সেনাবাহিনী কর্তৃক বিলাইছড়ি এলাকার জুম্ম গ্রামে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান ও হয়রানি

0
944
ছবি : প্রতীকী

হিল ভয়েস, ৮ জুন ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন জুম্ম গ্রামে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান ও জনগণকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। করোনা মহামারির লকডাউনের করুণ পরিস্থিতিতেও সেনাবাহিনীর এরূপ টহল ও তল্লাশি অভিযান এলাকার জনগণের মধ্যে উদ্বেগ, ভীতি ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত পরশু ৬ জুলাই ২০২১ সকাল আনুমানিক ১০:০০ টার দিকে বিলাইছড়ি সেনা জোনের অপরাজেয় ৬ এর মেরাংছড়া সেনাছাউনি থেকে জনৈক মেজরের নেতৃত্বে ৬০ জনের একটি সেনাদল কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের নাড়াইছড়ি এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এসময় সেনা সদস্যরা নাড়াইছড়ি এলাকার ভারত্বছড়া নামক গ্রামে বিনোতী বিকাশ চাকমা (৫৭), পীং-মৃত চন্দ্রকান্ত চাকমা নামে এক নিরীহ গ্রামবাসীর বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং বাড়ির লোকদের নানাভাবে হয়রানি করে। এসময় সেনা সদস্যরা বিনোতী বিকাশ চাকমার বাড়ির লোকদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে জনসংহতি সমিতির সদস্যরা কোথায় থাকে তা জানতে চায় এবং জনসংহতি সমিতির সদস্যরা সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয়।

প্রায় একই সময় জনৈক ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ৪১ জনের আরেকটি দল কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের বাঙালকাটা, তাগলকছড়া ও মোনপাড়া এলাকায় ব্যাপক টহল অভিযান চালায়। এছাড়া শহীদ আতিয়ার সেনা ক্যাম্পের ২০ জনের আরেকটি সেনাদল গতকাল ৭ জুলাই ২০২১ থেকে মন্দিরাছড়া মুখ, সলকপাড় এলাকায় টহল অভিযান শুরু করে।

জানা গেছে, টহল অভিযানের সময় সেনা সদস্যরা বহু জুম্ম গ্রামবাসীর সাথে বৈরী আচরণ করে এবং জনসংহতি সমিতির লোকেরা কোথায় থাকে, কোন পথে আসে, তোমরা কেন তাদেরকে আশ্রয় দাও ইত্যাদি প্রশ্ন করে গ্রামবাসীদের হয়রানি করে এবং সন্ত্রাসী এলে আমাদেরকে (সেনাবাহিনীকে) কেন খবর দাওনা বলে ধমক দেয়।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর উক্ত টহল দলগুলো এখনো নাড়াইছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, বাঙালকাটা কমিউনিটি সেন্টার ও তাগকলছড়া মোন পাড়ার মধ্যবর্তী একটি জুম ঘরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

করোনা মহামারির কারণে ঘোষিত লকডাউনের কঠিন পরিস্থিতিতেও সেনাবাহিনীর এই উপস্থিতি, অভিযান ও তল্লাশি এবং আচরণ এলাকায় জুম্মদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ, আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে।