হিল ভয়েস, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, বিশেষ প্রতিবেদক:
পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকরিতে জুম্মদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ করা
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পার্বত্য চুক্তির ‘ঘ’ খন্ডের ১৮নং ধারায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, পরিষদীয় ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মচারী পদে জুম্মদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগের বিধান থাকলেও তা যথাযথভাবে কার্যকর হচ্ছে না।
এ বিধান যথাযথভাবে কার্যকর হচ্ছে না। চুক্তির এ বিধান কার্যকর করার জন্য আঞ্চলিক পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) নিকট সুপারিশ পেশ করে। কিন্তু তা কার্যকর করা হয়নি।
এ প্রেক্ষিতে ২২ অক্টোবর ২০০০ সংস্থাপন মন্ত্রণালয় বিষয়টি কার্যকর করার জন্য অনুকুল পরামর্শ প্রদান করে এবং উক্ত পরামর্শ মোতাবেক ২৫ আগষ্ট ২০০২ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় চুক্তির এ বিধানটি সংশ্লিষ্ট নিয়োগ বিধিমালা/নিয়োগ প্রবিধানমালায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও সংস্থার নিকট পত্র প্রেরণ করে। এতে কোন অগ্রগতি সাধিত হয়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এ বিষয়টি সম্পর্কে পুনরায় সুপারিশ পেশ করে। তৎপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২৭ জুন ২০১৪ চুক্তির উক্ত বিধান কার্যকর করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে। উক্ত প্রজ্ঞাপন এখনো পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় প্রেরিত হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সকল প্রকার চাকরিতে উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগের বিষয়টি দেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট বিধিমালা ও প্রবিধানমালায় এখনো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এবং বাস্তবক্ষেত্রেও অদ্যাবধি অনুসরণ করা হয়নি। ফলে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন চাকরিতে বহিরাগতরা (অস্থায়ী বাসিন্দা) নিয়োগ লাভ করে চলেছে এবং এসব নিয়োগের প্রক্রিয়ায় চরম দুর্নীতি ও ক্ষমতাসীন দলের দলীয়করণ অব্যাহত রয়েছে।
বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির স্বাক্ষরের পর বিগত ২৭ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষয়সহ দুই-তৃতীয়াংশ ধারা অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।