পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী জুম্মদের অধিকার ও নিরাপত্তা নেই: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জুম্মরা

0
332

হিল ভয়েস, ১০ আগস্ট ২০২৩, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গতকাল ৯ আগস্ট ২০২৩ স্থানীয় সময় সকাল ১০:৩০ টার দিকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সম্মুখে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আদিবাসী জুম্মরা এক সমাবেশের আয়োজন করেন।

সমাবেশে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের নাগরিক ও রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার ও নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ করেন এবং সমাবেশ শেষে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অবস্থা ও অধিকার বিষয়ে একটি স্মারকলিপিও প্রদান করেন।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জুম্মদের সংগঠন ‘আমেরিকা জুম্ম কাউন্সিল’ এর উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে নিউইয়র্ক শহরে বসবাসকারী বিভিন্ন স্তরের জুম্মরা অংশগ্রহণ করেন।

আরো পড়ুন

বিলুপ্তপ্রায় আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় আদিবাসী যুবদের অধিকতর ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে: ঢাকায় সন্তু লারমা

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের জীবন সংকটে: চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত

আমেরিকান জুম্ম কাউন্সিলের সভাপতি সুপ্তা চাকমা তাতুর সভাপতিত্বে এবং আমেরিকান জুম্ম কাউন্সিলের নির্বাহী সদস্য মং এ প্রু মারমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উচিংনু মারমা। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কর্মী চঞ্চনা চাকমা, চিপামং চৌধুরী (রেবত ভান্তে) প্রমুখ।

উচিংনু মারমা বলেন, পাহাড়ে আদিবাসীদের নাগরিক ও রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অথনৈতিক অধিকার ও নিরাপত্তার নেই। প্রতিনিয়ত গুম, হত্যা, জুলুম, পাহাড়ি আদিবাসীদের উপর বিদ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার পাহাড়ের আদিবাসীদের যুগ যুগ ধরে বঞ্চনা ও নির্যাতন করে আসছে। তিনি পাহাড় এবং সমতলের আদিবাসীদের ভুমি বেদখল বন্ধসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান। আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে তরুণদের ভুমিকা গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল হতে হবে তিনি মনে করেন।

মানবাধিকার কর্মী চঞ্চনা চাকমা বলেন, বাংলাদেশে ১৯৯৭ সালের ২ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তি ২৫ বছরেও বাস্তবায়ন করেনি সরকার। সরকার আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। প্রতিনিয়ত পাহাড় এবং সমতলে আদিবাসীদের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। ভুমি বেদখল এবং আদিবাসীদের এলাকায় আদিবাসীদের অনুমতি ও সম্মতি ছাড়া উন্নয়ন হচ্ছে, যাতে আদিবাসীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা বিশ্বের আদিবাসীরা তাদের মৌলিক অধিকার এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অধিকারের জন্য লড়াই করছে এবং লড়াই করেই বাঁচতে হবে। আদিবাসী তরুণদের প্রগতিশীল হয়ে আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে।

চিপামং চৌধুরী (রেবত ভান্তে) বলেন, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে আদিবাসীরা স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারছে না। প্রতি মুহূর্তে তাদের আতঙ্কের দিন কাটাতে হচ্ছে। রাতের আঁধারে ঘর তল্লাশিসহ ধর্মীয় গুরু, ভান্তের উপরে হামলা ও নির্যাতনের মত ঘটনা ঘটছে। কোন সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। কাদের কাছে গেলে নিরাপত্তা পাবো?

তিনি বাংলাদেশের সরকার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীকে চীবর পরিহিত শ্রদ্ধাভাজন ভান্তেদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করার আহ্বান জানান এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও সেটলার বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন করার দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে রাপ্রু সাই মারমা, বাচিং উ মারমা, লাল থোয়াই মারমা, বর্তিকা চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

আরো পড়ুন

আদিবাসী বললে সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে, এটা অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা: রাঙ্গামাটিতে ঊষাতন তালুকদার

রাবিতে আদিবাসী দিবস পালিত: যেকোনো অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান

আদিবাসীরা ক্রমাগত নিপীড়িত হয়ে দেশান্তরী হতে বাধ্য হচ্ছেন: কক্সবাজারে আদিবাসী দিবসে বক্তাগণ