হিল ভয়েস, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, বান্দরবান: গতকাল ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল বান্দরবান জেলাধীন বান্দরবান সদর উপজেলার রাজভিলা এলাকা থেকে সুইসাউ মারমা (৪৫) নামে নিরীহ এক জুম্ম গ্রামবাসীকে তুলে নিয়ে গেছে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুইসাউ মারমা মুক্তি না পাওয়ায় এবং তাকে কোথায় রাখা হয়েছে, কেন তুলে নেওয়া হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে জানতে না পারায় সুইসাউ মারমার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার, দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ টার দিকে বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নে অবস্থিত ডলুপাড়া সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল দুইটি জীপ গাড়ি যোগে বান্দরবান সদর উপজেলার রাজভিলা ইউনিয়নের রাজভিলা উপর পাড়ার বাসিন্দা সুইসাউ মারমার বাড়িতে আসে। এসময় সুইসাউ মারমার স্ত্রী বান্দরবানে সদরে কাজে গিয়েছিলেন।
সেনা সদস্যরা সুইসাউ মারমাকে পেয়েই তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। আশেপাশের প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি সুইসাউ মারমাকে কোনদিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
সুইসাউ মারমাকে নিয়ে যাওয়ার সময় সেনা সদস্যদের সাথে গাড়ির পেছনে মোটরসাইকেলে হেলমেট পরা অবস্থায় দুইজন পাহাড়ি যুবকও ছিলেন বলে জানা যায়। আসার সময় ওই পাহাড়ি যুবকরা সেনাবাহিনীর গাড়িতে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
এদিকে সুইসাউ মারমার স্ত্রী ঘটনাটির বিষয়ে জানতে পারলে বান্দরবান সদর থেকে ফেরার সময় ডলুপাড়া সেনা ক্যাম্পে যান এবং সেনাবাহিনীর কাছে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চান। এসময় ডলুপাড়া সেনা ক্যাম্পের সেনারা তার স্বামীকে (সুইসাউ মারমা) বান্দরবান সদর জোনে পাঠানো হয়েছে বলে জানান।
আজ (১৯ ডিসেম্বর) সকালের দিকে সুইসাউ মারমার স্ত্রী বান্দরবান সদর সেনা জোনে উপস্থিত হয়ে সেনা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তার স্বামীর খোঁজখবর জানতে চান। এসময় উপস্থিত সেনা সদস্যরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উপরন্তু সেনা সদস্যরা সুইসাউ মারমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে।
এরপর সুইসাউ মারমার স্ত্রী গভীর উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, সুইসাউ মারমাকে বান্দরবান সদর সেনা জোনেই রাখা হয়েছে। তবে সুইসাউ মারমা কিভাবে আছে এবং কেন তাকে আটক রাখা হয়েছে তা তারা জানাতে পারেননি।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুইসাউ মারমাকে এখনও থানায় পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়নি এবং গ্রেপ্তারও দেখানো হয়নি।