জুরাছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ইউপি সদস্য ও স্কুল শিক্ষকসহ ৩ গ্রামবাসী আটক, পরে মুক্তি, এছাড়া ১৯টি মোবাইল হরণ

0
1325
ছবি : প্রতিকী

হিল ভয়েস, ৮ আগস্ট ২০২১, রাঙ্গামাটি: আজ ৮ আগস্ট ২০২১ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন জুরাছড়ি উপজেলায় এক নির্বাচিত ইউপি সদস্য ও একজন স্কুল শিক্ষকসহ তিন নিরীহ জুম্ম গ্রামবাসীকে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে সাময়িকভাবে আটক রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে পরে আটককৃতদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সেনাবাহিনীর অপর একটি দল জুরাছড়ির লুলংছড়ি গ্রামে টহল অভিযানে গিয়ে গ্রামবাসীদের ১৯টি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

আটকের শিকার হয়েছেন কান্দেবছড়া গ্রামের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য কল্যাণময় চাকমা বাবু (৩০), পীং-রবীচন্দ্র চাকমা এবং ফগিরাছড়া গ্রামের ফগিরাছড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল কুমার চাকমা ও সাধারণ গ্রামবাসী চিজি চাকমা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর রাতে বনযোগীছড়া সেনা জোনের ৭ বেঙ্গলের অধীন ফগিরাছড়ি সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার নুরুল আলম এর নেতৃত্বে ১২-১৫ জনের একটি সেনাদল পার্শ্ববর্তী কান্দেবছড়া গ্রামে টহল অভিযানে যায়। ভোর ৪:৪০ টার দিকে সেনাদলটি কান্দেবছড়া গ্রামের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য কল্যাণময় চাকমা বাবুকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে এবং ফগিরাছড়া সেনা ক্যাম্পে আটক করে রাখে। এরপর সেনাদলটি ফগিরাছড়া গ্রামের ফগিরাছড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল কুমার চাকমা ও সাধারণ গ্রামবাসী চিজি চাকমাকেও ক্যাম্পে ডেকে নিয়ে যায়।

প্রায় ৪-৫ ঘন্টা সেনা ক্যাম্পে আটক রাখার পর সেনাবাহিনী সকাল প্রায় ১০:৩০ টার দিকে কল্যাণময় চাকমা বাবুকে ছেড়ে দেয় বলে খবর পাওয়া যায়। অপরদিকে দুপুর প্রায় ১২:০০ টার দিকে শিক্ষক লাল কুমার চাকমা ও চিজি চাকমাকেও ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়।

আরো উল্লেখ্য যে, আজ ভোর আনুমানিক ৫:০০ টার দিকে একই উপজেলার লুলংছড়ি সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার খোরশেদ এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর অপর একটি দল লুলংছড়ি গ্রামে টহল অভিযান চালায়। এসময় সেনা সদস্যরা লুলংছড়ি গ্রামের সাধারণ জুম্ম গ্রামবাসীদের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইল জোরপূর্বক কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

যাদের মোবাইল কেড়ে নেয়া হয় তারা হলেন- মিটন চাকমা, হৃদয় চাকমা, রিপেল চাকমা, পূর্ণ চাকমা, আবু চাকমা, গুরিধন চাকমা, রিকেল চাকমা, চিত্তি চাকমা, রিপন চাকমা, বাদি চাকমা, হাদেন্দ্র চাকমা, ভাগ্যধন চাকমা, লালন চন্দ্র চাকমা, জয় বিজয় চাকমা, রুপ্পো চাকমা, রিটেশ চাকমা, সন্দিকা চাকমা, নোবেল চাকমা, নলিনাক্ষ চাকমা।

জানা গেছে, ঐ সময়ে লুলংছড়ি গ্রামবাসীরা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জড়ো হয়। এমন সময় সেনাদলটি সেখানে গিয়ে উক্ত গ্রামবাসীদের মোবাইল ফোনগুলো কেড়ে নেয়।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী কর্তৃক ওই মোবাইল ফোনগুলো গ্রামবাসীদের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানা যায়নি।