সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি ঐক্য পরিষদের

0
997

হিল ভয়েস, ২৭ এপ্রিল ২০২০, ঢাকা: সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ।

২৭ এপ্রিল ২০২০ সোমবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টার ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট দিপংকর ঘোষের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতিতে এ দাবি জানায় ঐক্য পরিষদ।

উক্ত বিবৃতিতে বলা হয় যে, করোনাভাইরাসের দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও বিগত একমাস ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত সাম্প্রদায়িক হামলা, জমি জবরদখলের অপচেষ্টা, জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের হুমকি, নারি ধর্ষণ ও মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে দেশের নানান স্থানে সংঘটিত ১৫টি ঘটনার উল্লেখ করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রাণা দাশ গুপ্ত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মানবাধিকার অধিকার কর্মী ক্ষোভ জানিয়ে হিল ভয়েসের প্রতিনিধিকে বলেন, ঐক্য পরিষদের বিবৃতিতে ১৫টি ঘটনা উল্লেখ থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী জুম্ম জনগোষ্ঠীর উপর সেনা নিপীড়ন ও জায়গা-জমি জবরদখল এবং সমতল অঞ্চলের আদিবাসীর উপর সংঘটিত একটি ঘটনাও উল্লেখ করা হয়নি, যা ঐক্য পরিষদের ঐক্য-সংহতির পরিপন্থী।

ঐক্য পরিষদের সংবাদ বিবৃতিতে নিন্মোক্ত ১৫টি ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে:

১। সাতক্ষীরা জেলা: সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ী সুবোল চক্রবর্তীকে কলেমা পড়ে মুসলিম না হলে ভারতে চলে যেতে হুমকি

সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত তালা উপজেলার নগরঘাটায় কালিপদ চক্রবর্তীর ছেলে মুদি ব্যবসায়ী সুবোল চক্রবর্তীকে গত ১৩/০৪/২০২০ তারিখ সোমবার প্রকাশ্যে সবার সামনে মারধর ও কলেমা না পড়লে ভারতে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে দক্ষিণ নগরঘাটা গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ছেলে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোস্তাক। সে হুমকি দিয়ে বলে, শালা মালায়ন হয় কলেমা পড় তা না হলে ভারতে চলে যা।তার ভয়ে ভিত হয়ে পড়েছে নগরঘাটার শত শত সংখ্যালঘু পরিবার। ভুক্তভোগী সুবোল চক্রবর্তী নগরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপু-কে জানালে সে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় পাটকেলঘাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

২। বাগেরহাট জেলা: বাগেরহাট সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্ত:সত্তা গৃহবধূ ও শিশুসহ পাঁচ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত

বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে গত ২৪/০৪/২০২০ তারিখ সকাল বেলায় বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত চিলা ইউনিয়নের গোলেরডাঙ্গা গ্রামের অনিল বালার পরিবারের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় পার্শ্ববর্তী বাঁশতলা গ্রামের প্রভাবশালী সন্ত্রাসী-ভূমিদস্যুআ: ছালামের নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যু। এতে অন্ত:সত্তা গৃহবধূ সুমিতা বালা, অনিল বালা, মায়া বালা, সরলা গোলদার, শিশু পুটুগোলদার ও শংকর গোলদারসহ ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছে। পরে তাদের এলাকাবাসী উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেছে।অন্ত:সত্তা গৃহবধূ সুমিতা বালা ও অনিল বালার অবস্থা গুরুতর বলে জানায় কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগদায়ের করা হয়েছে।

৩। জামালপুর জেলা: জামালপুর ঢালুয়াবারি গ্রামের বহু পুরানো শিব মন্দির ভেঙ্গে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে দখল করে নিয়েছে পুরোদেবোত্তর সম্পত্তি

জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার অন্তর্গত ঢালুয়াবারি গ্রামে গত ২৩/০৪/২০২০ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার সারাদেশে লক ডাউনের সুযোগ নিয়ে মৃত সেকান্দর খাঁ-র পুত্র নুরুল ইসলাম খাঁ-র নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত একটি বহু পুরানো শিব মন্দির সাবল দিয়ে ভেঙ্গে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে দখল করে নিয়েছে পুরো দেবোত্তর সম্পত্তি।

৪। জয়পুরহাট জেলা: মন্দিরে জুয়া খেলতে বাধা দেওয়ায় বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও মারধর

জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর পৌর এলাকার পারঘাটী মন্দিরে জুয়া খেলতে বাধা দেওয়ায় বেশ কয়েকটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও লোকজনদের মারধর করেছে সন্ত্রাসীরা। গত ২০/০৪/২০২০ তারিখ সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসীযুবক ওই মন্দিরে জুয়া খেলছিল। এসময় মন্দিরের পাশে থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্দিরে জুয়া খেলা বন্ধ করতে বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও তাদের মারধর করেছে। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার কথা বলেছে। এ ঘটনায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

