বাঘাইছড়িতে এম এন লারমার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

হিল ভয়েস, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: আজ সকাল ৯ টার দিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩২ নং বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের উগলছড়ি মুখ (বটতলা) কমিউনিটি সেন্টারে মহান বিপ্লবী নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার (এম এন লারমা) ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বাঘাইছড়ি থানা কমিটির ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক বাবু সুব্রত চাকমার সভাপতিত্বে এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বাঘাইছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক চিবরন চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিজেএসএস রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি উৎপলাক্ষ চাকমা। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি লক্ষীমালা চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বাঘাইছড়ি থানা শাখার সভাপতি পিয়েল চাকমা, ৩১ নং খেদারমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবু বিল্টু চাকমা, বাঘাইছড়ির সুশীল সমাজের প্রতিনিধির পক্ষে অলিভ চাকমা ও হেডম্যান প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ চাকমা প্রমুখ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উৎপলাক্ষ চাকমা বলেন, জুম্ম জাতীয় জাগরণের অগ্রদূত মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা একটি সঠিক আদর্শের নাম। যে আদর্শের কোনো মোহ নেই, লোভ নেই, ব্যক্তিস্বার্থ নেই। যে আদর্শ মানুষকে সঠিক পথে চলতে শেখায়, সঠিক পথে থাকতে শেখায় এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে শেখায়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের জন্য এম এন লারমা একসময় যে পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন, আমাদের প্রজন্মকেও তাঁর সেই মহান আদর্শে উজ্জীবিত করে সে পথেই ধাবিত করতে হবে। তা না-হলে আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বাঘাইছড়ি থানা শাখার সভাপতি পিয়েল চাকমা বলেন, আমাদের পাহাড়ের আদিবাসীদের অস্তিত্ব আজ চরম হুমকির মুখে। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে এক ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসক বিদায় হলেও পাহাড়ে কিন্তু সেই বীজ এখনো থেকে গেছে। আর সেটা এমনিতেই যাবে না। আমাদেরকেই সেই বীজ সমূলে উৎপাটন করতে হবে।

তিনি জুম্ম তারুণ্যের প্রতি আহ্বান রেখে জানান, মহান অবিসংবাদিত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা আমাদের শিখিয়ে গেছেন লড়াই করে বাঁচতে হবে। যে জাতি বেঁচে থাকার লড়াই করতে পারে না, সে জাতির পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। আমাদেরকেও এম এন লারমার নির্দেশিত সে পথেই এগোতে হবে। আর এই গুরুদায়িত্বটা আমাদের জুম্ম তরুণ প্রজন্ম, তরুণ শক্তিকে কাঁধে নিতে হবে।

বাঘাইছড়ির সুশীল সমাজের প্রতিনিধির পক্ষে বাবু অলিভ চাকমা বলেন, এম এন লারমা শুধুমাত্র জনসংহতি সমিতির নেতা নয় এবং তিনি শুধুমাত্র পাহাড়ের আদিবাসীদেরও নেতা নয়, এম এন লারমা হচ্ছেন একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা। তিনি সারাবিশ্বের নিপীড়িত, শোষিত ও বঞ্চিত গণমানুষের নেতা। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে তাঁর সংসদ জীবনের বক্তৃতাগুলো অধ্যায়ন করলে এর কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। পাহাড়ের প্রতিটি অধিকার সচেতন, শিক্ষিত জুম্মের তাঁর সেই মহান আদর্শকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে চলা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

সবশেষে সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভাটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সদস্য বাবু মন্টু বিকাশ চাকমা।

More From Author

+ There are no comments

Add yours