হিল ভয়েস, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ১৪ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক পার্মানেন্ট ফোরাম এবং আদিবাসী অধিকার বিষয়ক স্পেশাল র্যার্পোটিয়ার।
এছাড়া জুম্ম জনগণকে নির্বিচার সহিংস হামলা থেকে রক্ষা, সহিংসতার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন পরিচালনা এবং অবিলম্বে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পার্মানেন্ট ফোরাম ও স্পেশাল র্যার্পোটিয়ার।
আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের চেয়ারপারসন হিন্দো ওমারো ইব্রাহিম এবং আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র্যার্পোটিয়র জোসে ফ্রান্সিসকো ক্যালি জে স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরামে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগোষ্ঠী ও মুসলিম বাঙালি সেটেলারদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কথা উপস্থাপন করা হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনাগুলো চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। আদিবাসী জুম্ম জনগণের প্রতি বৈষম্য এবং প্রান্তিকীকরণের উদ্দেশ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনাবলী ঘটানো হয়েছে। যারা এই অঞ্চলে কয়েক দশক ধরে জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও প্রান্তিকীকরণের শিকার হয়ে আসছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “পার্মানেন্ট ফোরাম ও স্পেশাল র্যার্পোটিয়র জুম্ম জনগণকে সহিংস ও নির্বিচার হামলা থেকে রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ, সহিংসতার অভিযোগের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন পরিচালনা এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে অপরাধীদের বিচারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত অনুসরণীয় নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্য রেখে, আদিবাসী ইস্যু সম্পর্কিত পার্মানেন্ট ফোরাম এবং স্পেশাল র্যার্পোটিয়র সামাজিক মিডিয়া সংস্থাগুলিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদিবাসী জুম্ম জনগণের সম্পর্কে ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং ভুল তথ্য প্রচার থেকে বিরত রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়।
পার্মানেন্ট ফোরাম এবং স্পেশাল র্যার্পোটিয়ার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন এবং আদিবাসী অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রের মধ্যে থাকা বিধানগুলির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, বিশেষ করে অনুচ্ছেদ ৭, যেখানে বলা হয়েছে যে ‘আদিবাসী জনগণের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার সম্মিলিত অধিকার রয়েছে, স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় এবং গণহত্যা বা অন্য কোনো সহিংসতার শিকার হবে না।’
অধিকন্তু, পার্মানেন্ট ফোরাম এবং স্পেশাল র্যার্পোটিয়ার আদিবাসী জনগণের প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এবং তাদের সমষ্টিগত ও ব্যক্তিগত অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, আদিবাসী জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে সমন্বয় করে এই অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের তদন্ত ও প্রতিবেদন করার জন্য জাতিসংঘকে আমন্ত্রণ জানাতে এবং পরিস্থিতি নির্বিঘ্নে পর্যবেক্ষণ করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পার্মানেন্ট ফোরাম এবং স্পেশাল র্যার্পোটিয়ার তাদের নিজ নিজ ম্যান্ডেটের শর্তাবলীর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা ও পুনর্মিলন এবং সহিংসতা রোধে স্বাধীন পরামর্শ প্রদানে তাদের সহায়তা প্রদান করার নিশ্চয়তা প্রদান করে।”