হিল ভয়েস, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ ব্যাডমিন্টন ও ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী টুর্নামেন্টের সমাপনী আজ ১১ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটির চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে সম্পন্ন হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জুয়েল চাকমার সঞ্চালনায় আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) অনুপ কুমার চাকমা, সাবেক সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রিপন চাকমা, আঞ্চলিক পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্না চাকমা, অব: জেলা জজ দীপেন দেওয়ান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা ও রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার।
প্রধান অতিথি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ক্রীড়াঙ্গনে অভূতপূর্ব অবদান রেখে চলেছে। পার্বত্য অঞ্চলের তারুণ্যের শক্তি ক্রীড়াজগতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামকে যে বাস্তবতায় রাখা হয়েছে, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে রাখা হয়েছে তা সত্ত্বেও পাহাড়ের তারুণ্যকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। তারা এগিয়ে যাচ্ছে জ্ঞান গরিমায়।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্রীড়া ব্যবস্থা তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে থাকার কথা। কিন্তু সরকার সেটা বাস্তবায়ন করেনি। যারফলে, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গুলো ক্রীড়াঙ্গনে সমন্বয় করতে পারছে না এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবীদের তুলে আনা সম্ভব হচ্ছ না। পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে পার্বত্য সমস্যাকে শান্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উপায়ে সমাধানের পাশাপাশি এই অঞ্চলের স্থায়ী জনমানুষের জীবনযাত্রাকে সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত করার লক্ষ্যে। কিন্তু সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন না করায় সে উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) অনুপ কুমার চাকমা বলেন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তথা মানুষর সুষ্ঠু বিকাশের জন্য খেলাধূলা চর্চা করতে হয়। সুস্থ থাকতে গেলে অবশ্যই খেলাধূলা করতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ রয়েছে যারা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভা বিকশিত হওয়া দুষ্কর। এক্ষেত্রে আমাদের একযোগে প্রচেষ্টা রাখতে হবে।
ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে ফাইনালে খেলায় শিরোপা চাকমা ও পনি চাকমা সরাসরি ২-০ সেটে প্রত্যাশা চাকমা ও গয়া চাকমাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে সর্বমোট ৮টি দল অংশগ্রহণ করে।
অপরদিকে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় ফুরোমোন হিল একাদশ ১-০ গোলে বরগাঙ রেবেলসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। টুর্নামেন্টের ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ বরগাঙ রেবেলস দলের স্ট্রাইকার সমর বিজয় চাকমা, ফুরোমোন হিলের গোলকিপার জনি মারমা সেরা গোলকিপার ও স্ট্রাইকার সমর জয় তঞ্চঙ্গ্যা সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।