রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনী কর্তৃক জুম্ম গ্রামে টহল অভিযানে তল্লাশি, হয়রানি ও দূর্ব্যবহার

0
668
ছবি : প্রতীকী

হিল ভয়েস, ২০ আগস্ট ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের জুম্ম গ্রামে নিরীহ গ্রামবাসীদের দোকানে ও বাড়িতে তল্লাশি, হয়রানি এবং গ্রামবাসীদের সাথে দূর্ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল ১৯ আগস্ট ২০২১ দুপুর থেকে বিকালের দিকে বালুখালী ইউনিয়নের কাইন্দ্যা ও দোজরী পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অপরদিকে একই দিন কাপ্তাইয়ের হরিণছড়া বাজারে সেনাবাহিনীর একটি দল টহল অভিযানে গেলে তাদের উপস্থিতিতেই সেনামদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের চাঁদা তুলতে দেখা গেছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ১৯ আগস্ট ২০২১ দুপুর আনুমানিক ২:০০ টার দিকে বালুখালী ইউনিয়নের মরিচ্যাবিল এলাকায় অবস্থিত রাজমনি পাড়া সেনা ক্যাম্প হতে জনৈক সুবেদারের নেতৃত্বে ১৬ জনের একটি সেনাদল পার্শ্ববর্তী কাইন্দ্যা ও দোজরী পাড়া গ্রামে টহল অভিযানে যায়। যাওয়ার পথে দুপুর ২:৪৫ টার দিকে সেনাদলটি এগুজ্যাছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত লক্ষীময় চাকমা (৫২), পীং-মৃত রাজমোহন চাকমা’র মুদির দোকানে প্রবেশ করে দোকানের সব জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়। এরপর সেনাদলটি গ্রামবাসী শুভময় চাকমার বাড়িতে যায়। এসময় শুভময় চাকমা বাড়িতে ছিলেন না। সেনা সদস্যরা শুভময় চাকমার স্ত্রী মিল্কি চাকমাকে নানা জিজ্ঞাসবাদ চালিয়ে হয়রানি করে।

বিকাল ৩:০০ টার দিকে সেনাদলটি চন্দ্রবান চাকমার বাড়িতে যায় এবং বাড়িতে প্রবেশ করে হয়রানিমূলকভাবে ব্যাপক তল্লাশি চালায়। বাড়িতে কিছুই না পেয়ে সেনা সদস্যরা সেখান থেকে চলে যায়।

এরপর সেনাদলটি সরাসরি দোজরী পাড়া গ্রামে যায়। বিকাল ৪:০০ টার দিকে দোজরী পাড়া গ্রামে পৌঁছে সেনা সদস্যরা কাউকে কিছু না বলে সরাসরি কবিলেশ্বর চাকমা (৫৩), পীং-মৃত হীরালাল চাকমা’র দোকানে প্রবেশ করে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং দোকানের জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়। উল্লেখ্য, কবিলেশ্বর চাকমার দোকানের পার্শ্বে একটি নালাতে সাঁকো দিয়ে লোকজন যাতায়াত করে এবং সেনাদলটিও সেই সাঁকো দিয়ে সেখানে আসে। যাওয়ার সময় সেনা সদস্যরা কবিলেশ্বর চাকমাকে হুমকি দেয় যে, আগামী দুই/তিন দিনের মধ্যে সাঁকোটি যদি ভাল করে তৈরী করতে না পারেন তাহলে দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে।

এরপর সেনাদলটি দোজরী পাড়ার ইউনিসেফের পাড়া কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান করে এবং সেখান থেকে ড্রোনের মাধ্যমে এলাকার আশেপাশে দুটি পাহাড়ের জায়গা পর্যবেক্ষণ করেছে বলে জানা যায়। সেখানে ঘন্টাখানেক অবস্থান করে বিকাল ৫:৩০ ঘটিকায় তাদের ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

এদিকে একইদিন প্রায় ২৫ জনের একটি সেনাদল কাপ্তাই উপজেলাধীন কাপ্তাই ইউনিয়নের হরিণছড়া বাজারে অবস্থান করে বলে জানা যায়। স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সেনারা সেখানে অবস্থানের পর প্রায় কাছাকাছি জায়গায় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের একটি দলও অবস্থান গ্রহণ করে। এরই মধ্যে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা সেনাদলটির নাকের ডগায় চাঁদা উত্তোলন চালিয়ে যায় বলে জানা যায়।