হিল ভয়েস, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: সম্প্রতি রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ও মগবান ইউনিয়নের আদিবাসী জুম্ম এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক হয়রানিমূলক টহল ও তল্লাসি অভিযান পরিচালনা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অন্তত ৪ ব্যক্তিকে হয়রানি এবং ৮ বাড়ি ও ২টি দোকানে তল্লাসি চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে বালুখালি ইউনিয়নের কুকিপাড়া সেনা ক্যাম্প থেকে জনৈক সুবেদারের (নবাগত) নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি সেনাদল ভিজা কিজিং বৌদ্ধ বিহারে অবস্থান গ্রহণ করে, পরে ভিজা কিজিং এলাকায় টহল অভিযান পরিচালনা করে।
এসময় সেনা সদস্যরা নিখিল চাকমা (২৭), পীং-প্রভাত চন্দ্র চাকমা ও হিরোলাল চাকমা (৪৬), পীং-অজ্ঞাত নামে দুই গ্রামবাসীকে তাদের দলের সাথে কিছুক্ষণ আটকে রেখে হয়রানি করে মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলে। এছাড়া সেনা সদস্যরা ওই গ্রামবাসীদের কাছ থেকে গ্রামে আগে কত পরিবার ছিলো, এখন কত পরিবার আছে ইত্যাদি নানা প্রশ্ন করে হয়রানি করে।
উক্ত সেনাদলটি ঐদিন সারা গ্রাম টহল অভিযান চালিয়ে সারারাত গ্রামেই অবস্থান করে বলে জানা গেছে। পরদিন ভোরে তারা ক্যাম্পে ফিরে যায়।
এছাড়া, গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখ সকাল ৯:৩৫টায়ও মগবান ইউনিয়নের গবঘোনা সেনা ক্যাম্প থেকে ক্যাপ্টেন বখতিয়ার এর নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি সেনা টহল দল গরগজ্যাছড়ি গ্রাম এলাকায় টহল অভিযান পরিচালনা করে। এতে এলাকার জনগণের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়।
এর পূর্বে, গত ১০ সেপ্টেম্বর, বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে, বালুখালী ইউনিয়নের মরিচ্যাবিল সেনা ক্যাম্প হতে সুবেদার মোঃ শাহদাৎ হোসেন এর নেতৃত্বে ১২ জনের একটি সেনা টহল দল কাইন্দ্যা পাড়ায় গিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে। একই দিন রাত ৮টার দিকে রাঙ্গামাটি সদর সেনা জোন হতে জনৈক ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ৩০ জনের আরেকটি সেনাদল একই স্থানে গিয়ে পূর্বোক্ত সেনাদলের সাথে মিলিত হয়ে কাইন্দ্যা পাড়া এলাকার বাড়িতে বাড়িতে প্রবেশ করে ও দোকানপাটে তল্লাসি অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী জঙ্গলেও তল্লাসি চালায়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এসময় সেনা সদস্যরা রিপন চাকমা ও কুসুম চাকমা নামে দুই গ্রামবাসীকে সাময়িক আটক রেখে মোবাইলে ছবি তোলে এবং বিভিন্ন প্রশ্ন করে হয়রানি চালায়।
টহল ও তল্লাসি অভিযান পরিচালনার সময় সেনা সদস্যরা ৮ ব্যক্তির বাড়িতে ও ২টি দোকানে ব্যাপক তল্লাসি চালায়।
তল্লাসির শিকার বাড়ির মালিকরা হলেন- ১. লক্ষীময় চাকমা, ২. রিপন চাকমা, ৩. কুসুম চাকমা, ৪. আল্যেরাম চাকমা, ৫. আলি চাকমা, ৬. ভাত্তোরাম চাকমা, ৭. টিংকু চাকমা, ৮. চিত্তিছ চাকমা।
এছাড়া, তল্লাসির শিকার দোকানের মালিকরা হলেন- ১. টুদো চাকমা ও ২. কৃষ্ণ চাকমা।
এছাড়াও, গত ১০ সেপ্টেম্বর, সকাল ৯ টার দিকে, বালুখালীর রাজমনি পাড়া সেনা ক্যাম্প থেকে সুবেদার শাহাদাৎ এর নেতৃত্বে ১০ জনের একটি সেনা টহল দল মগবান ইউনিয়নের গরগজ্যাছড়ি গ্রামে গিয়ে সাবেক ইউপি মেম্বার দীপঙ্কর চাকমাকে খোঁজ করে এবং গ্রামে প্রায় ঘন্টা খানেক টহল অভিযান চালায় বলে জানা যায়।