কাপ্তাইয়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক এক জুম্ম ইউপি সদস্য গ্রেফতার

0
1538

হিল ভয়েস, ২৯ এপ্রিল ২০২০, রাঙ্গামাটি:  সেনাবাহিনীর একটি দল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচিত এক জুম্ম সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল ২০২০ সকাল আনুমানিক ১০:০০ টার দিকে সেনাবাহিনীর স্থানীয় মিতিঙ্গ্যাছড়ি সেনাক্যাম্পের একদল সেনাসদস্য রাইখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য সুইচা প্রু মারমা (৪৫), পীং-মৃত ক্যজউ মারমা, গ্রাম-পানছড়ি-কে তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে গ্রেফতার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

ইউপি সদস্য সুইচাপ্রু মারমা এসময় বাড়ি থেকে নিজের ফলজ বাগানে যাচ্ছিল। সেনাসদস্যরা পরে গ্রেফতারকৃত সুইচাপ্রু মারমাকে কাপ্তাই সেনা জোনে নিয়ে যায়।

এরপর গত ২৮ এপ্রিল ২০২০ সন্ধ্যার দিকে সুইচাপ্রু মারমাকে আবার মিতিঙ্গ্যাছড়ি সেনাক্যাম্পে নিয়ে আসা হয় বলে জানা যায়।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী কর্তৃক ইউপি সদস্য সুইচাপ্রু মারমাকে গ্রেফতারের কারণ জানা যায়নি এবং তাকে পুলিশের নিকটও হস্তান্তর করা হয়নি।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল ২০২০ রবিবার আনুমানিক ১১.৩০ ঘটিকার সময় রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলাধীন ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের ৬নং জিম্রং খিয়াং পাড়া নামক স্থানে পাড়াবাসীদের ঘরবাড়ি তল্লাশি ও পাঁচজনকে মারধর করে গুরুতরভাবে আহত করেন কাপ্তাই সেনা জোনের ২৩ই বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক লে: কর্ণেল তৌহিদ উজ্জামান (বিএসসি, পিএসসি)।

এ সময় রাজস্থলী উপজেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির থানা শাখার কৃষি বিষয়ক সম্পাদক জেকসন খিয়াং’কে খোঁজ করা হয় এবং তার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।

কাপ্তাই উপজেলা ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মিটিঙ্গ্যাছড়ি পাড়া নামক স্থানে নতুন অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হয় বলে জানা গেছে। নতুন সেনা ক্যাম্পের সেকেন্ড লে: মাহাবুব নেতৃত্বে সেনারা নিম্নোক্ত নিরীহ ৫ জন খিয়াং গ্রামবাসীকে মারধর করা হয়।

সেনা সদস্যদের মারধরের ফলে আহত ৫ জন পাড়াবাসী হলেন- রাজু খিয়াং (২০), পীং চিংহ্লাপ্র খিয়াং; শৈইমং খিয়াং (২২), পীং অংথইপ্রু খিয়াং; সাগ্য খিয়াং (৩১) পীং উসাহ্লা খিয়াং; বিজয় খিয়াং (১৯), পীং গ্য খিয়াং; এবং গ্য খিয়াং (৪৩), পীং পাইগ্য খিয়াং প্রমুখ।

অন্যদিকে গত ২১ এপ্রিল ২০২০ তারিখ আর্মিরা সংস্কারপন্থী সদস্য মালেক বোমকে জোনে নেয়ার পর সেদিন রাত ৮টার দিকে তিনি বাড়িতে ফিরে আছেন। বিভিন্ন এলাকায় সেনা তল্লাসি অভিযান চালানোর জন্য পরিকল্পনা নিতে তাকে ক্যাম্পে নেয়া হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

গত ২৮ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার জুরাছড়ি উপজেলার বন্দুকছড়ি সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল তানভীর হাসান জুরাছড়ি উপজেলাধীন ১নং জুরাছড়ি ইউনিয়নের সকল হেডম্যান কার্বারী চেয়ারম্যান মেম্বারকে ডেকে আয়োজিত এক মিটিঙে মুরুব্বিদেরকে উদ্দেশ্য বলেছেন যে, জুরাছড়ি এলাকায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাহলে সকলকে ব্রাশ ফায়ার করবেন। তিনি কাউকে ছাড়দেবেন না বলে সকলকে হুমকি প্রদান করেন।

এর আগে ১৩ এপ্রিল ২০২০ সোমবার সকাল ১০:০০ ঘটিকায় জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া সেনা ক্যাম্পে জুরাছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের মুরুব্বীদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় জনসংহতি সমিতির (তার ভাষায় সন্তু লারমার জেএসএসকে) প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে বনযোগীছড়া জোন কমান্ডার বলেন, জনসংহতি সমিতিকে শায়েস্তা করতে প্রয়োজনে আগামীতে জুরাছড়ি এলাকায় সংস্কারপন্থী জেএসএস ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ’কে নিয়ে আসতে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।