আলীকদমে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের আনাগোনা ও চাঁদাবাজি বৃদ্ধি

0
421

হিল ভয়েস, ২ আগস্ট ২০২৩, বান্দরবান: সম্প্রতি বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলায় সেনা মদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র আনাগোনা ও চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এমনকি এই সন্ত্রাসীরা কখনো ‘শান্তিবাহিনী’, কখনো ‘কুকি-চিন আর্মি’ পরিচয় দিয়ে ও ভয় দেখিয়ে পাহাড়ি-বাঙালি বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অংকের চাঁদা দাবি করছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

প্রায় প্রকাশ্যে ও প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব সন্ত্রাসীদের আনাগোনা, চাঁদাবাজি ও হুমকি-ধামকির ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কয়েকজন এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি দল আওয়ামীলীগের বান্দরবান জেলার স্থানীয় নেতৃবৃন্দেরও আশ্রয়-প্রশয় রয়েছে এসব সন্ত্রাসীদের পেছনে। তাদের অভিযোগ, এলাকায় আধিপত্য সৃষ্টি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে লক্ষ রেখে সংকীর্ণ স্বার্থে ব্যবহারের জন্য এসব সন্ত্রাসীদের সেখানে আনা হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আলীকদম উপজেলায় বিভিন্ন মুদির দোকান এবং ওষুধের দোকান ব্যবসায়ীদের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন পরিচয়ে চাঁদা দাবি করছে।

জানা গেছে, গত ২৫ মে ২০২৩ আলীকদম উপজেলার পানবাজার এলাকার ভারত মোহন পাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে মংএনু মারমা ও কালাচোখা চাকমা ওরফে অটল চাকমা’র নেতৃত্বে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের ২০/২৫ জনের একটি সশস্ত্র দল অবস্থান গ্রহণ করে। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে অস্ত্র দেখিয়ে, কখনো মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে।

একটি সূত্র জানায়, গত জুন মাসে আলীকদম উপজেলার কয়েকজন ব্যবসায়ীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একই নাম্বারে সকালে ‘শান্তিবাহিনী’ পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে এবং একই দিনে আবার রাতে ওই নাম্বারে ‘কুকি-চিন আর্মি’ পরিচয় দিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাঙালি ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, আলীকদমে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসী মংএনু মারমা ও কালাচোখা চাকমা অটল এর চাঁদাবাজি ও হয়রানিতে এলাকার জনগণ অতিষ্ঠ। প্রায় সময় তারা বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে এবং বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ব্যবসায়ী কিংবা জনগণের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে থাকে। তিনি বলেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন চাঁদাবাজি ও হয়রানির ঘটনা সত্যি দুঃখজনক।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় সময়ই ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের আলীকদমের বিভিন্ন এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। এদের বিষয়ে প্রশাসন জানার পরও তারা না জানার মত অবস্থান করে।

গ্রামবাসীরা জানান, এই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রায় নিয়মিত আলীকদম উপজেলার বিশেষ করে পানবাজারের আমতলী লং ঘাট, গরুর বাজার এলাকার ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে থাকে।