শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে পাহাড়ী শ্রমিক ফোরামের মিছিল ও সমাবেশ

0
119

হিল ভয়েস, ১ মে ২০২৪, চট্টগ্রাম: আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (১ মে) উপলক্ষে চট্টগ্রামে পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের উদ্যেগে মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করা সহ ৫ দফা দাবি জানানো হয়।

দিনটি উপলক্ষে ‘শ্রমিক শোষণ বন্ধ করুন এবং শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করুন, অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন করুন’ শ্লোগান নিয়ে সকাল ৯:৩০ টায় সুলতান আহমদ চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে থেকে মিছিল বের করে ইপিজেড চত্বর ঘুরে এসে ব্যারিস্টার কলেজের মূল সড়কে এসে সমাপ্ত হয় এবং এরপর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দিসান তঞ্চঙ্গ্যা। এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাইল্যা মাথা ইউনিট কমিটির সভাপতি রাসেল চাকমা, আদিবাসী মহিলা ফোরামের সভাপতি চিজিপুদি চাকমা, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অনিল বিকাশ চাকমা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন চাকমা।

চিজিপুদি চাকমা বলেন, আদিবাসী নারী শ্রমিকরা সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, কর্মস্থলে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয়।

রাসেল চাকমা বলেন, মালিক পক্ষ থেকে শ্রমিক শোষণ বন্ধ করতে হবে, শ্রমিকের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

অনিল বিকাশ চাকমা বলেন, ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে আট ঘন্টা শ্রমের দাবিতে সূতা কলের শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে প্রশাসন হামলা করে, আমেরিকার সরকার শ্রমিকদের ভয় পেয়েছিল। পাহাড়ি শ্রমিক কল্যাণ ফোরাম জন্মলগ্ন থেকে এই মহান মে দিবস পালন করে আসছে। বাংলাদেশে নির্বাচন আসলে শ্রমিকের বেতন বাড়িয়ে দেয়া হয়, কিন্তু যেই হারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে এই ১২,০০০ টাকায় চলা খুবই কষ্টকর হয়। একমাস চলতে নূন্যতম প্রয়োজন ২০,০০০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৬ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও এখনও পর্যন্ত মৌলিকধারা গুলো বাস্তবায়িত হয়নি। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের মত স্থানে গিয়ে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য যারা আন্দোলন সংগ্রাম করছে তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ধরপাকড় করা হচ্ছে, এটা অচিরেই বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশের সভাপতি দিসান তঞ্চঙ্গ্যা তার সমাপনী বক্তব্যে শ্রমিক ফোরামের পক্ষ থেকে সরকারের উদ্দেশ্যে ৫ টি দাবি উপস্থাপন করেন। দাবি নামাসমূহ নিম্নরূপ:

১. শ্রমিক শোষণ বন্ধ করে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা।
২. শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১৮,০০০ (আঠারো হাজার) টাকা প্রদান করা।
৩. গার্মেন্ট সেক্টরে কর্মরত আদিবাসী শ্রমিকদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও চাংক্রান উপলক্ষে নূন্যতম ৫ (পাঁচ) দিন ছুটি প্রদান করা।
৪. ইপিজেড এলাকায় বসবাসরত সকল আদিবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৫. অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা।