হিল ভয়েস, ১৭ মে ২০২৩, রাঙামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২৭তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে রাঙামাটি জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত দেয়াল লিখন সেনাবাহিনী কর্তৃক মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী, সেনাবাহিনী কর্তৃক এসব দেয়াল লিখন মুছে দেওয়ার কাজকে অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক এবং পিসিপির মত বহুল পরিচিতি, জনপ্রিয় ও স্বীকৃত একটি ছাত্র সংগঠনের বাক স্বাধীনতা ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের অধিকারের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।
এব্যাপারে পিসিপি’র সূত্র জানায়, আসছে ২০ মে ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটির কুমার সুমিত রয় জিমনেসিয়াম মাঠে এক ছাত্র-জনসমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। ছাত্র জনসমাবেশ ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচি উপলক্ষে প্রচার ও জনসংযোগের অংশ হিসেবে রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় সড়ক সংলগ্ন দেয়ালে সংগঠনের বিভিন্ন শ্লোগান লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ লিখিত শ্লোগানগুলো হলো- ‘গৌরবময় সংগ্রামের ৩৪ বছর’, ‘জুম্ম নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত কর’, ‘প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসকারী তথাকথিত উন্নয়ন বন্ধ কর, করতে হবে’, ‘চুক্তি মোতাবেক স্থানীয়দের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে হবে’ ইত্যাদি।
কিন্তু আজ (১৭ মে) ভোররাত আনুমানিক ১২:৩০ টা হতে রাঙামাটির ক্যান্টনমেন্ট থেকে ৩টি সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের সাথে কিছু সন্ত্রাসী সদস্য নিয়ে তারা প্রথমে কালিন্দীপুর এলাকায় গিয়ে এবং এরপর শহরের রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের আশেপাশের দেয়ালে লেখা শ্লোগানগুলো মুছে দেয়। এসময় সেনা সদস্যরা পথচারী ও পাশর্^বতী জেগে থাকা কোনো কোনো লোককে হয় সরে যেতে বা বাড়িতে ঢুকে পড়তে নির্দেষ দেয়। যারা জানালা দিয়ে ঘটনাটা দেখছিল তাদেরও জানালা বন্ধ করতে বলে সেনা সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পিসিপি একটি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন। তারা বাংলাদেশের অন্যান্য সংগঠনের মত সরকারের নিকট তাদের দাবি দাওয়া জানিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়ালে লেখা শ্লোগানগুলোতে কোনো ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কিংবা সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য ছিল না। শ্লোগানগুলো ছিল চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে। চুক্তি তো কোন রাষ্ট্র, দেশ কিংবা সরকার বিরোধী না। তাহলে কেন সেনাবাহিনী শ্লোগানগুলো মুছে দিয়েছে তা বোধগম্য হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে যা কিছু গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে তা রুদ্ধ হয়ে যাবে এবং পাহাড়ে অশনিসংকেত বয়ে আনবে।