হিল ভয়েস, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলায় বিগত স্বৈরাচারী আমল থেকে সেনাবাহিনীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকা মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা আজ (১ সেপ্টেম্বর) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি রাজস্থলীতে বিশেষত স্থানীয় ক্ষুব্ধ পাহাড়ি-বাঙালি জনতার প্রতিরোধের মুখে বাঙ্গালহালিয়া থেকে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা চলে যেতে বাধ্য হওয়ায়, সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআইয়েরই পরামর্শে আবার মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের সেখানে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ‘জেএসএস’এর নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালের দিকে ০১৮৫৮০৩৯৬১৩-এই মোবাইল নাম্বার থেকে জেএসএস’এর লোক পরিচয় দিয়ে রাজস্থলী উপজেলার ৩ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির নিকট ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়। ব্যাপারটি জানাজানি হওয়ার এক পর্যায়ে স্থানীয় জেএসএস নেতাকর্মীরাও ঘটনাটি জানতে পারেন।
পরে জেএসএসের কর্মীরা তদন্ত করে নিশ্চিত হন যে, উক্ত নাম্বারটির সাথে জেএসএস’এর কোনো সদস্যের সম্পৃক্ত নেই। বরং ওই নাম্বার থেকে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জেএসএস’এর নাম ব্যবহার চাঁদা সংগ্রহ করছে।
উল্লেখ্য যে, মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা শুধু যে উপরোক্ত ৩ নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে চাঁদা চেয়েছে তাই নয়, প্রায় একই সময়ে সাবেক ও বর্তমান আরও তিনি জনপ্রতিনিধির কাছ থেকেও চাঁদা করে। জানা গেছে, তারা সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান গৌতমী খিয়াং-এর কাছ থেকে ৫,০০০/-টাকা; ঘিলামুখ ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরার কাছ থেকে ১০,০০০/-টাকা এবং গাইন্দা ইউপি চেয়ারম্যান উচিমং মারমার কাছ থেকে ১০,০০০/- টাকা চাঁদা দাবি করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট, বিকাল আনুমানিক ৩ টার দিকে মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের কর্তৃক বাঙ্গালহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আদুমং মারমা অপহরণের শিকার হন। এখনও পর্যন্ত তিনি মুক্তি পাননি।
গত ২০ আগস্ট, সকাল আনুমানিক ৮:৩০ টার দিকে মগ পার্টির চিংসু মারমা (৪০) ও মন্ডি মারমা (৩৫) নামে দুই চাঁদা সংগ্রাহক বাঙ্গালহালিয়া বাজারে গিয়ে আজিজ সওদাগর (৬৫) নামে এক দোকানদারকে চাঁদা নিয়ে মারধর করে। এরপর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ বাঙালি-পাহাড়ি জনতার প্রতিরোধের মুখে ও তাড়া খেয়ে মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালহালিয়া বাজার এলাকা ত্যাগ করে তাদের মূল আস্তানা গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পোয়াইতু পাড়ার দিকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের আবার বাঙ্গালহালিয়ায় নিয়ে আসতে সেনাবাহিনী ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, সেনাবাহিনী, সাবেক পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর, কোনো কোনো সময় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি দীপংকর তালুকদারের মদদে ও আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই মগ পার্টি খ্যাত তথাকথিত মারমা ন্যাশনালিস্ট পার্টি (এমএনপি) এর সন্ত্রাসীরা রাজস্থলী এলাকায় অবস্থান করে জনসংহতি সমিতি ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের খুন, অপহরণ সহ চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।