কোভিড-১৯: পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেডক্রিসেন্ট ও রেডক্রসের সহায়তা

0
722
ছবি: বিডিআরসিএস ও আইসিআরসি

হিল ভয়েস, মে ২০২০, পার্বত্য চট্টগ্রামকরোনভাইরাস মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলাতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ৮৫টি কমিউনিটি ও শহরাঞ্চলেআর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। গত ১৯ থেকে ২৪ মে বিডিআরসিএস এবং আইসিআরসি পার্বত্য চট্রগ্রামে তিন জেলার জনগোষ্ঠীর খাদ্য গ্রহণের মান উন্নয়নে ছয় হাজার পরিবারের ৩০ হাজার মানুষকে নিঃশর্ত ও এককালীন ৪৫০০ টাকার আর্থিক অনুদান দিয়েছে।

৩০ মে ২০২০ শনিবার আইসিআরসি-এর বাংলাদেশ জনসংযোগ কর্মকর্তা রায়হান সুলতানা তোমা-এর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, দেশজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারী অব্যাহত থাকায়, অনেক লোক, বিশেষত দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী মানুষ কাজের অভাবে তীব্র খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে। ক্রমপরিবর্তনশীল এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। এই প্রেক্ষিতে বিডিআরসিএস ও আইসিআরসির উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বিডিআরসিএসের কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক জনাব এম এ হালিম বলেন: “স্থানীয় বিডিআরসিএস ইউনিটগুলির সহায়তায় আমরা কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের পরিবার, কর্মহীন দিনমজুর পরিবার, আয়ের সুযোগ হারানো পরিবার এবং নারী-প্রধান পরিবারগুলোকে সহায়তা দিচ্ছি যেন এ মহামারীতে তারা তাদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারে।”

কোভিড-১৯ এর জরুরী পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য এ মানবিক সহায়তা তাদের খাবারে ইতিবাচক বৈচিত্র্য আনবে, পাশাপাশি এতে তাদের খাদ্যের গুণগত ও পরিমাণগত চাহিদাও মিটবে। পার্বত্য চট্রগ্রামে অব্যাহত মানবিক সহায়তার বিবরণ দিয়ে আইসিআরসি বাংলাদেশের ফিল্ড প্রোটেকশন ডেলিগেট লরা ডিসকিন বলেন: “আমরা পার্বত্য চট্রগ্রামে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের সাথে নিবিড় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ২০১৪ সাল থেকে বাঙালি এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। এ মহামারীর সময়ে আমাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ বিভিন্ন সহায়তামূলক কার্যক্রম: যেমন নগদ অর্থ ও খাদ্য বিতরণ, সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষকে চলমান সহায়তা, করোনাভাইরাস সংক্রমণে প্রতিরোধমূলক মেসেজ এমনভাবে পরিচালিত হচ্ছে যেন এ অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম হয়।”

এই সহায়তার পাশাপাশি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী (হাইজিন কিটস) দেওয়া হয়েছে যেন কারাগারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়াও, বিডিআরসিএসের স্বেচ্ছাসেবীরা কারাগারে সংক্রমণ ও প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষকে অব্যাহত সহায়তা দিয়ে আসছে। আইসিআরসির আর্থিক সহায়তায় বিডিআরসিএস তিন পার্বত্য জেলায় ৩০০০ পরিবারকে ফুড পার্সেল বিতরণ করেছে।

এছাড়াও, পার্বত্য চট্রগ্রাম জুড়ে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধমূলক অডিও বার্তা পাঠানো অব্যাহত রয়েছে ও নগদ অর্থ বিতরণের সময় লিফলেট আকারে এ বার্তাগুলো আরো মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ইতিমধ্যে বিডিআরসিএসের সাথে সমন্বয় করে দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করা হয়েছে; হটলাইনের মাধ্যমে ও সরাসরি উপকারভোগী জনগণের কাছথেকে তাদের প্রতিক্রিয়া, অভিযোগ ও পরামর্শ সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, আইসিআরসি পার্বত্য চট্রগ্রামে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, শক্তি এবং আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছে।

বিডিআরসিএসের সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্বে আইসিআরসি ২০১৪ সাল থেকে কমিনিউটি ভিত্তিক জীবিকা উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে। এছাড়াও, এ কমিউনিটিগুলো যেন নিরাপদ পানি এবং পরিচ্ছন্ন স্যানিটেশন সুবিধা পেতে পারে সে লক্ষ্যেও কাজ করে আসছে এ সংস্থা দুটি ।