জুরাছড়িতে আটককৃত রিয়াজ চাকমা ৫ দিন ধরে সেনাবাহিনীর হেফাজতে

0
1768

হিল ভয়েস, ১৭ এপ্রিল ২০২০, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন জুরাছড়ি উপজেলার জুরাছড়ি সেনাক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্যদের কর্তৃক আটককৃত রিয়াজ চাকমা (১৮) নামে একজন যুবককে জুরাছড়ি সদরের নিকটবর্তী বনযোগীছড়া জোনে অবৈধভাবে সেনা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রিয়াজ চাকমা জুরাছড়ি উপজেলার ২নং বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ধামাইপাড়া এলাকার ছোট পানছড়ি গ্রামের সত্য রঞ্জন চাকমার ছেলে বলে জানা যায়।

জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল ২০২০ সন্ধ্যার দিকে রিয়াজ চাকমা তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী জনৈক বীরসেন চাকমার (৩২) বাড়িতে বেড়াতে গেলে সম্প্রতি অজ্ঞাতপরিচয় অস্ত্রধারী কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হেমন্ত চাকমার পিতা লোকবিন্দু চাকমা (৫৯) সেখানে উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে লোকবিন্দু চাকমা রাত ১০:৩০ টার দিকে রিয়াজ চাকমাকে নিয়ে জুরাছড়ি সদর সেনাক্যাম্পে যান। সেখানেই সেনাবাহিনী রিয়াজ চাকমাকে আটক করে রাখে।

আইন অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান থাকলেও রিয়াজ চাকমাকে এখনো আদালত বা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়নি। যেহেতু সেনাবাহিনী রিয়াজ চাকমার পরিবারকে কোন কিছু জানায়নি এবং পুলিশের নিকটও হস্তান্তর করেনি, তাই তাকে আটক রাখার কারণও জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল ২০২০ রাত ১১:০০ টার দিকে বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার হেমন্ত চাকমা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। জানা গেছে, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে হেমন্ত চাকমা, চিত্তি স চাকমা ও রিয়াজ চাকমা একসঙ্গে মদ্যপানে রত ছিলেন।

রিয়াজ চাকমাকে হেমন্ত চাকমা হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী হিসেবে থাকতে বাধ্য করার জন্য সেনাবাহিনী রিয়াজ চাকমাকে আটক করে রেখেছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে।

আরেক সূত্রে জানা গেছে, হেমন্ত চাকমার পিতা আটকের দিন রিয়াজ চাকমাকে প্রথমে জুরাছড়ি থানায় নিয়ে যান। সেখানে জুরাছড়ি থানার পুলিশ হেমন্ত চাকমাকে হত্যার সময় কাউকে দেখেছে কিনা জানতে চাইলে, রিয়াজ চাকমা কয়েকজন সেনা ও সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সদস্য দেখতে পান বলে জানান। ব্যাপারটি জানার পরপরই সেনাবাহিনী রিয়াজকে আটক করেছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল ২০২০ সেনাবাহিনী হেমন্ত চাকমা হত্যার জেরে জুরাছড়ি উপজেলাধীন দুমদুম্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শান্তিরাজ চাকমা ও আনন্দ চাকমা নামে আরেক গ্রামবাসীকেও আটক করে। তাদের মধ্যে শান্তিরাজ চাকমাকে পরে জুরাছড়ির বনযোগীছড়া সেনা জোন থেকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা যায়।