বান্দরবানে জুম্ম নারী নিহতের ঘটনায় পা:চ: নাগরিক কমিটিসহ ৫ সংগঠনের নিন্দা

0
783

হিল ভয়েস, ১৬ জুন ২০২০, রাঙ্গামাটিবান্দরবানে রোয়াংছড়িতে জুম্ম নারী শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা গুলিতে নিহত ও তার ছয় বছরের ছেলে অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যা আহত হয়য়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে উইমেন রিসোর্স নেটওয়ার্ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটিসহ পাঁচ সংগঠন।

এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদেরকে বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহত শিশুটির পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থা ও পাহাড়ে জীবন-জীবিকা ও চলাফেরার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধানের দাবী জানানো হয়েছে।

গতকাল ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার উইমেন রিসোর্স নেটওয়ার্কের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী শেফালিকা ত্রিপুরার স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানোর এক বিবৃতিতে এসব প্রতিবাদ ও দাবী জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে দাবী করা হয়, সারাদেশে একদিকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জীবন ও জীবিকা খুবই বিপর্যস্ত। অন্যদিকে পাহাড়ে ক্রমাগত সন্ত্রাসী হামলায় বইছে রক্তের বন্যা। পাহাড়ী সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জান-মাল এখন চরম সংকটের মুখে।

গত ১০ জুলাই শুক্রবার বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে জুমচাষী নারী শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা (৩০) গুলিতে নিহত হয় ও তার ছেলে ছয় বছরের অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যা পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ কবীরের ভাষ্য অনুযায়ী সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির মাঝে পড়ে শান্তিলতা ও তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ জীবন-জীবিকার জন্য জুমচাষ, ঝিরি-ঝর্ণায় মাছ শিকার ও বনজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল। জীবিকার সংস্থানে এসব জায়গায় গিয়ে নিরীহ পাহাড়ীদেরকে, বিশেষত নারীদেরকে, সহিংসতার শিকার হতে দেখা যায়। অতীতে জুমে কাজ করতে গিয়ে এভাবে অনেক নারী ও শিশু দুর্বৃত্তদের নানামুখী সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নির্মম শিকার হয়েছে।

গত ১০ জুলাই শুক্রবার রোয়াংছড়ির নির্মম ঘটনার পর পাহাড়ী সাধারণ মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ঘটনাটি একটি স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে চলাফেরা, জীবন-জীবিকার সংগ্রাম পরিচালনার জন্য হুমকিরও বটে। দেশের যে কোন অঞ্চলের তুলনায় পাহাড়ে নিরাপত্তাকর্মীর সমাবেশ অনেক বেশি। তারপরও বারবার এসব অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত ঘটনা প্রান্তিক শান্তিপ্রিয় মানুষসহ সকল চেতনাসম্পন্ন গণতান্ত্রিক মানুষের জন্য হতাশা ও ভীতির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিবৃতিতে পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচার হওয়া জরুরি। যাতে চিারহীনতার সংস্কৃতির মিছিল প্রথমত মানবিকতা ও দ্বিতীয়ত জাতীয় মর্যাদার স্বার্থেই আর দীর্ঘায়িত হতে না পারে। আর যেনো এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে। বিবৃতিদানকারী অন্য সংগঠনগুলো হলো নারী হেডম্যান কার্বারী নেটওয়ার্ক, নারী পক্ষ ও নারী সংগঠনসমূহের জাতীয় নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন দুর্বার।