নালিতাবাড়িতে আদিবাসীদের জমি দখল করে খাল খননের অভিযোগ

0
657

হিল ভয়েস, ১৫ জানুয়ারি ২০২২, শেরপুর: শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলায় ১৫টি গারো আদিবাসী পরিবারের প্রায় ২০ একর জমিসহ স্থানীয় বাঙালিদের জমি দখল করে সরকারী উদ্যোগে একটি খাল খনন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গারো পাহাড়ের পাদদেশ সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের নালিতাবাড়ীর রামচন্দ্রমুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়নের ভোগাই নদীর তীরবর্তী আদিবাসী অধ্যুষিত তারিনী ও কালাকুমা গ্রামে আদিবাসীদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা ছাড়াই জোরপূর্বক আদিবাসী গারোদের সিএস রেকর্ডকৃত কৃষি জমির উপর দিয়ে খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এই খাল ১৫টি গারো আদিবাসী পরিবারের প্রায় ২০ একর জমির উপর খনন করা হচ্ছে। এর ফলে ১৫টি গারো আদিবাসীদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন এ জমি হারাতে বসেছে।

গত ১১ জানুয়ারি ২০২২ তারানী গ্রামবাসীদের পক্ষে “কালাকুমা বৈশালী বাজার হতে তারানী মৌজার খাল পুন:খনন কাজে অনিয়মের প্রতিকার” চেয়ে মতিন মারাক, শিল্পী সাংমা, মো: আবু বক্কর সিদ্দিক, মো: সিরাজুল হক, মো: জয়নাল, মো: সুরজ আলী প্রমুখ ৬ জন আদিবাসী গারো ও বাঙালি অধিবাসী নালিতাবাড়ি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর নিকট এক দরখাস্ত পেশ করেছেন।

উক্ত দরখাস্তে বলা হয়েছে যে, কালাকুমা বৈশালী বাজার হতে তারানী গ্রামের উত্তরে ভোগাই নদীর পাড় পর্যন্ত একটি খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। উক্ত স্থানে পূর্বে কোন খাল ছিল না। প্রকৃতপক্ষে উক্ত গ্রামে খালের কোন খাস জমি না থাকায় আদিবাসী গ্রামবাসীর রেকর্ডীয় জমির উপর দিয়ে খালটি খনন করা হচ্ছে। উক্ত খাল খননের ফলে তাদের আবাদী জমি ও বসত-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হবে এবং জমির উর্বরতা হ্রাস পাবে।

দরখাস্তে আরো উল্লেখ করা হয় যে, এলাকার আদিবাসীগণ অতিদরিদ্র ও খুব কম পরিমাণের জমি মালিক। খাল খনন কাজে তাদের জমি ব্যবহার করায় তাদের অপূরণীয় ক্ষতি শিকার হবে। তাছাড়া উক্ত খালটি তাদের এলাকায় কোন প্রয়োজন নেই এবং খালের মাটি ফেলে বসত-ভিটা নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে বসত-ভিটার ঘেষে খাল খননের ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানির স্রোতে বসত-বাড়ির রেকর্ডীয় জমি ভেঙ্গে খালে পতিত হবে বলে দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়।
নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খাল খননে ঠিকাদারকে বাধা প্রদান করা হলে ঠিকাদারের লোকজন আদিবাসীদের নানা প্রকার হুমকি প্রদান করা হয় বলে দরখাস্তে অভিযোগ করা হয়। এমতাবস্থায় সামান্যতম ফসলী জমি ও বসত-ভিটার জমি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়।