জুরাছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক জুম্মদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, এলাকায় উদ্বেগ

0
545
ছবি: প্রতীকী

হিল ভয়েস, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন জুরাছড়ি উপজেলার আদিবাসী জুম্ম গ্রামবাসীদের নিকট হতে ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জনগণের মধ্যে যেমন উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি এভাবে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা সেনাবাহিনীর কাজ কিনা বা এর পেছনে সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যই বা কী তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সেনাবাহিনী কর্তৃক জুম্মদের কাছ থেকে চাওয়া এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে- গ্রামের নাম, হেডম্যানের নাম, কার্বারির নাম, পরিবারের সদস্যদের নাম, বয়স, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা, ধর্ম, পেশা, কর্মস্থল, এনআইডি কার্ড নাম্বার (অথবা জন্ম সনদ নাম্বার), ওয়ার্ড নাম্বার, ইউনিয়নের নাম, মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি।

জানা গেছে, জুরাছড়ি উপজেলার সেনাবাহিনীর ২ বীর বনযোগীছড়া সেনা জোন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি উপজেলাধীন সকল মৌজার হেডম্যান ও কার্বারিদের নিয়ে একটি সভা করে। সভায় সেনাবাহিনী হেডম্যান ও কার্বারিদেরকে উক্ত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন অচিরেই সেনা জোন কর্তৃপক্ষের নিকট জমাদানের নির্দেশ প্রদান করে। এছাড়া বিভিন্ন সেনা ক্যাম্পও সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যান ও কার্বারিদের নিয়ে এব্যাপারে সভা ডেকে উক্ত তথ্য সরবরাহের নির্দেশ প্রদান করে।

গত ২৯ আগস্ট ২০২২ শিলছড়ি সেনা ক্যাম্প এবং ২৭ আগস্ট ২০২২ লুলাংছড়ি সেনা ক্যাম্প কর্তৃপক্ষও এভাবে হেডম্যান ও কার্বারিদের ডেকে সেনা ক্যাম্পে সভা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক অধিকারকর্মী বলেন, দেশে জনগণের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য পরিসংখ্যান ব্যুরো, ভোটার তালিকা ব্যবস্থা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ ইত্যাদি রয়েছে এবং এসমস্ত কার্যালয়ে নাগরিকদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে। সম্প্রতি সরকারের জনসংখ্যা পরিসংখ্যান ব্যুরো এসংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যও প্রকাশ ও প্রচার করেছে। কিন্তু সেনাবাহিনী কেন আবার আলাদাভাবে জুরাছড়ি এলাকার জুম্মদের এসব তথ্য, বিশেষ করে ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারসহ সংগ্রহ করছে তা বোধগম্য ও যুক্তিসংগত নয়।

তিনি বলেন, বিশেষ করে জুম্ম জনগণকে হয়রানি ও দমন-পীড়নের মধ্যে রাখার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী এধরনের কৌশল বা কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হেডম্যান ও কার্বারি সেনাবাহিনীর এসব কর্মকান্ডের ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, সেনাবাহিনীর এসব কাজ হয়রানি ছাড়া আর কিছু নয়। একজন হেডম্যান বলেন, সেনাবাহিনী অনেক সময় হেডম্যান-কার্বারিদের নিজেদের কর্মচারীর মত ব্যবহার করে থাকেন এবং হয়রানি করেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।