চবির ৫ শিক্ষার্থী অপহরণ ও কাউখালীর মারমা তরুণী ধর্ষণের প্রতিবাদে বান্দরবানে বিক্ষোভ

হিল ভয়েস, ২১ এপ্রিল ২০২৫, বান্দরবান: খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের কর্তৃক অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫ শিক্ষার্থী ও তাদের গাড়ির চালককে অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি এবং রাঙ্গামাটির কাউখালীতে সেটেলার বাঙালি কর্তৃক এক মারমা তরুণী ধর্ষণ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বান্দরবানেও বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল ২০ এপ্রিল, বিকাল ৩টায়, বান্দরবান জেলা সদরের ট্রাফিক মোড় এলাকায় ‘বান্দরবান আদিবাসী ছাত্র সমাজ’ এর উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাধারণ শিক্ষার্থী বিটন তঞ্চঙ্গ্যা, চবি শিক্ষার্থী ম্যালকম ম্রো, শিক্ষার্থী উলিচিং মারমা, তনয়া ম্রো, উসিংম্যা মারমা, অংশৈসিং মারমা, ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জন ত্রিপুরা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৬ এপ্রিল খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হন। অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, অলড্রিন ত্রিপুরা, দিব্যি চাকমা, রিশন চাকমা ও লংঙি ম্রো। এই ঘটনায় বিভিন্ন মহল পাহাড়ের চুক্তিবিরোধী প্রসীতপন্থী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-কে দায়ী করছে। অপহরণের চার দিন পার হলেও এখনো পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। উদ্ধারে দৃশ্যমান কোনো কার্যকরী পদক্ষেপও পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

বক্তারা আরো বলেন, গত ১৫-১৬ এপ্রিল মধ্যরাতে রাঙ্গামাটির কাউখালীতে বড়ডলু গ্রামে মো. ফাহিম (২৫) নামে এক সেটেলার বাঙালি কর্তৃক এক মারমা নারীকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। ১৭ এপ্রিল ওই নারী কোনোমতে পালিয়ে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তকে এখনও প্রেফতার করতে পারেনি প্রশাসন।

সমাবেশে বক্তারা অপহৃত শিক্ষার্থীদের পরিবার ও সহপাঠীরা চরম উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন বলে উল্লেখ করেন এবং রাজনীতির নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অপহরণ ও দীর্ঘ সময় আটকে রাখার মতো ঘৃণ্য কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি তারা রাঙ্গামাটির ধর্ষণের ঘটনার অভিযুক্ত মো. ফাহিমকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক দাবি জানান।

সমাবেশ থেকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত পাঁচটি দাবি উত্থাপন করা হয়-

১. খাগড়াছড়িতে অপহৃত পাঁচ চবির শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে ও সুস্থ অবস্থায় নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান।
২. অপহৃতদের উদ্ধারে দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
৩. অপহরণের সাথে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা।
৪. ধর্ষক মো: ফাহিম ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
৫. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

More From Author