হিল ভয়েস, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, লংগদু: গতকাল ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে লংগদু উপজেলার চিবেরেগা স্কুল মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,লংগদু থানা শাখার ২৫তম এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশন, লংগদু থানা শাখার ১ম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, লংগদু থানা কমিটির ভূমি ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বিনয় প্রসাদ কার্বারী।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি, লংগদু থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নতুনা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি, লংগদু থানা কমিটির সভাপতি দয়াল কান্তি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির তথ্য ও প্রচার এবং শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাঞ্চনা চাকমা।
সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, লংগদু থানা শাখার বিদায়ী সহ-সভাপতি সুদীর্ঘ চাকমা ও সঞ্চালনা করেন সংগঠনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক রিন্টু মনি চাকমা।
কাউন্সিলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, লংগদু থানা শাখার বিদায়ী দপ্তর সম্পাদক রুপেন চাকমা।
কাউন্সিল অধিবেশনের প্রথম পর্বে বক্তারা বলেন, “মানুষ একটা রাষ্ট্রে জম্ম হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত হয়। চারপাশে যা কিছু সংঘটিত হয় তা সবই রাজনীতির অংশ। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাটিও রাজনৈতিক সমস্যা আর এটি সমাধানের জন্য দরকার হয়ে পড়েছে অগ্রগামী তরুণ সমাজের । তরুণরাই দেশকে পরিবর্তন করতে পারে। তারা অধ্যয়ন এবং অনুশীলনের মাধ্যমে বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাখতে পারে।
একটা সমাজ বা দেশ গঠন করতে শুধু পুরুষের দ্বারা সম্ভবপর নয়। সেখানে নারী-পুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তাই আমাদের যে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে পুরুষের সাথে সমানভাবে নারী সমাজের অংশগ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, “বর্তমান যে বিরাজমান পরিস্থিতি বিশেষ করে ৫ আগস্টের পরে ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয় সেই সাথে পরিবর্তন হয় রাজনৈতিক পথও। আর বোঝা যাচ্ছে রাজনৈতিক পথ ভালো নয়। রাজনৈতিক মাঠে শুধু পানি জমেনি ঘোলাটেও হয়েছে। আর রাজনীতিতে পানি যখন ঘোলাটে হয় তখন গোপনীয় শত্রু বা প্রতিক্রিয়াশীলরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। যেমনটা পার্বত্য চট্টগ্রামেও দেখতে পেয়েছি শাসকগোষ্ঠীরা নানা বিভাজন সৃষ্টি করে দিয়ে যে উপদল তৈরি করে দিয়েছেন সেগুলো মাথা সাড়া দিয়ে উঠেছেন। আর এগুলো প্রতিরোধ করার জন্য যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। ৮০ দশকের আন্দোলনে তরুণদের যে ভূমিকা এগুলো অধ্যয়ন করতে হবে এবং আজকের প্রেক্ষাপথে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনে যুব সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে। তাই আজকে যে তরুণ,তরুণীরা জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে তারা যেন প্রত্যকটা কর্মী দক্ষ হয়ে গড়ে উঠে।
পরিশেষে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়নের আন্দোলনে সকল জুম্ম নারী পুরুষ উভয়কে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
কাউন্সিল অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে মঙ্গলী চাকমাকে সভাপতি, বিশাখা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও বৈশালী চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট হিল উইমেন্স ফেডারেশন, লংগদু থানা কমিটি গঠন করা হয়। নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান হিল উইমেন্স ফেডারেশন, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য সূচনা চাকমা।
রিন্টু মনি চাকমাকে সভাপতি, স্বাগত চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক, ও রুপেন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, লংগদু থানা শাখা কমিটি গঠন করা হয়। এই নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুমন চাকমা।
কাউন্সিল অধিবেশনের সভাপতি সুদীর্ঘ চাকমার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।