লংগদুতে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সেটেলার কর্তৃক নবীনচানে’র ভূমি বেদখলের চেষ্টা অব্যাহত

0
1010
ছবি: জুম্ম গ্রামবাসীর জায়গা জবরদখল করে সেটেলার কর্তৃক নির্মিত বাড়ি

হিল ভয়েস, ২৪ জুন ২০২০, রাঙ্গামাটিরাঙ্গামাটি জেলাধীন লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নে উপজেলা ভূমি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মুসলিম সেটেলারদের কর্তৃকনবীনচান চাকমা নামে এক জুম্ম গ্রামবাসীর মালিকানাধীন ভূমি বেদখল করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

লংগদু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ জায়গায় সকল কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও মুসলিম সেটেলাররা সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই তৎস্থলে চারা রোপণের উদ্দেশ্যে জঙ্গল পরিষ্কার করে গর্ত খুড়ে চলেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ২৪ জুন ২০২০ সকালের দিকেও বাঙালি সেটেলাররা সদলবলে নবীনচান চাকমার মালিকানাধীন ও নিজ নামীয় উক্ত বিরোধপূর্ণ জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করে চারা রোপণের উদ্দেশ্যে গর্ত তৈরি করে। বাঙালি সেটেলাররা গতকালও ঐ জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করে বলে জানা যায়।

তবে আজ সকালে বাঙালি সেটেলারদের কর্তৃক এই জঙ্গল পরিষ্কার করা ও গর্ত করার খবর পেলে নবীনচান চাকমার পক্ষ থেকে বুধবার সকাল আনুমানিক ১১:৩০ টার দিকে ঘটনার বিষয়ে উপজেলা ভূমি সার্ভেয়ারের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৪ জুন ২০২০ দিবাগত রাতে লংগদু উপজেলার বগাচতর মৌজার মৃত ভুলসিং চাকমার ছেলে নবীনচান চাকমার বন্দোবস্তকৃত ৩.০ একর ভূমি জবরদখল করে বগাচতর ইউনিয়নের রাঙ্গীপাড়ার মৃত নজুমিয়া চৌধুরীর ছেলে মো: আলী আহম্মদ চৌধুরী ও মজনু সরকারের ছেলে মো: আব্দুল আলীম সরকার নামে দুইজন সেটেলার রাতের আঁধারে একটি ঘর নির্মাণ করে।

এ প্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন ২০২০ মঙ্গলবার জমির মালিক নবীনচান চাকমা অবৈধভাবে নির্মিত বাড়িটি ভেঙ্গে দিয়ে জায়গাটি সেটেলারদেরকাছ থেকে দখলমুক্ত করে দেয়ার জন্য লংগদু উপজেলার ইউএনও বরাবরে এক আবেদন পেশ করেন।

উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২২ জুন ২০২০ দুপুর ১২:৩০ টায় একদল পুলিশ ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ক্যথোয়াই প্রু মারমা উক্ত বিরোধপূর্ণ জায়গায় সরেজমিন তদন্ত করতে যান। এসময় সেখানে সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যান কনকন চাকমা, ১১নং পেটান্যামাছড়া মৌজার হেডম্যান নিউটন চাকমা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বাদী-বিবাদী উভয়েই উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিন তদন্ত কালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ক্যথোয়াই প্রু মারমা পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে বিরোধীয় জায়গায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

কিন্তু ভূমির মালিক নবীনচান চাকমা ভূমি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা পালন করলেও বাঙালি সেটেলাররা নিষেধাজ্ঞার পরদিন থেকেই উক্ত জায়গায় অবৈধভাবে জঙ্গল পরিষ্কার ও গর্ত খোঁড়া শুরু করে।