হিল ভয়েস, ১২ মার্চ ২০২৫, বান্দরবান: বান্দরবান জেলাধীন রোয়াংছড়ির খামতাং পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মো: জামাল হোসেন নামে বহিরাগত এক শ্রমিক কর্তৃক আদিবাসী খিয়াং সম্প্রদায়ের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৬) ধর্ষণের ঘটনার পর সেনাবাহিনী ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারকে সামাজিকভাবে সমঝোতা করতে এবং থানায় মামলা দায়ের না করতে চাপ সৃষ্টি করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ ২০২৫, সোমবার রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের খামতাং পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় উক্ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মো. জামাল হোসেন(৩২) রোয়াংছড়ি-রুমা সড়ক নির্মাণের কাজে নিয়জিত শ্রমিক বলে জানা গেছে। ধর্ষক মো: জামাল হোসেন, পীং-নজরুল ইসলাম এর বাড়ি বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালি জেলার দশমিনা উপজেলার গশালি ইউনিয়নের দক্ষিণ দাশ পাড়ায় বলে জানা গেছে।
এরপর গতকাল (১১ মার্চ) এলাকাবাসী ও অন্যান্য শ্রমিকরা মিলে ধর্ষক মো: জামালকে আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।
এদিকে উক্ত ঘটনার পরপরই স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের সেনাবাহিনী ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা না করে অর্থের বিনিময়ে সামাজিকভাবে সমঝোতা করার জন্য ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারকে চাপ দিচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত ঘটনার পর বান্দরবান সেনা জোনের ৫ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীন খামতাং পাড়া সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর সারোয়ার গ্রামের কার্বারি ও ভুক্তভোগী কিশোরীর অভিভাবকদের ক্যাম্পে ডেকে সামাজিক রীতিনীতি ও অর্থদন্ডের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনাটি নিষ্পত্তি করার এবং মামলা দায়ের না করতে পরামর্শ দেন।
এলাকার মুরুব্বিরা সেনাবাহিনীর মেজর সারোয়ারের পরামর্শ মোতাবেক ধর্ষক মো: জামাল হোসেনকে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড ধার্য করে মীমাংসার রায় দেন। উক্ত রায়ের কথা মেজর সারোয়ারকে অবহিত করা হলে, মেজর সারোয়ার অর্থদন্ড শিথিল করতে বলেন। মেজর সারোয়ারের কথামত এলাকার মুরুব্বিরা ২ লক্ষ টাকা থেকে কমিয়ে ১ লক্ষ ৬০ হাজার অর্থদন্ড নির্ধারণ করেন। উক্ত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলে, মেজর সারোয়ার সেটাও মানতে নারাজ হন। পরে মেজর সারোয়ারের চাপে এলাকার মুরুব্বিরা মাত্র ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে রায় দিতে বাধ্য হন। জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত সেই টাকাও নাকি বাকি রাখা হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে নগদ দেওয়া হয়নি।
সেনাবাহিনীর ভয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার এখনো মামলা করতে পারেনি বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ আজ আটককৃত মো: জামাল হোসেনকে রোয়াংছড়ি থেকে বান্দরবান সদরে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।