানুষ, অথচ তার এদেশের নেতৃস্থানীয় মানুষের সাথে চলাফেরা আবার অপরপ্রান্তে মুন্ডন মস্তক বৌদ্ধ ভিক্ষু হয়ে বিভিন্ন নেতা-নেত্রীর সাথে তার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক। অভিনয় কারে কয়, পুরো পাকা। ইদানিং রকি বড়ুয়ার মত আরেকজনের আবির্ভাব ঘটেছে দেখছি সে হচ্ছে দীপঙ্কর বড়ুয়া (ভান্তে)।

লকডাউনের মধ্যে বান্দরবান থেকে রাঙ্গামাটি গমনে প্রশ্ন:

সুর্বণ চাকমা ইতু’র প্রত্যুত্তরে দীপায়ন খীসা বলেন, সে তো এখন বান্দরবান। কিন্তু লগডাউন উপেক্ষা করে রাঙ্গামাটি এসে কিভাবে আজ সংবাদ সম্মেলন করলো। ‘সুর্বণ চাকমা ইতু’ও প্রশ্ন করেন, লকডাউন চলাকালে সংবাদ সম্মেলন করে কিভাবে?

তিনি সমতল থেকে বিতাড়িত একজন ভিক্ষু:

U Kyawain Chak নামে একজন লেখেন, আমি যতটুকু জানি, দীপঙ্কর ভান্তে আগে সমতলে কোনো এক মন্দিরে বিহারাধ্যক্ষ ছিলেন। কিন্তু তিনি সেখানে বেশি দিন থাকতে পারেন নাই। তার প্রধান কারণ, দীপঙ্কর ভান্তে যেখানে বিহারাধ্যক্ষ ছিলেন সেখানে বিহার বা মন্দিরের জায়গাকে প্রসারিত করার জন্য গ্রামবাসীর জায়গাগুলোকে জোর করে নিতেন। শেষ পর্যন্ত গ্রামের দায়ক-দায়িকাদের সাথে তাঁর ঝগড়া বিবাদ হয়। যার পরিণতি তাকে ঐ গ্রাম থেকে বের করে দেয়া হয়।

কল্পিত শান্তিবাহিনীর তঙ্ক:

১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর সকল শান্তিবাহিনী তথা জনসংহতি সমিতির সদস্যরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন এবং সাথে সাথে জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা ‘শান্তিবাহিনী’ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এমন বাস্তবতায়ও এফ দীপঙ্কর শান্তিবাহিনীর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। তাই বিকে ত্রিপুরা নামে একজন তাঁর ফেসবুকে দেয়া নাতিদীর্ঘ লেখায় উল্লেখ করেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ড. এফ. দীপংকর মহাথের বড়ুয়ার স্বপ্নে দেখা “শান্তিবাহিনী“ নাটকের মতো সত্যি সত্যি আবার শান্তিবাহিনী ফিরে আসুক শান্তির বার্তা নিয়ে এমনটাই প্রত্যাশা বিলাইছড়ি ও জুরাছড়িবাসীর। অশান্তির, অশুভ প্রেতাত্মা ড. এফ. দীপংকর মহাথের বড়ুয়ার মতো বিদেশী গুপ্তচর, ধর্মের লেবাসধারী ধর্ম ব্যবসায়ীরা আজও শান্তিবাহিনীর অদৃশ্য ছায়া কল্পনা করে ভয়ে কাঁপবে! এটাই স্বাভাবিক, বাস্তব! এফ. দীপংকর মহাথের বড়ুয়া মানসিকভাবে সুস্থ কিনা সে প্রশ্নও রাখছি। ড. এফ. দীপংকর মহাথের বড়ুয়া কোন বিশেষ গোষ্ঠীর রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে নাটক মঞ্চস্থ করছে সেটা আজ সবার কাছে দিবালোকের মতো পরিস্কার।

নিজেকে ধুতাঙ্গ দাবি করা বিনয় পরিপন্থী:

