হিল ভয়েস, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: আজ (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪) মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে কবিতা পাঠ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক ম্রানুচিং মারমার সঞ্চালনায় শান্তি দেবী তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কবি ও সাহিত্যিক শিশির চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট চঞ্চু চাকমা।
আলোচনা সভার শুরুতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক উওয়াই নু মারমা। উল্লেখ্য, আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর সাবেক গণপরিষদ ও সংসদ সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা, জুম্ম জাতীয় জাগরণের অগ্রদূত এম এন লারমার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী। একদিন পূর্বে মহান নেতার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই কবিতা পাঠ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
কবি ও সাহিত্যিক শিশির চাকমা বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা নব্য বাংলাদেশে শাসনব্যবস্থা প্রণয়নে কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংসদের ভেতরে-বাইরে কথা বলেছেন। তিনি পাহড়ের জুম্ম জনগণের আত্মপরিচয়ের দাবি বারবার শাসকগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরেছেন। শেষ পর্যন্ত কতৃত্ববাদী শাসক তাঁর ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি মেনে না নিলে তিনি অনিয়মতান্ত্রিক পন্থায় যেতে বাধ্য হন।
অন্তর্বতীকালীন সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এখন একটা সুযোগ এসেছে নতুন রাষ্ট্র সংস্কার ও সংবিধান পুনর্লিখনে ১৯৭২ সালে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার চিন্তা প্রতিফলিত এবং প্রোথিত করার।
আলোচকের বক্তব্যে অ্যাডভোকেট চঞ্চু চাকমা বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সংবিধান প্রণয়নে কার্যকর ও যুক্তিযুক্ত ভূমিকা রাখার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু উগ্র জাত্যভিমানী শাসকগোষ্ঠী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার প্রস্তাবিত যৌক্তিক সংশোধনী আমলে নেয়নি। অনেক সময় তুচ্চতাচ্ছিল্য করে তাঁকে অপমানিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র রচনায় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার গণপরিষদ ও পরবর্তী জাতীয় সংসদে প্রদত্ত সংশোধনী আমলে না নেয়ার কারণে আজকে দেশের এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে জানা ও অধ্যয়ন করা খুবই জরুরি। তিনি কে? নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম জানা দরকার। তাঁর সংসদীয় বক্তব্যগুলো আলোচনা এবং তা মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়া দরকার। তিনি মানবেন্দ্র নারায়ণ প্রদর্শিত আদর্শ ধারণ করে চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহবান জানান।
+ There are no comments
Add yours