৭ দিন ধরে কাপ্তাই জোনে নির্যাতনের পর আহত অবস্থায় ইউপি সদস্যকে মুক্তি

0
1606

হিল ভয়েস, মে ২০২০, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই সেনা জোন কর্তৃক গ্রেফতারকৃত কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য সুইচাপ্রু মারমা কাপ্তাই সেনা জোনে নিয়ে অবৈধভাবে ৭ দিন ধরে অমানুষিক মারধরের পর গুরুতর আহত অবস্থায় সেনাবাহিনী ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গত ২৭ এপ্রিল সুইচাপ্রু মারমা কাপ্তাই সেনা জোন কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর কাপ্তাই সেনা জোনে নিয়ে ৭ দিন ধরে আটকে রাখা হয়। সেসময় তাকে বর্বরোচিতভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে গুরুতরভাবে আহত করা হয়।

সেনা জোনে ৭ দিন ধরে অমানুষিক নির্যাতনের পর গতকাল ৩ মে ২০২০ সোমবার বিকাল ৪:০০ ঘটিকার সময় কাপ্তাই সেনাজোন থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় সুইচাপ্রু মারমাকে তার স্ত্রী ও ছোট ভাইকে ডেকে এনে শর্তসাপেক্ষে তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

কাউকে গ্রেফতার করা হলে আইন অনুযায়ী তাকে ২৪ ঘন্টায় আদালতে হাজির করতে হয়। কিন্তু এই আইন লঙ্ঘন করে সুইচাপ্রু মারমাকে সেনা জোনে ৭ দিন ধরে আটকে রাখা হয় এবং অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে গুরুতর আহত করা হয়।

সম্প্রতি এভাবে কয়েক দিন ধরে অবৈধভাবে সেনা ক্যাম্পে আটকে রাখা ও নির্যাতন করার ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

যেমন, গত ৫ এপ্রিল সুবলং সেনাক্যাম্পের সুবেদার ফারুক ও সুবেদার আলমগীরের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য কর্তৃক শান্তি জীবন চাকমা ওরফে অজিত (৪৫) নামের এক নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করা হয়। এরপর আদালতের অনুমতি ছাড়া বা আদালতে হাজির না করে ৪ দিন ধরে সুবলং ক্যাম্পে সেনা হেফাজতে রাখা হয় এবং ৮ এপ্রিল বরকল থানায় সোপর্দ করা হয়।

অপরদিকে ১৩ এপ্রিল জুরাছড়ি সেনাক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্যরা রিয়াজ চাকমা (১৮) নামে একজন যুবককে আটক করার পর ৭ দিন ধরে জুরাছড়িস্থ বনযোগীছড়া জোনে আটকে রাখা হয় এবং ২০ এপ্রিল কোতোয়ালী থানায় সোপর্দ করা হয়।

দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে গ্রেফতার, দিনের পর দিন ধরে ক্যাম্পে আটক, অমানুষিক নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় জড়িত করে জেলে প্রেরণ, ঘরবাড়ি তল্লাসী ইত্যাদি মানবতা বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একদিকে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করে চলেছে, অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বহিরাগত মুসলমান পরিবার অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে জুম্মদের উপর একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা ও ভূমি বেদখলে মদদ দিয়ে চলেছে।