চিজিগুলো তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজন সংগৃহীত তথ্যে উল্লেখ করেন, বুদ্ধ ১৩টি ধুতাঙ্গ শীলের কথা বলেছেন। ধুতাঙ্গ শীলের যে প্রধান উদ্দেশ্য যেমন গর্ব, লোভ ও ঘৃণা ক্ষয়- এগুলির মধ্যে প্রথম যে গর্ব তো ক্ষয় হচ্ছেই না যদি নিজের পরিচয়ের আগে ডক্টর উপাধি পরিহার করা না যায়। কোন ভিক্ষু তালি দেয়া বস্ত্র পরিধান করলেই যে ধুতাঙ্গধারী বলা যায় তা কিন্তু নয়।

রিপন চাকমা তাঁর ফেসবুক স্টাটাসে লেখেন, ধূতাঙ্গ শব্দটি তার আচরণে সাংঘর্ষিক হচ্ছে এবং তিনি যদি প্রকৃত ভিক্ষু হতেন তার কথা বলার ধরণ সেরকম হতো না। তার কথা বলার ধরণ হতো বিনয়ী, ক্রোধহীন। তিনি তো হিংসায় জর্জরিত যা দেখে বুঝা যাচ্ছে। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের মূল সারমর্ম তো বুঝেনইনি। মৈত্রীর ধারে কাছেও যেতে পারেননি। তিনি কিভাবে ধূতাঙ্গ সাধক পরিচয় দিচ্ছেন। রিপন চাকমার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অধিরত্ন ভিক্ষু বলেন, (বাংলা অনুবাদ) আমি সেজন্যে তাকে ধুতাঙ্গ শব্দ ব্যবহার না করে ভন্ড শব্দটি সংযুক্ত করে দিই। তাকে ধুতাঙ্গ বললে পবিত্র শব্দটি অপবিত্র হয়ে যায় বলে মনে করি। এসময় বিজয়গিরি চাকমা নামে আরেকজন বলেন, তার আচার-ব্যবহার, কাজে-কর্মে, কথা-বার্তায় আমরা কেন বলি না সে ভণ্ড, ফক্কর, এজেন্ট, বিভেদকামী?

চিজিগুলো তঞ্চঙ্গ্যা আরো উল্লেখ করেন যে, দীপঙ্কর ভিক্ষু নিজের নামের আগেই ডক্টরেট উপাধিটা ব্যবহার করেন। এমন গর্ববোধের বিষয়টা ধুতাঙ্গধারীর অবান্তর। সে ডাক্তার কি ইঞ্জিনিয়ার বা পিএইচডি ডিগ্রিধারী পরিচয় মেলে ধরা নির্বানকামী সত্যিকার ধুতাঙ্গধারী ভিক্ষুর কাছে নিরর্থক। একজন অরন্যচারী সাধক ধুতাঙ্গধারী ভিক্ষু সাংবাদিক সম্মেলন করবেন তা কল্পনাতীত। শুধু বুদ্ধযুগে কেন? এই সময়েও অকল্পনীয়। কিন্তু এখন আর্য্যপুরুষ, শ্রাবক বুদ্ধ, অরহত বা ডক্টরেট ইত্যাদি মহা মহা উপাধিধারী ভিক্ষুদের দ্বারা যে তা অসম্ভব নয় তা সম্প্রতি দেখিয়ে দিলেন ডক্টর দীপঙ্কর ভিক্ষু। তার ভাষনে শোনা গেল উনি নাম ধরে অভিযোগ প্রকাশ করছেন, কারা কারা উক্ত ঘটনার জন্য দায়ী বলে তিনি মনে করেন। আর্মীদের তথ্য দিয়ে অভিযোগ দিলে তাদের কি শাস্তি হতে পারে তাও জানিয়ে নিজের প্রতিশোধস্পৃহা প্রকাশ করছেন এই ‘ধুতাঙ্গশীলবান’ ভিক্ষু।

তিনি একজন ধর্ম ব্যবসায়ী ও ভন্ড:

