পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন ও সমাজের দায়

0
1238

নিপন ত্রিপুরা

পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নামে পরিচিত। কিন্তু চুক্তি হওয়ার ২৩ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ আজো অবাস্তবায়িত হয়ে রয়েছে। আংশিক বাস্তবায়িত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অন্যতম একটি বিষয় পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন।

পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আন্দোলনের ফসল। কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী পার্বত্য জেলা পরিষদ হতে পারে না। দুই যগের অধিক সশস্ত্র আন্দোলনের ফলে চুক্তির মাধ্যমে এ পার্বত্য জেলা পরিষদ এসেছে। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক নির্বাচন না হওয়ায় দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এতে দলীয় লোকজন লাভবান হলেও বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি ১০ ডিসেম্বর ২০২০ সরকার পূর্বের ন্যায় নির্বাচন না দিয়ে আস্থাভাজন দলীয় অযোগ্য লোকদের নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী পার্বত্য জেলা পরিষদে। নিয়োগ পাবার পর অনির্বাচিত দলীয় চেয়ারম্যান-সদস্যদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর হিড়িক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিষদে এমন লোকদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নিয়োগ দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অধিকার আদায় তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের কোন অবদান নেই। আমাকে সবচেয়ে অবাক করেছে সমাজের সে সকল বুদ্ধিজীবী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অভিভাবক ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ববৃন্দরা যারা সারাবছর আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চেয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চেয়েছে, অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার চেয়েছে তারাই অযাচিতভাবে অগণতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ পাওয়া লোকদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করছে।

চুক্তির ২৩ বছরেও পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন না দিয়ে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে পাশ কাটিয়ে অগণতান্ত্রিকভাবে দলীয় লোকদের পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে মেম্বারদের নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যানসহ ৫ সদস্যের একটি অন্তবর্তীকালীন জেলা পরিষদ গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নির্বাচনের দাবিকে উপেক্ষা করে প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও একজন চেয়ারম্যানসহ অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৫ থেকে ১৫-তে উন্নীত করে অন্তর্বতীকালীন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করে সরকার, যা সুষ্পষ্টভাবে পার্বত্য চুক্তির লঙ্ঘন। পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আঞ্চলিক পরিষদও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারছে না, অপরিদকে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ সম্বলিত স্থানীয় স্বশাসন ব্যবস্থাও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।

চেয়ারম্যানসহ ৩৪ সদস্য-বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ পার্বত্য জেলা পরিষদ কি উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে তার একটি প্রক্রিয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মধ্যে নিহিত আছে। স্থানীয় ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। এ ভোটার কারা কারা হতে পারে তারও একটা বিহিত চুক্তিতে দেয়া আছে। যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাস করে, বৈধ জমি আছে তারাই এ পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার হতে পারবে। নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হবেন অবশ্যই জুম্মদের মধ্যে থেকেই। বাকি সদস্যরা জাতি-ভিত্তিক সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত হবেন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে। পরিষদের চেয়ারম্যান উপ-মন্ত্রী মর্যাদা পাবেন। পরিষদে নারীদের জন্য তিনটি আসন সংরক্ষিত আছে। তার মধ্যে দুইটি আসন জুম্ম নারীদের জন্য।

পার্বত্য জেলা পরিষদের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়নের বিষয়টি এখনো কার্যকর হয়নি। কার্যকর করার জন্য পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদেরও কোন সক্রিয় উদ্যোগ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর ২০০০ সালে আওয়ামীলীগ সরকার আঞ্চলিক পরিষদের অগোচরে জেলা পরিষদ আইনে ভোটাধিকার সংক্রান্ত ১৮ নং ধারা চুক্তির সাথে বিরোধাত্মকভাবে সংশোধন করে। প্রতিবাদ করা সত্ত্বেও তা চুক্তির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করা হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭-০৮ সালে প্রণীত ভোটার তালিকায় পার্বত্য চুক্তি লঙ্ঘন করে বসতিস্থাপনকারী সেটেলার, বহিরাগত চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা জেলা পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলেও ২০১২ সালের ১০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদ প্রক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মডেলকে অনুসৃত হয়েছে।

