লামায় নও মুসলিমদের ডাকাত দল কর্তৃক আবারও ২৬ শ্রমিক অপহৃত

হিল ভয়েস, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বান্দরবান: বান্দরবান জেলাধীন লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় একের পর শ্রমিক অপহরণের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ আবারও ২৬ জন বাঙালি শ্রমিক অপহরণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়, যাদের অনেকেই বান্দরবানে বহিরাগত এবং তাদের বাড়ি কক্সবাজার বলে জানা গেছে।

এসব অপহরণের পেছনে মূলত নও মুসলিমদের নেতৃত্বাধীন ডাকাত দলের হাত রয়েছে বলে একাধিক স্থানীয় সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে, এই ডাকাত দলকে বান্দরবানের ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের সদস্যরা মদদ দিচ্ছে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে।

ছবি: পার্বত্য নাগরিক পরিষদের নেতা কাজী মুজিবের পাশে (মাঝখানে) মোঃ আবদুল্লাহ ওরফে জীবন ত্রিপুরা

ত্রিপুরা সম্প্রদায় থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়া ‘নও মুসলিম’ হিসেবে পরিচিত মোঃ আবদুল্লাহ ওরফে জীবন ত্রিপুরা ও জুয়েল ত্রিপুরা (যার মুসলিম নাম জানা যায়নি) এর নেতৃত্বে উক্ত ডাকাত দলটি স্থানীয়ভাবে ‘কালা ডাকাত দল’ হিসেবে পরিচিত। এই ডাকাত দলে নও মুসলিম ছাড়াও বাঙালি সদস্যও রয়েছে বলে জানা গেছে।

একটি সূত্র জানায়, এই ডাকাত দলের সদস্য সংখ্যা ১২ হতে ১৪ জন হতে পারে। তাদের হাতে ‘এলজি’ নামে দেশীয় অস্ত্র, পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র রয়েছে।

মোঃ আবদুল্লাহ ওরফে জীবন ত্রিপুরা সেটেলার বাঙালিদের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর সাবেক ছাত্র নেতা এবং তার বাড়ি টাঙ্কি পাহাড় পাড়া, ইসলামপুর, ৯নং ওয়ার্ড, বান্দরবান পৌরসভা বলে জানা গেছে। অপরদিকে, জুয়েল ত্রিপুরা ডাকাতি ও চুরি করার অপরাধে ইতিপূর্বে একাধিকবার জেল খেটেছে বলে জানা যায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত প্রায় দুই বছর ধরে উক্ত ডাকাত দলটি বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও বান্দরবান সদর উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে গোপনে দলবদ্ধ হয়ে ডাকাতি এবং অপহরণ ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। সাতকানিয়ার রিজার্ভ এলাকায়ও তারা বিভিন্ন সময় ডাকাতি করে থাকে।

অপরদিকে কক্সবাজারে বসে পরিকল্পনা করে এসব অপরাধ ও অপকর্ম করা হয়ে আসছে বলে লামা উপজেলার সরই এলাকার মরিয়ম ত্রিপুরা পাড়ার এক বৃদ্ধ জানান। দীর্ঘদিন ধরে এই ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনা ঘটে আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ দেখা যায় না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি, রাত দেড়টার দিকে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর দুর্গম মুরুংঝিরি এলাকা থেকে পাঁচটি রাবার বাগানের উক্ত ২৬ জন শ্রমিককে অপহরণ করা হয়। অপরহণের পর অপহরণকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ১২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন বলে জানা যায়।

কিছুদিন আগেও আরেকটি রাবার বাগান থেকে ১২ শ্রমিক অপহরণের শিকার হন। পরে সন্ত্রাসীরা তাদের কাছে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

More From Author