হিল ভয়েস, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর উপজেলাধীন জীবতলী ও মগবান ইউনিয়নের জুম্ম গ্রামে সেনাবাহিনী হয়রানিমূলক টহল অভিযান পরিচালনা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। টহল অভিযানের সময় সেনা সদস্যরা বিনা অনুমতিতে সশস্ত্রভাবে বৌদ্ধ বিহারে প্রবেশ করে ও রাত্রীযাপন করে এবং ৭ জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাসি চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে রাঙ্গামাটি সদর এলাকায় অবস্থিত গবঘোনা সেনা ক্যাম্প এর কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ মিরাজ, বড়াদম সেনা ক্যাম্প এর জনৈক ক্যাপ্টেন ও রাজমনিপাড়া সেনা ক্যাম্প এর কমান্ডার সুবেদার মোঃ আজাদ এর যৌথ নেতৃত্বে ৫০ জনের একটি সেনাদল জীবতলী ও মগবান ইউনিয়নে টহল অভিযানে যায়। দুপুর ২টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত উভয় ইউনিয়নের জুম্ম গ্রাম ও আশেপাশের এলাকায় টহল অভিযান চালায়।
টহল অভিযানের এক পর্যায়ে রাতে, সেনা সদস্যরা বিনা অনুমতিতে ধর্মীয় রীতিবহির্ভূতভাবে জীবতলী ইউনিয়নের ওগোয়াছড়ি মারমা পাড়ার নির্বাণসুখ বৌদ্ধ বিহারে অস্ত্রসহ সামরিক পোশাকে প্রবেশ করে। এসময় সেনা সদস্যদের একটি দল বিহারের ভেতরে এবং অপর একটি দল বিহারের প্রাঙ্গণে রাত্রীযাপন করে।
পরে ঐ বিহার থেকে গিয়ে সেনা সদস্যরা আশেপাশের জুম্ম গ্রামে টহল অভিযান চালায়।
টহল অভিযানে নিম্নোক্ত সাত গ্রামবাসীর বাড়িতে ব্যাপক তল্লাসি চালানো হয়-
১. সিপ্রু মারমা, গ্রাম-দোকানঘাট, ওগোয়াছড়ি মারমা পাড়া, ৬নং ওয়ার্ড, জীবতলী ইউনিয়ন; ২. বুদ্ধধন চাকমা (৪৮), পীং-মন কুমার চাকমা, গ্রাম-নোয়া আদাম, মগবান ইউনিয়ন; ৩. পুনোংচান চাকমা (৪৫), পীং-ফুলচান চাকমা, গ্রাম-গুরুকাবা, ৩নং ওয়ার্ড, মগবান ইউনিয়ন; ৪. ধলমনি চাকমা (৬৫), পীং-অজ্ঞাত, গ্রাম-দুলুছড়ি, মগবান ইউনিয়ন; ৫. রিপন চাকমা (৩৮), পীং-ধলমনি চাকমা, গ্রাম-দুলুছড়ি, মগবান ইউনিয়ন; ৬. শুক্র কুমার চাকমা (৪০), পীং-ধলমনি চাকমা, গ্রাম-দুলুছড়ি, মগবান ইউনিয়ন ও ৭. অং সাবায় মারমা (৩৫), পীং-বলি মারমা, গ্রাম-দুলুছড়ি, মগবান ইউনিয়ন।
সেনাবাহিনীর তল্লাসি অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের জুম্ম গ্রামেও ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসীদের চলাফেরা ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
আজ সকাল ৯টার দিকে সেনা সদস্যরা বিভক্ত হয়ে স্ব স্ব সেনা ক্যাম্পে ফিরে যায়।