হিসাব করে দেখেন তো, পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক অনির্বাচিত পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রামের একটা স্বশাসন ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু এসব পরিষদের ভূমিকা হয়েছে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে। পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও চুক্তিতে যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা পরিষদের আছে, তাতেই জুম্মদের উপর চলমান সমস্যা অর্ধেক সমস্যার সমাধান জেলা পরিষদ দিতে পারে। আইন ও চুক্তি মোতাবেক পরিষদের অন্যতম কার্যাবলী হচ্ছে জেলার আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ (স্থানীয়), ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন (রিজার্ভ ফরেষ্ট ব্যতীত), পরিবেশ, মাধ্যমিক শিক্ষা, জুম চাষ, পর্যটন (স্থানীয়) সহ ৩৩টি কার্যাবলী। তার মধ্যে ১৭টি বিষয় হস্তান্তরিত হয়েছে। হস্তান্তরিত ১৭টি বিষয়ের মধ্যে মাত্র ৫টি বিষয় যথাযথভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১২টি বিষয় ত্রুটিপূর্ণভাবে বা অসম্পূর্ণভাবে হস্তান্তরিত হয়েছে। পার্বত্য জেলা পরিষদ অহস্তান্তারিত সকল বিষয়সমূহকে যথাযথভাবে হস্তান্তরের দাবিতে সোচ্চার হলে সরকার এ বিষয়সমূহ হস্তান্তরের করে দিত বাধ্য হত। হস্তান্তরিত হয়নি বটে কিন্তু তারা নিজেরাই বিষয়সমূহ হস্তান্তরের দাবিতে সর্বদা সোচ্চার হলে প্রতি বছর জুম্মদের জায়গা দখল, পর্যটন স্থাপনার নামে ভূমি বেদখল, জুম্ম নারীদের উপর নানা মাত্রায় নিপীড়ন ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যেত। তাদের ব্যর্থতার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর মদদে সেটেলার কর্তৃক জুম্মদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা বেড়ে চলেছে, জুম্ম নারীদের গণধর্ষণ, ধর্ষণ, হত্যা, পর্যটনের স্থাপনার নামে ভূমি বেদখল ভূমিধস গতিতে বাড়ছে।

হিসেব মেলান, আপনারা যাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করছেন, গত হয়ে যাওয়া পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার ক’জন চিম্বুকের বুকে ম্রোদের জায়গা দখল করে ফাইভ স্টার হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ, কৃত্তিকা ত্রিপুরাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছে কিংবা সরকারের নিকট তুলে ধরেছেন? এসব পরিষদের কোন চেয়ারম্যান-মেম্বার আলুটিলায় ৭০০ একর ভূমি বেদখলসহ অসংখ্য মানবাধিকার লংঘনের ঘটনার সোচ্চার ছিলেন? কতজন আপনাদের পাশে ছিলেন? কে আপনাদের কথা শুনেছেন? উল্টো বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা সিকদার গ্রুপ ও সেনা কল্যাণ সংস্থা কর্তৃক ম্রোদের জমি দখল করে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের সাফাই গেয়েছেন। পার্বত্য জেলা পরিষদের ম্রো সদস্যটি ২০ একর জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য চিম্বুকে ম্রোদের চাপ প্রয়োগ ও ছলছাতুরীর অভিযোগ পাচ্ছি। রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে আঁতাত করে আলিকদমের সহজ সরল ম্রোদের চাল-ডাল দেয়া হবে মর্মে মিথ্যার গল্প বানিয়ে পর্যটন চাই ব্যানারে মানববন্ধনে নামিয়েছে। এতসব প্রতারণা করেই চলেছে জুম্মদের সাথে আবার তাদেরকেই সংবর্ধনা দিচ্ছি। প্রশ্ন করুন আপনার বিবেককে। নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য নিজের সততার সাথে প্রতারণা করছেন না তো? নিজের ভূমি বেদখল হলে তাকে পাবেন তো?

