রুমায় সেনাবাহিনী কর্তৃক কেএনএফের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধে নিরস্ত্র নাগরিকদের ব্যবহার

0
403

হিল ভয়েস, ১৮ মে ২০২৩, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার অন্তর্গত রুমার ম্রো, মারমা, ত্রিপুরা, খুমি ও বম সম্প্রদায়ের নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে সেনাবাহিনী জোরপূর্বক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিয়ে গেছে।

সেনাবাহিনী মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে রুমা থানা পাড়া থেকে ৪ জনকে, মারমা হাতিমাথা পাড়া থেকে ৩ জনকে, মিনজিরি পাড়া থেকে ৬ জনকে, পলি পাড়া থেকে ৫ জনকে, ছাইপুক পাড়া থেকে ৫ জনকে, ময়ুর পাড়া থেকে ৮ জনকে, বাশিরাম পাড়া থেকে ২২ জনকে, পাসিং পাড়া ১৭ জনকে, এমটিএস ম্রো পাড়া থেকে ১৬ জনকে, বিভিন্ন বম গ্রাম থেকে ২৫ জনকে এবং খুমি পাড়া থেকে ৩ জনকে জোরপূর্বক বন্দুকযুদ্ধে নিয়ে গেছে।

এছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম থেকে আরও অনেক নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক সামরিক অভিযানের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৬ মে রাঙামাটির অন্তর্গত বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়নের জারুলছড়ি গ্রাম ও বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের থিং দাউল তে গ্রামের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

একইভাবে ২নং রুমা ইউনিয়নের মং ইউ পাড়ার প্রায় ১০ জন মারমা এবং রুমার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের সোবসাং বাসিরাম পাড়ার ২২ জন ত্রিপুরা নাগরিককেও একই দিনে যুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে আব্রাহাম ত্রিপুরা ১৭ মে মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন।

বন্দুকযুদ্ধে নিয়ে যাওয়া বেসামরিক নাগরিকরা তখন থেকে তাদের পরিবারের সদস্যদের নাগালের বাইরে ছিল। তাদের কী হয়েছে পরিবারের সদস্যরা জানেন না।

তদুপরি, ১৭ মে ২০২৩ তারিখে, ২নং রুমা ইউনিয়নের ছাইপো গ্রামের ১০ জন মারমা বেসামরিক নাগরিক এবং রুমা বাজারের লুংচিরি গ্রামের আরও ১০ মারমা বেসামরিক নাগরিককে সেনাবাহিনী বন্দুকযুদ্ধের স্থানে নিয়ে যায়।

বন্দুকযুদ্ধে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি এড়াতে রুমা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ বেসামরিক নাগরিক এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।

এটাও পরিলক্ষিত হয় যে, এইসব এলাকায় শীঘ্রই খাদ্য সংকট দেখা দেবে যেখানে বেসামরিক নাগরিকরা তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আদিবাসী অধিকারকর্মী বলেন, বেসামরিক মানুষকে বন্দুকযুদ্ধে নিয়ে যাওয়া যে কোনো উপায়ে বন্ধ করা উচিত।

রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের পাসিং পাড়ার ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর নাম:

১. পাসিং ম্রো (কারবারি), পীং-প্রয়াত রিংক্লাং ম্রো

২. ক্রংসাই ম্রো, পীং-সাকতেউ ম্রো

৩. জোংগ্রাউ ম্রো, পীং-খামরেং ম্রো

৪. পায়াং ম্রো, পীং-পাতুই ম্রো

৫. পাকলাং ম্রো, পীং-পাতুই ম্রো

৬. রেংরুই ম্রো, পীং-পায়াং ম্রো

৭. রেং ইয়ং ম্রো, পীং-লেং ইয়াং ম্রো

৮. রিংলট ম্রো, পীং-নিয়া নগাক ম্রো

৯. মংসা ম্রো, পীং-রুইপিও ম্রো

১০. রেঙ্গেল ম্রো, পীং-ক্রাতপুং ম্রো

১১. পারিং ম্রো, পীং-পাতুই ম্রো

১২. রেং ইয়োই ম্রো, পীং-ডন রাউই ম্রো

১৩. রেং ওয়াই ম্রো, পীং-পায়াং ম্রো

১৪. পারাও ম্রো, পীং-সিং ইয়াং ম্রো

১৫. রেং তং ম্রো, পীং-সিং চং ম্রো

১৬. লাউরুম ম্রো, পীং-রুই পিউ ম্রো

১৭. কংকিং ম্রো, পীং-মংখাউই ম্রো

রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের এমটিএস গ্রামের ভুক্তভোগী জনগণ:

১৮. পারিং ম্রো, পীং-সিং চং ম্রো

১৯. জং রাও ম্রো, পীং-সিং চং ম্রো

২০. মেনতাং ম্রো, পীং-সিং চং ম্রো

২১. লং ডি ম্রো, পীং-মেন ইয়াং ম্রো

২২. মেন প্রে ম্রো, পীং-মেন ইয়াং ম্রো

২৩. মেন সিং ম্রো, পীং-লাইটং ম্রো

২৪. লাইটং ম্রো, পীং-মেন সিং ম্রো

২৫. মেন লে ম্রো, পীং-মেন ইয়াং ম্রো

২৬. মাং চং ম্রো, পীং-পারিং ম্রো

২৭. রেং পং ম্রো, পীং-পারিং ম্রো

২৮. ইয়াং সোওয়া ম্রো, পীং-আবর ম্রো

২৯. ইয়াং রিং ম্রো, পীং-মাংখাই ম্রো

৩০. বাইক চাওলং ম্রে, পীং-থুম হাওং ম্রো

৩১. মেনরন ম্রো, পীং-মেনরুয়া ম্রো

৩২. হাউই থং, পীং-খুমি নাং সাই খুমি, রুমা বাজার।

আরো পড়ুন

রুমায় কেএনএফ বিরোধী সেনা অভিযানে পোর্টারদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার, ১ জন নিহত