জুরাছড়িতে পার্বত্য চুক্তি ২৬তম বর্ষপূতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

0
374

হিল ভয়েস, ২ ডিসেম্বর ২০২৩, রাঙ্গামাটি: “জুম্ম জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করুন, সকল প্রকার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলন জোরদার করুন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে জুরাছড়িতে ও জুরাছড়ি ইউনিয়ন কমিটির একাংশ ও মৈদং ইউনিয়নের ইউনিয়ন কমিটির একাংশ নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় নীলচন্দ্র চাকমা, সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুমিত চাকমা সাধারণ সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জুরাছড়ি থানা কমিটি। আরো বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৈদং ও জুরাছড়ি ইউনিয়নের ইউনিয়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন গ্রামের গ্রাম কমিটি ও মহিলা সমিতি এবং কার্বারী নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন পার্বত্য চুক্তির স্বাক্ষরের ২৬ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো সরকার-পর্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি। পার্বত্যবাসী ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঠিক এই দিনে আজ হতে ২৬টি বছর আগে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলো। তারা মনে করেছিলো আজ হতে আর বুঝি জুম্ম জনগণ সেনাবাহিনী দ্বারা কোন নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হবে না। আজ হতে বুঝি পার্বত্যবাসী সুখে এবং শান্তিতে তাদের জুম করে তাদের জীবন অতিবাহিত করতে পারবে। আজ হতে বুঝি কোন ছেলে-মেয়ের দেখতে হবে না তাদের চোখের সামনে সেনাবাহিনীর দ্বারা কোন পিতাকে লাঞ্চিত হতে বুটের আঘাতে আঘাত প্রাপ্ত হতে। আর বুঝি কোন পিতা মাতার শুনতে হবে না তাদের নিজের মেয়ের সেনাবাহিনীর দ্বারা ইজ্জত লুণ্ঠন হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, এই স্বপ্ন ও আশা নিয়ে আমরাই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলাম। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও জুম্ম জনগনের স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে। চুক্তির স্বাক্ষরের যে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার জুম্ম জনগণ হয়েছিলো তা আজ অবধি চলমান।

তাই আমরা এ সমাবেশ থেকে ঘোষণা করতে চাই, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পার্বত্যবাসীর যা কিছু করণীয় তা করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমরা নিশ্চিত যে, রাজপথের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন করবে না। তাই সরকারকে যে ভাষায় জবাব দেওয়া দরকার সে ভাষায় জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের সকলকে সংগঠিত হতে হবে। সকলকে প্রস্তুত হতে হবে কঠিন কঠোর আন্দোলনের জন্য। ছাত্র সমাজ যুব সমাজকে সংগঠিত হতে হবে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য। প্রবীনদের অভিজ্ঞতা নবীনদের শক্তি একত্রিত করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

উক্ত সমাবেশে প্রায় ৬৫০ জনের অধিক লোক উপস্থিত হয়।