হিল ভয়েস, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক: আজ রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর), ভারতের মিজোরাম রাজ্যের চাকমা স্বশাসিত জেলা পরিষদের (সিএডিসি) রাজধানী কমলানগর এবং অন্যতম শহর লংপুইঘাট-এ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সেনা সহায়তায় সেটেলার বাঙালি কর্তৃক সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
“চাকমা’স অফ মিজোরাম”-এই ব্যনারে সকাল ১১.০০ টায় শুরু হওয়া কমলানগরের সমাবেশে প্রায় ২-৩ হাজার লোকের সমাগম হয়। সমাবেশে কমলানগরের লুম্বিনী বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ কুশলানন্দ থের, ইয়ং চাকমা এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. জ্যোতি বিকাশ চাকমা, সাবেক চাকমা স্বশাসিত জেলা পরিষদের সদস্য অমর স্মৃতি চাকমা এবং সাবেক বিধায়ক (এমএলএ) ডাঃ বুদ্ধধন চাকমা বক্তব্য প্রদান করেন। সমাবেশ শেষে কমলানগর সাবডিভিশনাল অফিসারের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
অপরদিকে একই সময়ে লংপুইঘাটের সমাবেশে প্রায় ২০০ লোকের সমাগম ঘটে। এই সময় লংপুইঘাট খেলার মাঠ থেকে একটি মিছিল করা হয় এবং সেটি ভাসেই থানা প্রদক্ষিণ করে বাজারে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে বাজারে একটি সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে স্থানীয় মুরব্বী ও লংপুইঘাট কম্প্রিহেনসিভ মিডল স্কুলের সাবেক শিক্ষক রাজমঙ্গল চাকমা, চাকমা মহিলা সমিতির ভাবনা চাকমা, ইয়ং চাকমা এসোসিয়েশন লংপুইঘাট জোনের সহ-সাধারণ সম্পাদক সুন্দরবন চাকমা, দীপায়ন চাকমা, একই সংগঠনের সহ-সভাপতি সাইলো চাকমা,দেবাছড়া ভিলেজ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আনন্দ কুমার চাকমা এবং লংপুইঘাট হাই স্কুলের প্রিন্সিপাল চারিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা বক্তব্য রাখেন।
কমলানগর সাবডিভিশনাল অফিসারের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বরাবরে পেশকৃত স্মারকলিপিতে ৬টি দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চাপ দিতে বলা হয়েছে।
৬টি দাবি হলো-
১। অচিরেই আদিবাসীদের উপর চলমান নির্যাতন বন্ধ করা এবং অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।
২। উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ও সেনাবাহিনী কর্তৃক এলোপাতাড়ি গুলি করার ঘটনা তদন্ত করা এবং জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা।
৩। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ন্যস্ত ম্যাজিষ্ট্রেসী ও পলিশি ক্ষমতা প্রত্যাহার করা এবং এলাকায় নিরাপত্তা ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করা।
৪। ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ক্ষতিরপূরণ প্রদান করা।
৫। অমুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার ও পরিচয় সুরক্ষার জন্য অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৬। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।