কাপ্তাইয়ে সেনাবাহিনী মধ্য রাতে জনসংহতি সমিতির দুই সদস্যকে তুলে নিয়ে গেছে, এখনও হদিশ নেই

0
1009
ছবি : প্রতীকী

হিল ভয়েস, ১৪ আগস্ট ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দুই সদস্যকে মধ্য রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সেনাবাহিনী উক্ত দুই ব্যক্তিকে কোথায় নিয়ে গেছে তা এখনও জানা যায়নি।

সেনাবাহিনী কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়া দুই ব্যক্তি হলেন- (১) বিক্রম মারমা (৫৬), পীং-কালাচান মারমা ও (২) বীরসিং চাকমা (৪৩), পীং-গেন্দা চাকমা। বিক্রম মারমার বাড়ি কাপ্তাই উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ক্রিশ্চান মিশন হাসপাতাল এলাকায়। তিনি জনসংহতি সমিতির কাপ্তাই উপজেলা কমিটির সভাপতি। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয়ভাবে অবস্থান করছেন। অপরদিকে, বীরসিংহ চাকমার বাড়ি পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কদমতলী ইউনিয়নের কুষ্ঠিপাড়া গ্রামে। তিনি জনসংহতি সমিতির চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি। সেই কমিটিও বিদ্যমান সেনাশাসনের পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে নিষ্ক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ১৪ আগস্ট ২০২১ দিবাগত মধ্যরাতে আনুমানিক ২:০০ টার দিকে কাপ্তাই সেনা জোনের ২৩ ই বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীন কাপ্তাই আইল্যান্ড সেনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য প্রথমে বীরসিং চাকমাকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। এরপর দিবাগত রাত ২:৩০ টার দিকে উক্ত সেনা সদস্যরা চন্দ্রঘোনার ক্রিশ্চান মিশন হাসপাতাল এলাকা ঘেরাও করে এবং বিক্রম মারমার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিক্রম মারমাকে তুলে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, ২০০৭ সাল পরবর্তী জরুরি অবস্থার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একবার বিক্রম মারমাকে আটক করে নিয়ে যায় এবং পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। অনেক পরে মুক্তি পেলেও শারীরিক অবস্থা ও পারিবারিক কারণে বিক্রম মারমা প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকেন।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী সেনাবাহিনী এখনও পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেনি বলে জানা গেছে। এমনকি আটককৃত দুই ব্যক্তিকে কোথায় রাখা হয়েছে তাও জানানো হয়নি।

এদিকে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থেকেও সেনাবাহিনী কর্তৃক এভাবে সিনেমার কায়দায় বিক্রম মারমা ও বীরসিংহ চাকমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবার-পরিজন গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।