বিপ্লবী এমএন লারমার ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে প্রভাতফেরি,  শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও স্মরণ সভা

0
310

হিল ভয়েস, ১০ নভেম্বর ২০২৩, রাঙ্গামাটি : আজ ১০ নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে মহান নেতা এমএন লারমার ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জুম্ম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির উদ্যোগে সকাল বেলায় প্রভাতফেরি, মহান নেতা ও জাতীয় বীরদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

স্মরণ সভায় জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ডা. গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে ও ছাত্র যুব বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল চাকমার সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, সিএইচটি হ্যাডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি এডভোকেট ভবতোষ দেওয়ান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিশির চাকমা,  পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনি চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপন ত্রিপুরা।

স্মরণ সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা। শোক প্রস্তাব পরবর্তী শহীদদের স্মরণে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রধান আলোচক পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেন, আমাদের প্রিয় নেতাকে হত্যা নিছক হত্যাকন্ড নয় জুম্মদের আন্দোলনকে হত্যা করার প্রচেষ্টার সমান। এই হত্যাকান্ডের সাথে দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী যুক্ত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছে সেই সময়ে জেনারেল মঞ্জুর বিবিসি নিউজে বলেন শান্তিবাহিনী একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল দল। জেনারেল মঞ্জুর স্বীকার করে বলেছিলেন আমরা রণক্লান্ত। সেই সময় পার্টির গণলাইন ছিল শক্তিশালী তাই শাসকগোষ্ঠী দমিয়ে রাখতে পারেনি। একজন ছোট বাচ্চাও যদি গ্রামে আর্মি দেখে তাহলে তা সহজে পৌছেঁ যেত শান্তিবাহিনীর কাছে তার কারণ তখন  সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিল।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, জুম্মরা পশ্চাদপদ, শক্তিহীন হতে পারে কিন্তু ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করলে আমাদের ন্যায্য আন্দোলন অবশ্যই অর্জন করা সম্ভব। জনসংহতি সমিতি চুক্তি বাস্তবায়ন চায় না বিষয়টি সঠিক নয়, জনসংহতি সমিতি চুক্তি বাস্তবায়ন চায়। আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি, এর বেশি কিছু চায় না।

তিনি আরও বলেন চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মিথ্যাচার করবেন না। চুক্তির মৌলিক বিষয়গুরো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করে দিন। চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিশির চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেই আদিকাল থেকে হতে জুম্মরা তাদের নিয়তি ও ভাগ্যকে স্বীকার করে আসছিল। কিন্তু ষাট দশকের পর হতে এমএন লারমা অনুভব করেছিলেন জুম্মদের ভাগ্য ও নিয়তি আমাদেরকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত ১৪ টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে একটি ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি জুম্ম জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন।