সাজেকে আরো ২ শিশু হামে আক্রান্ত

হিল ভয়েস, ২৫ মে ২০২০, রাঙ্গামাটি:  রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে আরো দুইজন শিশুর হামে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গত ২১ মে ২০২০ সাজেক ইউনিয়নের ১৬৫ নং লংকর মৌজার রতনপুর গ্রামে এই দুই শিশু হামে আক্রান্ত হয়। শিশুরা হলো নিরুপম চাকমার ৮ মাসের শিশু পূর্ণধন চাকমা এবং তরুণ চাকমার ৭ বছরের সন্তান বাদিক্কো চাকমা।

উক্ত গ্রামে ১৭ পরিবার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। গ্রামবাসীরা গ্রামের অন্যান্য শিশুদেরও হামে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে।

পিজোর চাকমা নামে একজন ব্যক্তি তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন যে, সেখানে নেই ডাক্তার, নেই হসপিটাল, নেই ওষুধ, নেই খাদ্য, নেই টাকা-পয়সা, নেই যোগাযোগের ব্যবস্থা। এখানে কারোরই নজরদারি নেই। প্রসাশন কিংবা জনপ্রতিনিধি কারোর ভ্রুক্ষেপ নেই।

তিনি আরো বলেন, সাজেকে হামের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুদিন হেলিকপ্টার যোগে ৩/৪ জন শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নেয়া হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত হওয়ায় দেশবাসী জানতে পেরেছে অমুক-সমুক দুর্গম প্রান্তিক এলাকায় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

কিন্তু ৩/৪ জন চিকিৎসার মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা শেষ। চিকিৎসার অভাবে সাজেকে বর্তমান সময়েও হামে শিশু মৃত্যু চলছে বলে পিজোর চাকমা অভিযোগ করেন।

কাপেং ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গত ফেব্রুয়ারির শেষান্ত থেকে হামে আক্রান্ত হয়ে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ির সাজেক, বান্দরবান জেলার লামা, রুমা, থানচি ও বান্দরবান সদর উপজেলা এবং খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা ও পানছড়ি উপজেলায় প্রায় ৯০ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছলি।

এ পর্যন্ত হামে আক্রান্ত নিহত হয়েছে ১০ জন শিশু। আর হাম আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ৭ উপজেলার ৩৭টি গ্রামের প্রায় ৬৫৯ জন, যাদের মধ্যে ৪৫৬ জন  শিশু।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব রোগকে কখনো ‘অজ্ঞাত রোগ’, আবার কখনো ‘আক্রান্ত পাহাড়িদের মধ্যে কুসংস্কার বিদ্যমান ও চিকিৎসা নিতে অনীহাবোধ’ ইত্যাদি বলে জুম্ম অধ্যুষিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা না পৌঁছার প্রকৃত চিত্রকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উল্লেখ করেছেন।

More From Author