রাঙ্গামাটির জীবতলীতে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার দুই নিরীহ জুম্ম

0
698
ছবি : প্রতীকী

হিল ভয়েস, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার জীবতলী ইউনিয়নে দুটি পৃথক ঘটনায় এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীসহ দুই নিরীহ জুম্ম অমানুষিক মারধরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া একটি বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং বাড়ির জিনিসপত্র তছনছ করে দেয় সেনা সদস্যরা।

নির্যাতনের শিকার দুই নিরীহ জুম্ম হলেন- শান্তি কুমার চাকমা (৩২), পীং-অজ্ঞাত, গ্রাম-পানামাছড়া, ৯নং ওয়ার্ড, জীবতলী ইউনিয়ন ও খোকন তঞ্চঙ্গ্যা (২৮), গ্রাম-পূর্তছড়ি, জীবতলী ইউনিয়ন। শান্তি কুমার চাকমা একজন জেলে এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলে জানা গেছে। অপরদিকে খোকন তঞ্চঙ্গ্যা সাধারণ গ্রামবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ দুপুর আনুমানিক ১২:০০ টার দিকে কাপ্তাই সেনা জোনের অধীন এস ব্যান্ড সেনা ক্যাম্পের সুবেদার মো: রিয়াজ ও রাঙ্গামাটি সদর সেনা জোনের অধীন গবঘোনা সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত ক্যাপ্টেন মাহাবুব এর নেতৃত্বে দুইটি স্পীড বোট যোগে একদল সেনা সদস্য জীবতলীর কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় টহল অভিযানে যায়। এসময় সেনাদলটি পথিমধ্যে হ্রদে মাছ ধরায় ব্যস্ত শান্তি কুমার চাকমাকে পার্শ্ববর্তী জায়গায় ডেকে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসাবাদ করে। শান্তি কুমার চাকমা প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় সেনা সদস্যরা তাকে বেদম মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী জেলেদের কাছ থেকে শান্তি কুমার চাকমা একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী জানতে পারার পর সেনা সদস্যরা তাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।

অপরদিকে, একই দিন সকাল আনুমানিক ৯:০০ টার দিকে জীবতলী সেনা ক্যাম্প ও এস ব্যান্ড সেনা ক্যাম্প এর একদল সেনা সদস্য জীবতলী ইউনিয়নের পূর্তছড়ি গ্রামে টহল অভিযানে যায়। এইদিন সকালে পূর্তছড়ি গ্রামের বাসিন্দা লক্ষীছ চাকমা প্রতিবেশী খোকন তঞ্চঙ্গ্যাকে ডেকে তার পোষা শুকরটি কেটে তা বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন সময় সেন সদস্যরা সেখানে পৌঁছলে লক্ষীছ চাকমা ভয়ে কোনোমতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এসময় সেনা সদস্যরা বাড়িতে প্রবেশ করে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং বাড়ির আসবাবপত্র তছনছ করে দেয়।

এর পরপরই সেনা সদস্যরা লক্ষীছ চাকমার বাড়িতে থাকা খোকন তঞ্চঙ্গ্যাকে ব্যাপক মারধর করে, পানিতে ডুবিয়ে রাখে এবং নাকে, মুখে পানি ঢেলে দেয়। এক পর্যায়ে সেনা সদস্যরা খোকন তঞ্চঙ্গ্যাকে রেখে চলে যায়। জানা গেছে, খোকন তঞ্চঙ্গ্যাও অত্যন্ত নিরীহ একজন মানুষ। সে গ্রামের ঘরে ঘরে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে থাকে।