হিল ভয়েস, ২২ নভেম্বর ২০২৪, বান্দরবান: বান্দরবান জেলাধীন লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টংগঝিরি এলাকায় স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি গ্রামবাসীদের উপর ভূমিদস্যু ও বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি’র সশস্ত্র ক্যাডারদের কর্তৃক হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২০ নভেম্বর ২০২৪ সকালের দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১০/১২ দিন আগে সরই ইউনিয়নে অবস্থিত সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি’র বাংলোতে কুমিল্লা, লাকসাম, নরসিংদী সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে ৭০ জনের অধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অবস্থান গ্রহণ করে। গতকাল সকালের দিকে উক্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা টংগঝিরি এলাকার পাহাড়ি-বাঙালি গ্রামবাসীদের উপর হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রারীরা পিস্তল দিলে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। গ্রামবাসীরা কোনোমতে পালাতে সক্ষম হয়।
পরে গ্রামবাসীরা পুলিশের নিকট খবর দিলে, পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। এতে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আরও জানান, সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম পলাতক থাকলেও এখনো তার দাপট চলছে লামার সরইয়ের টংগঝিরি এলাকায়। তাদের দাবি, মন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন ও সন্ত্রাসীদের নামে একাধিক মামলা থাকার পরও অজ্ঞাত কারণে তারা সবাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর তারিখও স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি গ্রামবাসীরা নিজেদের ভূমিতে কাজ করতে গেলে, সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ম্যানেজার সাহাবুদ্দিন, স্থানীয় সন্ত্রাসী জাভেদ, সাহেদ হোসেন এর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী দা, কিরিচ ও লাঠিসোটা নিয়ে গ্রামবাসীদের উপর হামলার চেষ্টা করে। এসময় গ্রামবাসীরা অন্যত্র পালিয়ে বাঁচে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম স্থানীয় আইন ও নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা না করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে লামার সরই ইউনিয়নের ফুইট্টা ঝিরি এলাকায় ২০১৯ সালে তার স্ত্রী ফোজিয়া ইসলামের নামে ১০০ একর ভূমি ক্রয় করেন। পরে স্ত্রী ফোজিয়া সহ আত্মীয়-স্বজনের নামে আশেপাশের এলাকা থেকে আরো অন্তত ৪০০ একর ভূমি বেদখল করেন। এতে ফুইট্টা ঝিরি ছাড়াও দেরাজ মিয়া পাড়া, টংগঝিরি, পূর্গা খোলা ইত্যাদি এলাকার পাহাড়ি-বাঙালি গ্রামবাসীর জমি বেদখল করা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৫০০ একর ভূমি তাজুল ইসলামের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে দিচ্ছে।