দিনাজপুরে মাহাতো আদিবাসীদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, হামলায় ৫ আদিবাসী নারী আহত

0
987

হিল ভয়েস, ২০ জানুয়ারি ২০২১, দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটে ভূমিদস্যু কর্তৃক মাহাতো আদিবাসীদের উপর হামলায় পাঁচজন আদিবাসী নারী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল ১৯ জানুয়ারি ২০২১ সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার চককাঁঠাল এলাকার প্রায় ৬ বিঘা জমি পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন বধিবুড়া মাহাতোর ছেলে রামকৃষ্ণ মাহাতো। রামকৃষ্ণের ছেলে ফটিক মাহাতো ও মন্টু মাহাতো ওই জমিগুলো চাষাবাদ করে আসছেন। চলতি বছরে তারা ওই জমিগুলোতে বোরো ধান রোপণ করেছেন। একই সঙ্গে একটি জমিতে কলাবাগান ও আরেকটি জমিতে প্রায় ২০টি আমগাছ রোপণ করেছেন।

সম্প্রতি উক্ত জমিগুলো ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করেন খোদাতপুর কলোনির খালেকের ছেলে মাহাতাব ও আফতাব হোসেন। পরে মাহাতাব ও আফতাব এই জমিগুলো গত বছর ২৮ জুন কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের মৃত সলিমউদ্দিনের ছেলে নুর ইসলাম, মৃত নেসার আলীর ছেলে আশরাফ আলী ও বদিউজ্জামান, মৃত বাহার আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাকসহ ১৯ জনের কাছে বিক্রি করে দেন। তাদের দাবি, তাদের মা জয়বুন্নেছা এই জমিগুলো বধিবুড়ার কাছ থেকে ১৯৬৩ সালে ক্রয় করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে ওই ১৯ জন তাদের ভাড়াটে লোকজন গিয়ে জমি দখল করে টিনশেডের ছাউনির ঘর তুলতে থাকে। তারা জমিতে রোপণ করা আমগাছ ও কলাগাছ কেটে ফেলে এবং আদিবাসীদের চারটি ঘরের বেড়া (বাঁশের তৈরি প্রাচীর) ভেঙে দেয়। এ সময় ফটিক মাহাতোর স্ত্রী অমলা মাহাতো প্রতিবেশিদের নিয়ে বাধা দিতে গেলে ওই লোকেরা তাদের উপর হামলা করে বসে। হামলায় অমলা মাহাতো, রাধিকা মাহাতো, শ্যামলী, মিরুবালা ও পদবালা আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হামলার পর ফটিক মাহাতো ঘোড়াঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

মন্টু মাহাতোর ছেলে জিতেন মাহাতো বলেন, এই ঘটনায় আমার কাকা ফটিক মাহাতো বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগেও আমাদের বিষয়টি নিয়ে ৩ জানুয়ারি সালিশ হয়েছে। পরের দিন আবারও বসার কথা থাকলেও বিবাদীরা আর বসেননি। পরে পুলিশ বিবাদীদের ওই জমিতে আসতে নিষেধ করে। এই হিসেবেই আমরা জমিতে ধান রোপণ করি।

জিতেন মাহাতোর ভাতিজা প্রশান্ত মাহাতো বলেন, এই ঘটনায় আমাদের পাঁচ নারী আহত হয়েছেন। হামলাকারী ভূমিদস্যুদের নাম বলতে পারেন নি। তিনি বলেন, তারা চরের লোকজন। বাড়িও ঠিকভাবে জানি না, নামও জানি না। তবে তারা এই জমিগুলো নিজেদের বলে দাবি করছেন। অথচ এই জমিগুলো আমাদের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের মৃত সলিমউদ্দিনের ছেলে নুর ইসলাম বলেন, আমরা কাগজপত্র দেখেই জমিগুলো কিনেছি।

ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, যেহেতু বিষয়টি জমি-সংক্রান্ত এবং আদিবাসী-সংক্রান্ত, তাই গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে।