হিল ভয়েস, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলায় সেনাবাহিনী কর্তৃক ৬ জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাসি, টাকা ছিনতাই, জিনিসপত্র ভাঙচুর ও এক ব্যক্তিকে ক্যাম্পে আটক করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ও মগবান ইউনিয়নে সেনাবাহিনী কর্তৃক জুম্ম গ্রামে হয়রানিমূলক টহল অভিযান পরিচালনা করার খবরও পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল আনুমানিক ২:৩০ টার দিকে জুরাছড়ি উপজেলা সদরের যক্কা বাজার সেনা ক্যাম্পের জনৈক কমান্ডারের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি সেনাদল ১নং জুরাছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বালুখালীমুখ পাড়া (বিহার পাড়া) গ্রামে টহল অভিযান চালায়। এসময় সেনা সদস্যরা ৬টি জুম্মর বাড়িতে তল্লাসি চালায়, জিনিসপত্র ভাঙচুর করে এবং এক জুম্ম পরিবারের কাছ থেকে অর্ধলক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয়।
তল্লাসির শিকার বাড়ির মালিকরা হলেন: ১. ত্রিনয়ন চাকমা (৩৫), পীং-বীরোলাক্কো চাকমা; ২. রুনেল চাকমা হংসরাজা (৩০), পীং-বীরোলাক্কো চাকমা; ৩. বীরোলাক্কো চাকমা (৫৮), পীং-মৃত রমনীমোহন চাকমা; ৪. ভাগ্যধন চাকমা (৪৫), পীং-বিলাস কুমার চাকমা; ৫. অর্জুন চাকমা (৩৮), পীং-বিলাস কুমার চাকমা ও ৬. দেবরায় চাকমা (৩৮), পীং-ভাগ্য লক্কো চাকমা।
অভিযোগ রয়েছে, তল্লাসি করার সময় সেনা সদস্যরা বাড়িতে পাওয়া ত্রিনয়ন চাকমার নগদ ৬৮,০০০ টাকা এবং ত্রিনয়ন চাকমার মেয়ের কাছে পাওয়া আরো ২০০০ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।
আরো জানা গেছে, তল্লাসি শেষে ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার সময় সেনা সদস্যরা রুনেল চাকমা ও অর্জুন চাকমাকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে পরে অর্জুন চাকমাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী রুনেল চাকমাকে ক্যাম্পে আটকে রেখেছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, কয়েকদিন আগে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ও মগবান ইউনিয়নেও সেনাবাহিনী কর্তৃক জুম্ম গ্রামে হয়রানিমূলক টহল অভিযান পরিচালনা করার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর, সকালের দিকে বালুখালী ইউনিয়নের রাজমনি পাড়া সেনা ক্যাম্প থেকে সুবেদার শাহাদাৎ ও হাবিলদার মেজর আলমগীর এর নেতৃত্বে ১০ জনের একটি সেনাদল কাইন্দ্যামুখ হ্রদ এলাকা এবং কাইন্দ্যা মগ বাজার এলাকায় টহল অভিযান চালায়। এসময় সেনা সদস্যরা স্থানীয় সাবেক মেম্বার সঞ্চয় চাকমার বড় ভাইকে (নাম অজ্ঞাত) দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়রানি করে।
পরে উক্ত সেনা সদস্যরা বালুখালী ও মগবান ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গুরুহাবা নামক এলাকায়ও টহল ও তল্লানি অভিযান চালায়।
একইদিন গবঘোনা সেনা ক্যাম্প থেকে ক্যাপ্টেন বখতিয়ার এর নেতৃত্বে ১৭ জনের একটি সেনাদল মগবান ইউনিয়নের দোগেয়ে পাড়া গ্রামে টহল অভিযান চালিয়ে শুভমঙ্গল চাকমা নামে এক গ্রামবাসীরা বাড়িতে ব্যাপক তল্লানি চালায়। এসময় শুভমঙ্গল চাকমা বাড়িতে ছিলেন না। এসময় ক্যাপ্টেন বখতিয়ার শুভমঙ্গল চাকমার স্ত্রীকে নানা হুমকি ও হয়রানিমূলক কথা বলেন বলে জানা যায়। এরপর সেনা সদস্যরা আশেপাশের এলাকায়ও তল্লাসি অভিযান চালায়। এতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
+ There are no comments
Add yours