হিল ভয়েস, ১৭ জুলাই ২০২০, বান্দরবান: বান্দরবানে সবজি বিক্রি করতে বাধা দেয়ায় পুলিশ ও জুম্ম নারী ক্ষদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক বাক-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৭ জুলাই ২০২০ শুক্রবার সকালে বান্দরবান মারমা বাজারে সবজি বিক্রি করতে বাধা প্রদান করলে জুম্ম নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে।
জুম্ম নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, মারমা বাজারে প্রতিদিনের ন্যায় তারা বিভিন্ন সবজি বিক্রির জন্য শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরসা নিয়ে বসেন। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পুলিশ এসে তাদের সবজিগুলো সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেন। এসময় চাষী ও ব্যবসায়ীরা রাজি না’হওয়ায় সবজিগুলো পুলিশ ছুড়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা সহ জব্দ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়।
এতে নারী সবজি ব্যবসায়ী ও পুলিশ প্রচন্ড বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ কিছু ব্যবসায়ীর সবজি জব্দ করে পুলিশের গাড়িতে তুলেও নেন। আবার সবজিগুলো ব্যবসায়ীদের ফিরিয়ে দিলেও সবজিগুলো পুলিশ বিক্রি করতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ জুম্ম নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
পুলিশ জানিয়েছেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও করোনা সংক্রমনের কারণে তারা বাজারে সবজি বিক্রিতে বাধা দিয়েছেন।
তবে জুম্ম নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিক্রেতা মিনি প্রু মারমা পুলিশের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন অসৎ ও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ এসব কর্মকান্ড করছে। তিনি বলেন, সবজি বিক্রির উপর সরকারিভাবে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।
তিনি আরো জানান, জেলা প্রশাসনের দেওয়ায় ২১দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ গত ৪/৫দিন আগে শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে বান্দরবান বাজারের দোকানপাটসহ সকল কিছু খোলা রয়েছে। এবিষয়টি ব্যবসায়ীরা পুলিশকে প্রশ্ন করলেও তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
জুম্ম নারী সবজি বিক্রেতা মিনু চিং মারমা জানান, সকালে পুলিশ এসে তাদের সবজি নিয়ে চলে যেতে বলেন। এতে তারা রাজি না হলে তাদের অনেকের সবজি লাথি মেরে ফেলে দেন। পরে সাংবাদিকেরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে নারী সবজি বিক্রেতাদের সাথে পুলিশ বাক-বিতন্ডা শুরু করে।
অপর নারী সবজি বিক্রেতা নুয়ে মারমা বলেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে তারা এতদিন শহরের রাজার মাঠে ছোট ছোট ঝুপড়ি তুলে সবজি বিক্রি করে আসছেন। গতকাল পুলিশ ঝুপড়িগুলো ভেঙ্গে দিয়েছে। তাই তারা বাধ্য হয়ে মারমা বাজারে সড়কের উপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবজি বিক্রি করছেন। তিনি আরো জানান, তারা মারমা বাজার সংলগ্ন সাঙ্গু নদীর পাড়ে ও নদীর চরে সবজি বিক্রি করার জন্য গেলে সেখানেও পুলিশ বাধা প্রদান করেন।
বাজার ফান্ড বিষয়টি পার্বত্য জেলা পরিষদের ন্যস্ত একটি বিভাগ। বাজার ফান্ড প্রশাসক জানান, বান্দরবান প্রধান বাজার ও মারমা বাজার দুইটিতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বিক্রির করার জন্য বাজার ফান্ডের নির্ধারিত স্থান। সেখানে বিক্রি করতে না পারে তাহলে কোথায় বিক্রি করবে তা পুলিশের প্রতি প্রশ্ন বাজার ফান্ডের।
এব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হলেও পুলিশের কাছে লিখিতভাবে কোন নির্দেশ আসেনি। তাই পুলিশ ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দ্যেশে বলেন, আপনারা ৪ মাস অপেক্ষা করেছেন, আর ৫/৭দিন কষ্ট করেন। সরকারীভাবে নির্দেশ আসার পর আবারও আপনারা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
             
             
                             
                             
                             
                                                     
                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        