দেশভাগ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও অন্যান্য জাতিসত্তা

0
1426

               ত্রিদিব শান্তাপা কুন্ডু                 

গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সমসাময়িক ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার ঘটনাটি একটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। পাঞ্জাব এবং বাংলার জনগণই নি:সন্দেহে এই দেশভাগের সর্বাধিক শিকার। বাংলার বিভক্তির প্রক্রিয়ার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলির ভাগ্য এককার হয়ে যায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল একটি শাসন বহিঃভূত অঞ্চল এবং এখানকার অধিবাসীরা হিন্দুও নয় মুসলিমও নয়। তারা ছিল কিছু বৌদ্ধ ধর্মী ও কিছু প্রকৃতি পূজারী। ৯৭% অ-মুসলিম জনসংখ্যার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত হওয়া দেশভাগের একটি চরমতম ভুল। বর্তমান লেখাটি সেই দেশভাগের প্রক্রিয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও অন্যান্য জাতিসত্তাদের দেশভাগের কারণে কি পরিণতি হলো সে সম্পর্কে অনুধাবন করার একটি উদ্যোগ।

৩রা জুন উপমহাদেশ বিভক্তির কর্মসূচীর জন্য মৌলিক নীতিমালা দেয়া হয় এবং ১৯৪১ সালের জনগনণাকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল পাকিস্তানে ও হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল ভারতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ যৌক্তিক কারণে ৯৭% অমুসলিম অধ্যূষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা। স্বাধীনতার আগে চাকমা নেতারা দিল্লীতে যান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতে অন্তর্ভুক্ত হবে এরকম আশ্বাসও পান ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের পক্ষ থেকে।

পরিকল্পনা অনুসারে বাংলার আইনসভাকে দুই অংশে বিভক্ত করা হয় এবং তারা আলাদা আলাদাভাবে ১৯৪৭ সালের ২০শে জুন দেশভাগের প্রশ্ন নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্য দেখা করেন। হিন্দু প্রধান জেলাগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধিরা বাংলা ভাগ করার পক্ষে ভোট দেন। অপরদিকে মুসলিম প্রধান জেলাগুলির প্রতিনিধিরা এর বিরুদ্ধে ভোট দেন। এই ভোটের ভিত্তিতে ভাগের পক্ষে মতামতকে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এখানে উল্লেখ করা সমীচিন হবে যে, পাহাড়ী জনগণের বাংলার আইনসভায় কোন প্রতিনিধিই ছিলো না এবং সে কারণে বাংলার বিভক্তি সর্ম্পকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রশ্নে ১৯৪৭ সালের ২শে জুন তারিখে মতামত প্রদানে তাদের কোন বক্তব্যই ছিলো না।

বাউন্ডারী কমিশনের কাছে মুসলিম লীগ পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর শক্ত দাবি উত্থাপন করে। তাদের মতানুসারে: ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম জেলারই একটি অর্থনৈতিক এবং ভৌগলিক অংশ তাই একে ভাগ করলে উভয়ের স্বার্থই ক্ষতি। চট্টগ্রাম বন্দরের যথাযথ ব্যাবস্থাপনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামকে তাদের ভাগে ঢুকিয়ে দেয়া প্রয়োজন। বর্হিঃবিশ্বের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল যোগাযোগ চট্টগ্রাম জেলার উপর দিয়েই। পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বর্ধিত বা অবিচ্ছেদ্য জেলা এবং খাদ্য সরবরাহের জন্য চট্টগ্রামের উপরই নির্ভরশীল। চট্টগ্রামে যেহেতু কোন কয়লা খনি নেই, তাই কর্ণফুলী নদীতে তৈরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি গোটা অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজন।’

অপরদিকে বাউন্ডারী কমিশনের অমুসলিম সদস্যরা শাসন বহির্ভূত অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভূক্তির জন্য বেঙ্গল বাউন্ডারী কমিশনের এক্তিয়ার বিষয়ে কিছু মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করেন। সন্দেহাতীতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়টি স্যার সিরিল রেডক্লিপের জন্য একটি জটিল বিষয় হয়ে প্রতীয়মান হন।

“যে অঞ্চলে সমগ্র জনসংখ্যার মাত্র ৩% মুসলিম জনসংখ্যা এই পার্বত্য চট্টগ্রামকে কোন রাজ্যে ঢুকিয়ে দেয়া যায়? চট্টগ্রাম জেলার নিয়ন্ত্রণে থাকা এটিকে অন্য কোন ভিন্ন রাজ্যে ঢুকিয়ে দেওয়াও কঠিন। পূর্ব পাকিস্তানে ঢুকিয়ে দিলে কেমন হয়, যেহেতু কোলকাতাকে পশ্চিম বাংলায় দেয়া হচ্ছে। পূর্ব বঙ্গে কেবল বিকল্প হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরটিই থেকে যাচ্ছে; পার্বত্য চট্টগ্রামকে বন্দর নগরী চট্টগ্রামেরই পশ্চাদপদ ভূমি হিসেবে গণ্য করা যায়। অধিকন্তু পাকিস্তান যেহেতু কোলকাতাকেও পেলনা আর পাঞ্জাবের ক্ষুদ্র অংশই মাত্র পাচ্ছে, রেডক্লিপ চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তানে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে দিয়ে সেই ক্ষতি পূরণ করতে। তথাপি কমিশনের এই রায় দেশভাগের মৌলিক যুক্তিকে ভঙ্গ করেছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীগুলি স্বায়ত্তশাসনের অধিকারকে অবহেলা করেছে।

যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতেই অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে চাকমা নেতারা সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাসী ছিলেন, তাই আনন্দের সাথে তারা ১৫ই অগাস্ট রাঙ্গামাটিতে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। বাউন্ডারী কমিশনের প্রতিবেদন তৈরি হয়ে থাকলেও বৃটিশ সরকার কর্তৃক তা তখনও প্রকাশিত হয়নি। এটি প্রকাশিত হয় ১৭ই অগাস্ট। পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীরা তাদের ভুল অংশে পড়ার জন্য দু:খভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। চাকমা নেতারা কালবিলম্ব না করে নতুন দিল্লী চলে যান এবং ভারতীয় নেতারা তাদের ভারতীয় হস্তক্ষেপের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করা হয় এবং ২১শে অগাস্ট পাকিস্তানী সেনা এসে নামিয়ে না পর্যন্ত রাঙ্গামাটির সকল সরকারি ভবনে ভারতীয় পতাকা উড়তে থাকে। এস কে চাকমা ও তার অনুসারীরা গ্রেফতার এড়াতে ভারতে পালিয়ে আসেন। পরবর্তী দুই বছর যাবত তিনি ভারতীয় নেতাদের সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য কনভিনসড করতে চেষ্টা করেন। “প্যাটেল আশাবাদী ছিলেন বটে কিন্তু নেহেরু ছিলেন অনাগ্রহী, এমন কিছু করতে তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন যা করলে উল্টো কাশ্মীরকে দখল করতে পাকিস্তানকে উৎসাহিত করে।”

যার ফল চাকমাদের জন্য নির্মম হয়ে উঠে। রেডক্লিপ এওয়ার্ড প্রকাশের পর চাকমাদের ভারতীয় পতাকা উত্তলন ও প্রতিবাদ আন্দোলনকে পূর্ব পাকিস্তান সরকার খুব কঠোরভাবে নেয় বলেই মনে হয় এবং সরকার নিশ্চিত হয় যে, চাকমারা ভারতপ্রেমী এবং পাকিস্তানের প্রতি আস্থাশীল নয়। ফলে পাহাড়ী মানুষদের নতুন ইতিহাসের সূচনা হয় সন্দেহ, অবিশ্বাস এবং ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে। পূর্ব পাকিস্তান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীদের পূর্ব পাকিস্তানের সাথে একীভূত করতে প্রয়োজনে বল প্রয়োগেও প্রতীজ্ঞাবব্ধ ছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীরা আশংকিত হয়ে পড়ে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে পরিণত করার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের। তথাপি মুসলিম দেশ হওয়ার পরিবর্তে পাকিস্তান একক জাতিগত দেশে পরিণত হয়ে গেল না। আফগানিস্তানের সাথে সীমান্ত অঞ্চলে এবং উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলে উপজাতীয় এলাকা থাকার কারণে পাকিস্তান তাদের স্বায়ত্তশাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল।

অপরদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সংস্পর্শে আসার প্রথম দিকে ১৮৬০ সাল থেকে ভোগ করে আসা পাহাড়ী জনগণের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা শেষ করে দেয়ার জন্য পূর্ব পাকিস্তান সরকার দৃঢ় প্রতীজ্ঞ ছিল। ১৮৬০ সালের এ্যাক্ট ঢঢওও অনুসারে চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রামকে এবং সুপারিনটেডেন্ট অব হিল ট্রাইব নামে এক অফিসারের নিয়ন্ত্রণে ফেলা হয়। সাত বছর পর, ১৮৬৭ সালে সেই টাইটেলও পরিবর্তন করে ডেপুটি কমিশনার অব হিল ট্রাক্টস নামে অভিহিত করা হয়। এ অঞ্চলের আভ্যন্তরীণ শাসন ব্যবস্থাকে তিনজন রাজা- চাকমা, মং এবং বোমাং-এর হাতে রাখা হয় যারা প্রত্যেকেই আলাদাভাবে স্বাধীন থেকে যায়। বৃটিশ সরকার চিটাগং হিল ট্রাক্টস ফ্রন্ট্রিয়ার পুলিশ রেগুলেশনস প্রণয়ন করেন ১৮৮১ সালে এবং পাহাড়ী মানুষদের নিয়ে একটি পুলিশ বাহিনী গঠনের কর্তৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে অর্পণ করেন। অবশেষে ১৯০০ সালে সরকার চিটাগং হিল ট্রাক্টস রেগুলেশনস প্রণয়নের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলের স্বশাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে পূর্ব পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত করার সাথে সাথে ১৮৮১ সালের চিটাগং হিল ট্রাক্টস ফ্রন্ট্রিয়ার পুলিশ রেগুলেশনসকে সংশোধন করা হয় এবং পাহাড়ীদের পুলিশ বাহিনীর অবলুপ্তি ঘটে।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে পূর্ব পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত করার সাথে সাথে ১৮৮১ সালের চিটাগং হিল ট্রাক্টস ফ্রন্ট্রিয়ার পুলিশ রেগুলেশনসকে সংশোধন করা হয় এবং পাহাড়ীদের পুলিশ বাহিনীর অবলুপ্তি ঘটে। ১৯৬৪ সালে এক সাংবিধানিক সংশোধনের দ্বারা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় অঞ্চল হিসেবে বিশেষ মর্যাদাও শেষ করে দেয়া হয়। তবুও বাস্তবিক অর্থে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু বিশেষ প্রশাসন অব্যাহত থাকে। ১৯৬০ সালের পর থেকে পূর্ব পাকিানস্ত সরককার সমতল এলাকার ভূমিহীন মুসলিম পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পিত কৌশল গ্রহণ করেন। যার উদ্দেশ্যে ছিল এ অঞ্চলের জনসংখ্যার মানচিত্রই বদলে ফেলা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ অভ্যূদয় হওয়ার পরও এই কৌশল অব্যহত থাকে।

