বাঘাইছড়িতে শিজকমুখ বৌদ্ধ বিহারের জায়গা আবার সেনাবাহিনী বেদখলে

0
402

হিল ভয়েস, ১৭ আগস্ট ২০২৩, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলাধীন বাঘাইছড়ি উপজেলার শিজকমুখ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের প্রাঙ্গণে জায়গা বেদখল করে সেনাবাহিনী পুনরায় সেনাক্যাম্প স্থাপনের কাজ শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, আজ ১৭ আগস্ট ২০২৩, সকাল আনুমানিক ৭-৮ টার দিকে আবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল গোলাবারূদ, অস্ত্র-শস্ত্র ও তাদের বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম নিয়ে এসে সিজকমুখ বৌদ্ধ বিহারের জায়গায় সেনাক্যাম্প স্থাপনের কাজ শুরু করে দেয়।

এলাকাবাসী আরও জানায়, গতকাল (১৬ আগস্ট ২০২৩) সকাল আনুমানিক ১০ টায় সেনাবাহিনী ও আনসার এর আনুমানিক ২০-২৫ জনের একটি দল সম্পূর্ণ যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে অত্যাধুনিক বিভিন্ন মারণাস্ত্র (মর্টার, মেশিনগান, উন্নত প্রযুক্তির ওয়াকিটকি) ও সরঞ্জাম নিয়ে শিজক কলেজপাড়া থেকে উগলছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত টহল চালিয়েছে। বর্তমানে উক্ত সেনাসদস্যরা এখনো ওই বিদ্যালয়ে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর এই যুদ্ধংদেহী টহল অভিযানের ফলে স্থানীয় জুম্মদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, প্রায় ৫ বছর বেদখল করে থাকার গত ২৫ মার্চ ২০২৩ দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ টার দিকে শিজকমুখ সর্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণের জায়গায় নির্মিত সিজক সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী গোলাবারূদ, অস্ত্র-শস্ত্র ও সাজসরঞ্জামসহ তাদের জিনিসপত্র নিয়ে কাউকে কিছু না বলে পার্শ্ববর্তী দুরছড়ি বাজার সেনা ক্যাম্পে চলে যায়। যাওয়ার সময় সেনা ক্যাম্পের প্রধান ফটকে ক্যাম্পের নামও মুছে দিয়ে যায়। কিন্তু ক্যাম্পের জন্য নির্মিত বিভিন্ন বাড়ি-ঘর, সেন্ত্রী পোস্ট ইত্যাদি কোনো স্থাপনা ভেঙে নিয়ে যায়নি।

গত ২৫ এপ্রিল ২০১৯ লংগদু উপজেলার সেনাবাহিনীর ২১ বীর রেজিমেন্টের মাইনী জোনের ক্যাপ্টেন খালেদ ও ওয়ারেন্ট অফিসার হাসমতের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য শিজকমুখ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে গিয়ে জোরপূর্বক ও পার্বত্য চুক্তি লংঘন করে উক্ত সেনা ক্যাম্পটি স্থাপন করে। সেনা ক্যাম্পটি স্থাপনের পরপরই ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা বিহারের ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদনে নানা প্রতিবন্ধকতা ও ধর্মীয় পরিহানি সৃষ্টি করে এবং এলাকার জুম্ম জনগণের উপর অপরিসীম হয়রানি ও নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড চালায়।

জানা গেছে, উক্ত বৌদ্ধ বিহারটি বহু পুরনো একটি বিহার, যা ১৯৬০ দশকে কাপ্তাই বাঁধের পর উদ্বাস্তু হওয়া মানুষ এই বিহারটি নির্মাণ করে।