Dhiwill নামধারী একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন, ধর্মীয় বিশ্বাস দিয়ে ধর্মান্ধদের খুব সহজে কাবু করা যায়। এজন্য কিছু ভন্ড প্রতারক কৃত্রিম অরহৎ, ধুতাঙ্গ সাধক সেজে কেবল টাইটেল ব্যবহার করে অবলীলায় ধর্ম ব্যবসা করেই যাচ্ছে। ধর্ম ব্যবসা এমন একটি কর্ম যা শুন্য বিনিয়োগে অতি দ্রুত বিশাল মুনাফা অর্জনে সহজ মাধ্যম। মূলত নিকৃষ্ট মানসিক ব্যক্তিরাই এ বাণিজ্যকে বেছে নেয়। যার ফলে মানুষকে অর্থনৈতিকভাবেও পঙ্গু করে, তৎসঙ্গে এরকম ভন্ডরা জালিমদের দালাল হয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হিংসার বিষাক্ত ধোঁয়া ছিটিয়ে নির্দিষ্ট কোন এক গোষ্ঠীর মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।

প্রহোর চাকমা নামে আরেক ব্যক্তি উল্লেখ করেন যে, পাহাড় এমনিতে নানান সমস্যায় জর্জরিত সেখানে এই দীপঙ্কর ভান্তে কেন এসব সমস্যায় পড়লো ভাবার বিষয়! অন্য কোন ভান্তেকে নিয়ে আজো এমনি বিতর্কিত আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে কিনা জানা নেই।তাহলে দীপংঙ্কর ভান্তেকে নিয়ে ঝামেলা হলো কেন? বুদ্ধ ধর্মের রঙবস্ত্র পরিধান করে ভান্তে হয়ে ধর্মের দ্বারা সমাজে ভালোর পরিবর্তে গ্রামকে বেকায়দায় ফেলাটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত কাজ করেছেন। তখন ‘চাকমা অভি’ নামে একজন প্রত্যুত্তরে বলেছেন, জলপাই(চিদিরেভদরা) রঙের কাপড়ধারী সে তো নিশ্চিত জলপাইদের কথা বলবে।

সুদর্শন চাকমাকে বুদ্ধমূর্তি চুরি করতে নির্দেশ:

এই তো গেলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এফ দীপঙ্কর সম্পর্কে প্রতিক্রিয়ার ঝড়। বাস্তবে এফ দীপংকর আরো ভয়াবহ, যা অকল্পনীয়। তিনি বলেছেন, “তিনি মদ, গাজা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, অপহরণ না করার জন্য সৎ উপদেশ প্রদান করেন এবং এসব সৎ উপদেশ জেএসএস সন্ত্রাসীরা মানতে রাজি নয় বলে অভিযোগ তার”, যা পাগলের প্রলাপ বৈ কিছু নয়। তার মতো পাগলরা ছাড়া কেউ জুম্ম জনগণের মুক্তিকামী জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ বিশ্বাস করবে না।

তিনি আরও দাবি করে বলেন, “আমার কারণে বহু মানুষ ভাল হয়েছে। সন্ত্রাসের পথ থেকে ফিরে এসেছে, বিষয় খুবই হাস্যকর ও বানোয়াট।” সরেজমিন তদন্তে জানা গেছে যে, গত ২১ এপ্রিল ২০১৯ সুদর্শন চাকমার মত নিরীহ মানুষকে চোর বানানোই হল এফ. দীপংকর ভান্তের মানুষ ভাল করার এবং সন্ত্রাসী থেকে মানুষকে ফিরিয়ে আনার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এফ. দীপংকর ভান্তে বান্দরবানস্থ উচহ্লা ভান্তের বিহার থেকে চাক্রামনি সত্য বুদ্ধ চুরি করার জন্য সুদর্শন চাকমাকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে সুদর্শন চাকমা জানান। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সুদর্শন চাকমা বান্দরবানে উচহ্লা ভান্তের বিহারে গিয়েছিলেন। চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ার পর সুদর্শন চাকমা এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে এসব কথা স্বীকার করেন।

শিষ্যদের শ্রেণি বিন্যাস ও তদনুসারে শিষ্য কার্ড বিতরণ

কথিত এফ দীপংকর ভিক্ষু তার অনুসারী শিষ্যদের শ্রেণি বিন্যাস করে বিজিনেস কার্ডের মতো শিষ্য কার্ড তৈরি করে বিতরণ করতেন। শ্রেণি বিন্যাসের মধ্যে অন্যতম শ্রেণি ছিল সেবক, একান্ত সেবক, উপাসক, একান্ত উপাসক। এর মধ্যে বড়ুয়াদেরকে অর্থাৎ যারা জ্ঞাতি শিষ্য তাদেরকে তিনি উপাসক ও একান্ত উপাসকের কার্ড দিতেন। তারা যে কোন সময় তার সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে পারতেন। অন্দর মহলে তার সাথে দেখা করতে পারতেন। আর অন্যদিকে চাকমা তঞ্চঙ্গ্যা মারমা ইত্যাদি জুম্ম শিষ্যদেরকে কেবল সেবক ও একান্ত সেবকের কার্ড দিতেন। তাদের কাজ মূলক সেবা-শুশ্রুষা করা। অনুমতি ছাড়া সহজে তারা অন্দর মহলে যেতে পারতেন না। স্বঘোষিত ধুতাঙ্গধারী ভিক্ষুর এভাবেই জাতিভেদ-শিষ্যভেদের করে এক অদ্ভুট ও অভাবনীয় প্রথা চালু করেছিলেন। এটা অনেকটা ভারতের সাঁই বাবা বা রজনীশ-এর ধর্ম ব্যবসায়ী ভন্ডদের মতো নিয়ম-কানুন চালু করেছিলেন এফ দীপংকর।

শ্রয়দাতা জ্যেষ্ঠ ভিক্ষুকে অবজ্ঞা

এফ দীপংকর ভিক্ষু প্রথম যখন বিলাইছড়িতে যান, তখন স্থানীয় এক জ্যেষ্ঠ ভিক্ষু তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু এক পর্যায়ে তার প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার পর সেই জ্যেষ্ঠ ভিক্ষুকে অবজ্ঞা করতে থাকেন। বর্ষাবাসের দিক থেকে এফ দীপংকর ভিক্ষু থেকে বড় হলেও বিভিন্ন ধর্মী‍য় অনুষ্ঠানাদিতে তাকে তার নীচের সারিতে বসাতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে এলাকার লোকদের চরম প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ও জুম্মস্বার্থ পরিপন্থী কাজে যুক্ত:

ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে এহেন অপপ্রচার প্রমাণ করে ড. এফ দীপংকর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্মস্বার্থ পরিপন্থী কাজে যুক্ত রয়েছেন। এই হুমকি থেকে কি প্রমাণিত হয় না, তিনি সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, তিনি শাসকগোষ্ঠীর দালাল। তিনি যদি সত্যিকারভাবে বৌদ্ধ শিষ্য হতেন তাহলে ক্ষমা ও মৈত্রী গুনে দায়ক-দায়িকাদের মন জয় করতেন। কিন্তু তিনি তা না করে বরং সংঘর্ষের পথ বেছে নিয়েছেন, সেনাবাহিনী ও শাসকগোষ্ঠীর ভয় দেখিয়ে জনসংহতি সমিতি ও সমিতির নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বৌদ্ধ ধর্মীয় নীতি বিরোধী কুবাক্য বলে গেলেন গদগদ করে।

বৌদ্ধ ধর্মে বলা আছে সুবাসিত বাক্য বলা, চতুরার্য সত্যেও বলা আছে যে, সম্যক দৃষ্টি ও সম্যক বাক্য। কিন্তু তিনি কখনো কি সম্যকভাবে বুঝার চেষ্টা করেছেন অথবা ধর্মীয় ভাষায় উত্তমরূপে কখনো কি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছেন? করেননি, তাঁর দৃষ্টি বৌদ্ধ ধর্মীয় নীতির ভিত্তিতে নয়, তাঁর বাক্যও বৌদ্ধ ধর্মের নীতিবিরোধী। তাঁর দৃষ্টি কেবল সেনাবাহিনী আর শাসকগোষ্ঠীর দৃষ্টি এবং তার বক্তব্যে এটাই প্রমাণিত হয়।