চট্টগ্রামে পিসিপির খুলশী থানা শাখার ১ম সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন

0
247

হিল ভয়েস, ১৩ অক্টোবর ২০২৩, চট্টগ্রাম: আজ ১৩ অক্টোবর বিকাল ৩ ঘটিকায় চট্টগ্রাম আর্বান সেন্টারে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে প্রথম খুলশী থানা শাখার সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অম্লান চাকমার সঞ্চালনায় উক্ত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি বিনিময় চাকমা।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক থোয়াইক্যজাই চাক। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা শ্রী শরৎ জ্যোতি চাকমা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নরেশ চাকমা, পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হ্লামিও মারমা, পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক সৌরভ চাকমা, পিসিপি চট্টগ্রাম পলিটেকনিক শাখার সাধারণ সম্পাদক উখিংসাই মারমা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রনেতা থোয়াইক্যজাই চাক বলেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ নিষ্ঠা আর দ্বায়িত্বশীলতার মাধ্যমে জুম্ম জাতির জন্য কাজ করে থাকে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নির্দিষ্ট লক্ষ্য- উদ্দেশ্য, নীতি-আর্দশ রয়েছে। পিসিপি’র নীতি-আদর্শ কখনোই জাতিভেদ, ধর্মভেদ, বর্ণভেদ, লিঙ্গভেদ করে না। পিসিপি’র আদর্শ নিপীড়িত ও শোষিত জুম্ম জনগণের মৌলিক অধিকার তথা আত্মনিয়ণাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। জুম্ম ছাত্র সমাজকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি জুম্মজাতির শোষণ-বঞ্চনা এবং সংগ্রামের ইতিহাস আপনাদের জানতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভাষাভাষী চৌদ্দটি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জনগোষ্ঠীর সংগ্রাম এক। অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে কোন জাতির এককভাবে লড়াই করা সম্ভব হয় না। এজন্য সবাইকে সংগ্রামে এগিয়ে আসতে হবে। জুম্ম জনগণ পাহাড়ের ছাত্র-যুব সমাজের দিকে তাকিয়ে আছে। ছাত্র সমাজ জুম্ম জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে হাল ধরবে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সাবেক ছাত্রনেতা শরৎ জ্যোতি চাকমা বলেন, সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে কেন অন্তর্ভুক্ত হবো? তা জানতে হবে। আমাদের লক্ষ্য পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। তাদের মৌলিক অধিকার ভূমির অধিকার ফিরিয়ে দিতেই আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মের উচিত এম এন লারমার প্রগতিশীল চিন্তাধারা লালন করা এবং আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হওয়া। জনসংহতি টিকে আছে এম এন লারমার আদর্শ ধারণ করার ফলে। এম এন লারমা যে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার শিক্ষা ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তার আদর্শ লোপ করার পায়তারা করছে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা যদি তার আদর্শ ধারণ না করি জাতিভেদের মাধ্যমে আমাদের সমাজকে আমরাই বন্দি করে ফেলবো, এগিয়ে যেতে পারবো না।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির পথে। তাদের অধিকার প্রতিনিয়ত খর্ব করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ব্যতিত পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ছাত্র-যুব সমাজকে নতুন করে সঠিক আদর্শ লালন করে ইস্পাত কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেক জুম্ম শিক্ষার্থীর মধ্যে আপনারাই সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছেন। তাই আপনারাই অগ্রগামী, সংগ্রামী।

পরে দ্বিতীয় অধিবেশনে আদর্শ চাকমাকে সভাপতি থোয়াইউপ্রু মারমাকে সাধারণ সম্পাদক ও মনিলাল তঞ্চঙ্গ্যাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট নবগঠিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান পিসিপি কেন্দ্রীয় সদস্য সুর্কনা চাকমা।