ইতিমধ্যে ১৯৬৪ সালে কর্ণফুলী নদীতে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এ প্রকল্প পার্বত্য চট্টগ্রামের কেন্দ্রে এক বিশাল হ্রদের জন্ম দেয় এবং ২০,০০০ হেক্টরেরও বেশী আবাদযোগ্য জমি ডুবিয়ে দেয় আর ১০০,০০০-এর বেশী পাহাড়ি মানুষকে বিতাড়িত করে। এই কাপ্তাই প্রকল্প পাহাড়িদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙে দেয় এবং ব্যাপকভাবে পাহাড়ি জনসংখ্যা কমিয়ে দেয়। এই সকল উন্নয়ন যুগপৎভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে অত্যাচার ও অবিশ্বাসের এক পরিস্থিতির জন্ম দেয় এবং যার ফলে অবশেষে সেখানে গেরিলা বিদ্রোহী আন্দোলনের উদ্ভব হয়।

১৯৭২ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’ তথা হিল পিপলস পলিটিক্যাল পার্টি গঠন হয় একই সাথে পরবর্তী বছর ১৯৭৩ সালের ৭ই জানুয়ারি এরই এক সশস্ত্র শাখা হিসেবে শান্তিবাহিনীর জন্ম হয়। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের প্রাণনাশের পর ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় শান্তিবাহিনীর খুবই সক্রিয় হয়ে উঠে। শান্তিবাহিনী বাঙালি সেটেলারদের উপর বার বার আক্রমন পরিচালনা করে এবং এই সেটেলারদের রক্ষা করতে এ অঞ্চলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের জীবনে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে যায়। পরিস্থিতির শিকার হয়ে তারা আন্তর্জাতিক সীমানা পার হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য, বিশেষত ত্রিপুরা ও মিজোরামে আশ্রয় নেয়।

সুতরাং, ১৯৪৭ সালে বাংলার বিভক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীগুলির ভবিষ্যত নির্ধারণে এক অত্যন্ত নির্মম ভূমিকা রাখে। পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি শাসন-বহির্ভূত অঞ্চল হিসেবে, স্যার সিরিল রেডক্লিপের নেতৃত্বে বেঙ্গল বাউন্ডারী কমিশনের বস্তুত এ্যক্তিয়ারের বাইরে ছিল। বাংলার আইন সভায় পাহাড়ী জনগণের কোন প্রতিনিধিত্ব ছিলো না এবং তাই বাংলার বিভক্তির বিষয়ে যা সিদ্ধান্তমূলক সেই ২০শে জুনের মত প্রদানে তাদের কোন বক্তব্যই ছিলনা। শাসন-বহির্ভূত অঞ্চল হওয়ার অছিলায় ৩রা জুনের পরিকল্পনায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলা কি পূর্ব বা পশ্চিম অংশে অন্তর্ভুক্তির কোন যৌক্তিতাই থাকতে পারেনা। তবুও দেশভাগের মৌলিক যুক্তিকে অবহেলা করেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে পূর্ব পাকিস্তানে দেয়া হল। এটি নিঃসন্দেহে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি মানুষদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকারকে অগ্রাহ্য করা। দেশভাগ তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও অন্যান্য পাহাড়ী জাতিগোষ্ঠীগুলির ভাগ্যকে অন্ধকারে ফেলে দিল। তারা তাদের পিতৃভূমি থেকে ব্যাপক হারে উচ্ছেদ হলো এবং উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে শরণার্থীর জীবনযাপনে বাধ্য করল। এটিই হলো দেশভাগের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর পরিণতি।

ত্রিদিব শান্তাপা কুন্ডু: বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের বানওয়ারি লাল ভালোটিয়া কলেজের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক। ১৯৪৭ সালে বাংলার বিভক্তি নিয়ে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে গবেষণা করছেন ।

ইংরেজী থেকে ভাষান্তর: প্রধীর তালুকদার রেগা