পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিকায়ন ও মানবাধিকার লংঘন তুলে ধরতে এমরিপে অগাস্টিনা চাকমার প্রস্তাব

0
377

হিল ভয়েস, ২১ জুলাই ২০২৩, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের এক্সপার্ট ম্যাকানিজম অন দ্য রাইট্স অব ইন্ডিজেনাস পিপল্স (এমরিপ) এর ৪র্থ দিনের সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের উপর অব্যাহতভাবে অপরিসীম ভোগান্তি সৃষ্টিকারী সামরিকায়ন ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাসমূহ তুলে ধরতে ৬টি জরুরি পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন।

গতকাল ২০ জুলাই ২০২৩, জেনেভায় অনুষ্ঠিত এমরিপের ১৬শ অধিবেশনের ৪র্থ দিনের সভায় এজেন্ডা আইটেম ১৩: প্রপোজালস টু বি সাবমিটেড টু দ্যা হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল ফর ইটস কনসিডারেশন এন্ড এপ্রোভাল (ওপেন) এর উপর বিবৃতি উপস্থাপন করার সময় পিসিজেএসএস প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।

জাতিসংঘের এমরিপের এই ১৬শ অধিবেশনটি শুরু হয় গত ১৭ জুলাই এবং তা আজ ২১ জুলাই সমাপ্ত হবে বলে জানা যায়।

অগাস্টিনা চাকমার বিবৃতির মূল অংশটি নিম্নরূপ:

“আজ আমি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের উপর অব্যাহতভাবে অপরিসীম ভোগান্তি সৃষ্টিকারী সামরিকায়ন ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাসমূহ তুলে ধরতে জরুরি পদক্ষেপের প্রস্তাব করছি।

আমি হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল এর নিকট নিম্নোক্ত আহ্বান জানাচ্ছি:

১. সামরিক বাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভূমিকার উপর আলোকপাত করে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ করা। এই তদন্তে অন্তর্ভুক্ত থাকবে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ, ভিকটিম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার, তাদের কৃতকর্মের জন্য দায়ী অপরাধীদের ধরা।

২. পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য আদিবাসীদের অংশগ্রহণসহ একটি স্বাধীন মনিটরিং মেকানিজম প্রতিষ্ঠা করা।

৩. শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করতে এবং সংঘাতের মূল কারণসমূহ তুলে ধরতে সরকার, সামরিক বাহিনী এবং আদিবাসী প্রতিনিধিদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপে সহায়তা করা। এতেও অবশ্যই আদিবাসী সম্প্রদায়ের নারী ও যুবকদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

৪. আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবন পুনর্গঠনে এবং তাদের ঐতিহ্যগত ভূমি ফিরে পেতে তাদের সাহায্য করতে সহযোগিতা ও সম্পদের জোগান দেওয়া।

৫. আদিবাসী অধিকারকে শ্রদ্ধা ও সুরক্ষার উপর সুনির্দিষ্ট আলোকপাত করে মানবাধিকার প্রশিক্ষণ ও সচেতনতাকে গুরুত্ব দিয়ে সামরিক বাহিনীর জন্য সামর্থ্য গঠন ও মানবাধিকার শিক্ষাকে জোরদার করা।

৬. পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী অধিকারের সুরক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং সহযোগিতা সংগ্রহ করতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের যুক্ত করা। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে পার্বত্য চুক্তির অন্তর্গত প্রতিশ্রুতিসমূহ পরিপূরণে এবং আদিবাসী অধিকারসমূহ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশ সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপের জন্য এডভোকেসি করা।”

তিনি বলেন, এইসব পদক্ষেপ দিয়েই আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে জরুরি মানবাধিকার সংকটসমূহ তুলে ধরতে এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের ন্যায়বিচারে কাজ করতে পারি।