৫। রাজশাহী জেলা: উত্যক্তে অতিষ্ট হয়ে শেষমেষ স্কুলছাত্রী অষ্টমীর আত্মহত্যা

রাজশাহীর মোহনপুর থানার অন্তর্গত ঘাসিগ্রামের নিমাই সরকারের কন্যা, নবম শ্রেণীর ছাত্রী কুমারী অষ্টমী সরকার ঘাসিগ্রাম স্কুলের সহকারী শিক্ষক শরিরত আলীর সহায়তায় পাশের গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে গোলাম মোস্তফা ও তার সহযোগীদের উত্যক্তে অতিষ্ট হয়ে গত ১৬/০৪/২০২০ তারিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মতহ্যা করেছে। ইতোপূর্বেও গত বছর ১১ নভেম্বর প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় গোলাম মোস্তফা ও তার সহযোগীরা অষ্টমীকে অপহরণ করেছিল। খবর পেয়ে ওইদিনই পুলিশ অষ্টমীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আবারও তাকে উত্যক্ত করতে শুরু করে। শেষমেষ আর সহ্যকরতে পারেনি অষ্টমী, বেছে নেয় আত্মতহ্যার পথ।

৬। চট্টগ্রাম জেলা: সাতকানিয়ায় লকডাউনের মধ্যেই ৩০টি হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা: দেশত্যাগের হুমকি

চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের শুক্লাদাস পাড়ায় গত ২১/০৪/২০২০ তারিখ স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী মো: এটিএম, মো: রাশেদ, মো: আব্দুল্লাহ্, জিয়া উদ্দিন, হাবিবুল্লাহ্ ও মুসা উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার নির্দেশে দেশের ক্রান্তিলগ্নে লকডাউন উপেক্ষা করে ৩০টি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে এবং তাদেরকে দেশত্যাগের হুমকি দিয়েছে। এতে নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ভীতি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

৭। কুড়িগ্রাম জেলা: ধর্ম অবমাননার গুজব রটিয়ে কুড়িগ্রামে অনার্সের ছাত্র পরিতোষ-এর উপর হামলা পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার

কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নের সাতানী হাইল্লা গ্রামের পূর্ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে, অনার্স পড়ুয়া, পরিতোষ কুমার সরকারকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য ও ধর্ম অবমাননার গুজব রটিয়ে তার ওপর হামলা ও পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

৮। চাঁদপুর জেলা: করোনা নামক মহামারীর মধ্যে কচুয়ায় হিন্দু নির্যাতন

গত ১৭/০৪/২০২০ তারিখ চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের শীতল সরকার ও তার ভাই হীরাপদ সরকারকে উপর্যুপরি মারধর করে গুরুতর আহত করেছে প্রতিবেশী মুন্সী বাড়ীর সন্ত্রাসী ছেলে রাকিব হোসেন। তাদের ডাক চিৎকারে বাড়ী থেকে অন্যান্য লোকজন এসে দ্রুত তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসী রাকিবের নেতৃত্বে রিপন, বক্কর, হাসান, মকবুল মাহবুব, মাসুমসহ ১০-১২ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এলাকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনচালিয়ে আসছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোপ ও উত্তেজান বিরাজ করছে।

৯। যশোর জেলা: বেনাপোলে সংখ্যালঘু নারীর শ্লীলতাহানী; আটক আ’লীগ নেতা

যশোর জেলার বেনাপোল পৌরসভার ছোটআঁচড়া গ্রামের রবীন সরকারের স্ত্রী রিতা সরকারকে গত ১৬/০৪/২০২০ তারিখ রাতে শ্লীলতাহানী করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাবু সরদার, পিতা- মৃত আকবর আলী। রিতা সরকার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে রাত ১২টার সময় ঘরের বাহিরে বাথরুমে গেলে পূর্বে থেকে ওঁতপেতে থাকা বাবু সরদার মদ্যপ অবস্থায় তাকে জড়িয়ে ধরে টানাটানি করে। এতে রিতা সরকার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম প্রাপ্ত হয়। বাবু সরদার খারাপ কাজের উদ্দেশ্যে তাকে টানাটানি করে। বাবু সরদারকে পরেপুলিশ আটক করলে স্থানীয় ক্ষমতাধর নেতারা তার জামিনের ব্যবস্থা করে। বর্তমানে আসামী গ্রামে ফিরে এসে ভুক্তভোগীদের হুমকিরমধ্যে রেখেছে। এখন তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে জানা যায়।