তাহলে পার্বত্য জেলা পরিষদ কি করে? অনির্বাচিত পার্বত্য জেলা পরিষদ এক বছরে একটা বৃত্তি, ঘুষ বাণিজ্যে চালিয়ে অদক্ষ, অযোগ্য লোকদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে, কিছু লোকদেখানো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে যা তারা নিয়মমাফিক করে থাকেন। এর বেশি কিছু তারা করে না।

সরকার যেহেতু চুক্তিকে পাশ কাটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন অনির্বাচিত পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ দিয়েছে কাজেই জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতাও নেই। পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জবাবদিহি এবং এর চেয়ে দক্ষ ও যোগ্যতম প্রতিনিধি পেতাম।

আমারে কবর দিও হাঁটু ভাঙ্গার বাঁকে উপন্যাসে লেখক ডি ব্রাউন লিখেছেন, শ্বেতাঙ্গরা ১৬০৭ সালে আমেরিকায় নিজেদের উপনিবেশ কায়েম করার জন্য একটু কৌশলী হয়ে জেমসটাউন নামক স্থানে আদিবাসী পাওহাতান গোত্রের প্রধান ওয়াহুন সোনাকুকের মাথায় মুকুট পরিয়ে তাকে রাজা হিসেবে ঘোষণা করে, যাতে আদিবাসীরা তাদেরকে থাকা-খাওয়ার জন্য যোগান ও জায়গা দেয়। তাতে ক্ষান্ত না হয়ে ইংরেজ সেনাপতি রোলফে রাজার মেয়েকে বিয়ে করে নেয়। ইংরেজ জামাই পেয়ে রাজা হয়ে গেল ইংরেজ শাসক। ভাবলেন তার বা তার গোত্রের কিছুই হবে না। এদিকে ইংরেজদের জায়গা ও খাবার-দাবার যোগান দেয়ার বিরুদ্ধে পুরো পাওহাতান গোত্রের আদিবাসীরা অনড়। তারা জানত এ ইংরেজরা ধীরে ধীরে তাদের জায়গা দখলে নিয়ে নিবে। ঠিক সেটাই হয়েছে। রাজার মৃত্যুর পর ইংরেজরা পাওহাতান আদিবাসীদের হত্যা করে জেমসটাউন দখল করে নেয়। নিজেদের উপনিবেশিক ব্যবস্থা কায়েম করে।

সে গল্পের আলোকে পার্বত্য জেলা পরিষদে কারোর আত্মীয়,পরিচিতজন অনির্বাচিতভাবে নিয়োগ পেতে পারে। এতে খুশী হওয়ার জুতসই কারণ নেই, কেননা পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা মেয়াদ ভিত্তিক নয়। জনগণের ভোটাধিকারকে পাশ কাটিয়ে তারা যে কারোর আত্মীয়কে নিয়োগ দিয়ে একপক্ষকে খুশী রাখার কায়দা ব্রিটিশদের থেকে শিখেছে। ইংরেজরা সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে মীর কাসেম সিংহাসনে বসিয়েছিল। সেই মীর কাসিমকে বাংলার সিংহাসন ধরে রাখতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাকে বক্সারের যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। অনির্বাচিত অন্তর্বর্তীকালীন পার্বত্য জেলা পরিষদের আত্মীয়ের মাধ্যমে কিছু সুবিধা হয়তোবা পাওয়া যাবে। এ সুবিধাদি দিয়ে শোষণ থেকে প্রকৃত মুক্তি পাওয়া যাবে না। দমন-পীড়ন থেকে রেহাই দিতে পারবে না। ইসলামীকিকরণ ও সামরিকীকরণ থেকে মুক্তি দিতে পারবে না। ভূমি হারানো, ভূমি বেদখল, ভূমি থেকে উচ্ছেদ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ হবে না। একমাত্র পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রকৃত অধিকার ও মুক্তি সম্ভব হবে। কাজে জেনে বুঝে শাসকগোষ্ঠী, সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্রের পাতানো ফাঁদে পা দিবেন না। অগণতান্ত্রিক, চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী কাজকে একজন সচেতন জুম্ম হিসেবে ফুলের বা ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বৈধতা দিবেন না। পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচনের দাবিতে এবং চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে জোড়ালো আওয়াজ তুলুন।