হিল ভয়েস, ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ঢাকা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় এক সাঁওতাল নারীকে লাঞ্ছনা এবং সাঁওতালদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিক।
আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তাঁরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা অত্যন্ত ক্ষোভ পরিতাপের সাথে জানলাম যে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় গত ৩ জানুয়ারি,২০২৫ সকাল ১০টার দিকে আাদিবাসীদের ভোগদখলীয় জমিতে রাজাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার লোকেরা মাটি ভরাট করতে শুরু করলে কয়েকজন যুবক তাতে বাধা দেন। তখন চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন নেকোলাস মুর্মুর নামের এক যুবককে মারধর করে। খবর পেয়ে ব্রিটিশ সরেন নামের এক যুবক প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান তাকেও লাঠি দিয়ে মারধর করার হুমকি দেয়।
এ সময় ব্রিটিশ সরেনের মা ফিলোমিনা হাঁসদা চেয়ারম্যানের লাঠি ফেরাতে গেলে চেয়ারম্যান তাঁর মাকে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। বর্তমানে তিনি বগুড়ার জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার জের ধরে ঐদিনই রাত ১১টার দিকে ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে চেয়ারম্যানের লোকজন আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মাটির ঘরের ভেতরের আসবাব, কাপড় ও টিনের চাল পুড়ে গেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এ ঘটনায় জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে চেয়ারম্যানসহ ৬ জলনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই চেয়ারম্যানকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তবে এই বহিষ্কার যথেষ্ট নয়। এ ধরনের দখলবাজির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকারের ঘোষণা দেওয়া বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের বিশেষ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাদের সকলের প্রতি আমরা আদিবাসী ও সংখ্যালঘুসহ সকল প্রান্তিক মানুষের অধিকার হরণ তো নয়ই, বরং তাদের সুরক্ষা দিতে সুস্পষ্ট প্রত্যয় ঘোষণা দেবার জোর আহবান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত কমেছে। সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ও বিভাজন সৃষ্টি করে রাজাহার ইউনিয়নে তাদের জমি জবরদখল করা হয়েছে এবং ভয় দেখিয়ে তাদের প্রায় ২৫০ একর জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই জমি কীভাবে দখল হলো তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে বেআইনী জবর দখলকারী এবং ভূমি অফিসের কর্তাদের সহযোগী বর্তমান কর্মচারী, কর্মকর্তা কিংবা সাবেক ভূমি কর্মচারীদের মধ্যে যারা বেআইনী দখলে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন- আনু মোহাম্মদ, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সুলতানা কামাল, মানবাধিকার কর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, খুশী কবির, সমন্বয়কারী, নিজেরা করি, ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি, ড. স্বপন আদনান, ভিজিটিং রিসার্স ফেলো, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, এড. জে. আই খান পান্না, সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ও চেয়ারপার্সন, আসক, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, নির্বাহী পরিচালক, রীব, ড. পারভীন হাসান, ভাইস চ্যান্সেলর, সেন্টাল উইম্যান ইউনিভার্সিটি , ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অনারারি নির্বাহী পরিচালক, ব্লাস্ট, তাসলিমা ইসলাম, প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত), বেলা, শিরীন পারভীন হক, সদস্য, নারীপক্ষ, ড. সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ,শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, এসোসিয়েশ ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি),ড. ফস্টিনা পেররা, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, ড. জোবাইদা নাসরীন, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় , ড. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী, রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ফিরদৌস আজিম, অধ্যাপক, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়, ড. নোভা আহমেদ, অধ্যাপক, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, মাইদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, অ্যাড. তবারক হোসেইন আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, অ্যাড. সালমা আলি, নির্বাহী পরিচালক, বি এন ডব্লিউ এল এ, সাঈদ নাসের বখতিয়ার আহমেদ, চেয়ারম্যান, অগ্রনী ব্যাংক পিএলসি, সালেহ আহমেদ,সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, মনিন্দ্র কুমার নাথ, ভারপ্রাপ্ত সা্ধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, রাহনুমা আহমেদ, কবি ও লেখক, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রেজাউর রহমান লেনিন, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী, সায়দিয়া গুলরুখ, সাংবাদিক ও গবেষক, রোজিনা বেগম, গবেষক ও অধিকারকর্মী, জাকির হোসেন, নির্বাহী পরিচালক, নাগরিক উদ্যোগ, পল্লব চাকমা, নির্বাহী পরিচালক, কাপেং ফাউন্ডেশন, অ্যাড. সাইদুর রহমান, প্রধান নির্বাহী, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, অ্যাড. মিনহাজুল হক চৌধুরী, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, ব্যারিস্টার শুভ্র চক্রবর্তী, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, ব্যারিস্টার শাহাদাত আলম, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, অ্যাড. এম এম খালেকুজ্জামান, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, অ্যাড. নাজমুল হুদা, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, অ্যাড. রেজাউল হক, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, দীপায়ন খীসা, কেন্দ্রিয় সদস্য, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, হানা শামস আহমেদ, আদিবাসী অধিকার কর্মী, মুক্তাশ্রী চাকমা, কোর গ্রুপ মেম্বার, সাঙ্গাত।