১০। সাতক্ষীরা জেলা: সাতক্ষীরায় সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর বর্বরোচিত হামলা, মৎস্যঘের দখল

সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ৬নং রমজাননগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ভেটখালী গ্রামের বরেন্দ্র কৃষ্ণ মন্ডল ও তার স্ত্রী নীলিমা রানী মন্ডলকে গত ২৪/০৪/২০২০ তারিখ সকাল আনুমানিক ৮টার সময় একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো: সুন্নত আলী গাজী ও তার ক্যাডার বাহিনী মো: ইসমাইল হোসেন, মো: রাজ গাজী, মো: আজিম গাজী ব্যাপকভাবে মারধর করে বরেন্দ্র কৃষ্ণ মন্ডলের বাড়ির পুকুর দখল করে নিয়েছে। এতে তারা বাধা দিলে তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় ও বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে। বর্তমানে বরেন্দ্রকৃষ্ণ মন্ডল শ্যামনগর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

১১। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা: নাসিরনগরে সুধাংশু দাসের জমি ও বাড়ী জবরদখল

গত ১৩/০৪/২০২০ তারিখ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার নাসিরপুর গ্রামের হিন্দু পল্লীতে হামলা চালিয়ে সুধাংশু দাসের জমি ও বাড়ী জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসী ইছা মিয়া গংরা। এতে স্থানীয় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ওউত্তেজনা বিরাজ করছে।

১২। ফরিদপুর জেলা: ফরিদপুরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার সুরেশ পালের পরিবার

গত ১২/০৪/২০২০ তারিখ ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মল্লিকপুরের পালপাড়ায় সুরেশ পালের বাড়ীতে এলাকার প্রভাবশালী সন্ত্রাসী সলেমান বেপারীর নেতৃত্বে মো: মিজান বেপারী, মো: রানা বেপারী, মো: হৃদয় বেপারী ও মো: সুজায়েতসহ একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এতে সুরেশ পাল, তার স্ত্রী সবিতা পাল, ছেলে সমীর পাল, তার ভাই জগদীশ পাল,তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সুস্মিতা পাল মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। এমতাবস্থায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবার নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে।

১৩। কক্সবাজার জেলা: কক্সবাজারে শিব মন্দিরের জমিসহ সংখ্যালঘু পরিবারের বসতবাড়ী দখলের চেষ্টা ও হামলা

কক্সবাজার পৌরসভাস্থ বিডিআর ক্যাম্প অধীন ৬নং ওয়ার্ডে দক্ষিণ সাত্বিকা পল্লী হিন্দু পাড়া সাহাগলি রোডে অবস্থিত গোপাল দাশের বাড়ীতে সার্বজনীন শিব মন্দিরের জমি ও বসতবাড়ী দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালায় প্রতিবেশী প্রফেসার হোসেন ও তার ছোট ভাই লিয়াকতসহ তাদের দলবল। এই সময় তারা মন্দিরের সামনে গিয়ে দখল সীমানা খুঁটি দিয়ে দখল দাবি করে, শুধু তাই নয় সংখ্যালঘু পরিবারটিকে হুমকি প্রদান করে। বর্তমানে সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারটি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

১৪। পটুয়াখালী জেলা: লকডাউনের সুযোগে কলাপাড়ায় সংখ্যালঘুর জমি দখল

পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার অন্তর্গত সদর ইউনিয়নের পুরান মহিপুর গ্রামের সংখ্যালঘু নারায়ণ সরকারের ৬০ বছরের ভোগদখলীয় ৩০ শতাংশ জমি গত ০৪/০৪/২০২০ তারিখ একই গ্রামের ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী রায়হান মীর, ফারুক মৃধা, কালাম চৌকিদারজাহাঙ্গীর ও খলিলের নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যু অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল করে সেখানে ঘর নির্মাণ করেছে। বর্তমানে ভূমিদস্যু চক্রটি ওই সংখ্যালঘু পরিবারকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে।

১৫। ঢাকা জেলা: ফতুল্লায় ত্রাণবঞ্চিত ২০০ ঋষি পরিবার

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কঘেষা ফতুল্লা ডিআইটি সংলগ্ন নলখালি খালের উত্তর পাশে বসবাস করা প্রায় দুই শতাধিক হিন্দু পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠা ঋষিপাড়া। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের কবলে পড়ে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে ঋষিবাড়ী বলে পরিচিত হিন্দু সম্প্রদায়ের উক্ত দুই শতাধিক পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারী কোন মহলের লোকজনও তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পরিবারগুলোর। স্থানীয় চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনসহ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বাড়ীতে ত্রাণের জন্যে গেলেও তারা আশ্বাসের বাণী শুনিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন খালি হাতে।